ঢাকা, শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪

চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মুহম্মদ খসরুর প্রতি মানুষের শেষ শ্রদ্ধা

প্রকাশিত : ২২:৫৯, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আজ সর্বস্তরের মানুষ বাংলা চলচ্চিত্র আন্দোলনের কিংবদন্তি এবং চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মুহম্মদ খসরু’র প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।    

চলচ্চিত্র, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তিবর্গ প্রয়াত মুহম্মদ খসরুর কফিনে পুষ্পার্ঘ্য প্রদান করে শ্রদ্ধা জানান।

আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের এই কীর্তিমান সন্তানকে জাতির পক্ষ থেকে এই শ্রদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পাশাপাশি মুহম্মদ খসরু স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নেন চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণের ব্যাক্তিবর্গ। শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর মরহুমের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখানে জোহরের নামাজের পর অনুষ্ঠিত হয় তার প্রথম নামাজে জানাজা। তাকে দাফন করার জন্য কেরানীগঞ্জের রোহিতপুরে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করে বলেন, তার মৃত্যূতে চলচ্চিত্র অঙ্গণের অপুরনীয় ক্ষতি হলো। পাকিস্তান আমল থেকে তিনি সুষ্ঠু চলচ্চিত্র আন্দোলন শুরু করেন। তিনি শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের উন্নয়নের কাজ করেন দীর্ঘদিন। তিনি যা করেছেন চলচ্চিত্রের জন্য-এই কীর্তিমান সন্তানের আদর্শকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।

সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মুহম্মদ খসরু সেই ষাট দশকের শুরুতে সুষ্ঠু ও মননশীল চলচ্চিত্র নির্মানের জন্য আন্দোলন শুরু করেন। এতো পরিশ্রম করেছেন এই শিল্পকে ভালবেসে, সেই মানুষটি চলে গেলেন। খসরু’র আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি। তার অনুপ্রেরণায় অসংখ্য ভাল ছবি এই দেশে নির্মিত হয়েছে।

এ ছাড়াও স্মৃতিচারনে অংশ নেন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, মামনুর রশীদ, মফিদুল হক, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, মোর্শেদুল ইসলাম, মঈনউদ্দিন খালেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মুহম্মদ সামাদ, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রমুখ।

মুহম্মদ খসরুর কফিনে পুস্পার্ঘ প্রদান করে শ্রদ্ধা জানান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদ, বাংলাদেশ স্কুল আর্কাইভ, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ, প্রাচ্যনাট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাবি শাখা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখা, রণেশ দাশ গুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন, খিয়েটার, নাগরিকের নেতৃবৃন্দ । শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শিল্পী শংকর শাওয়াল ও শিল্পী কৃঞ্চকলি ‘ধনধান্যে পুষ্পভরা আমাদেরই বসুন্ধরা’ গানটি পরিবেশন করেন। পরে এক মিনিট নিরবতা পালন করে মুহম্মদ খসরুকে শেষ বিদায় জানানো হয়।

রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুহম্মদ খসরু ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩। দীর্ঘদিন তিনি ডায়াবেটিক, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছিলেন। ১৯৪৬ সালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার রোহিতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মুহম্মদ খসরু। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান চলচ্চিত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা করে একদল সংস্কৃতিকর্মী নিয়ে সুষ্ঠু ও সৃষ্টিধর্মী চলচ্চিত্রের প্রসার ঘটানোর আন্দোলন তিনি শুরু করেন। যে সংগঠন দেশ স্বাধীনের পর নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদ’। দীর্ঘ চারদশক তিনি চলচ্চিত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ‘ ধ্রুপদী ’ ও ‘ চলচ্চিত্র সংবাদ ’ নামে দুটি চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।

এসি

   


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি