চলে গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ আহসান
প্রকাশিত : ১৬:০০, ৬ জুন ২০১৮ | আপডেট: ১৬:৪৯, ৬ জুন ২০১৮
‘বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ’ আলহাজ আহসান উদ্দিন শাহ চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তার গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার বিএল বাড়ি গ্রামে। তার পিতার নাম বরকত শাহ।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার সময় বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা যান। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ১২৬ বছর।
আহসান উদ্দিনের ছোট ছেলে সাংবাদিক গোলাম মওলা জানিয়েছে, ২৪ মে বিকালে তিনি স্ট্রোক করেন। এরপর থেকে তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এর আগেও একাধিকবার তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। আজ (মঙ্গলবার) বাদ এশা তার জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ইন্দোনেশিয়ায় সোদিমেদজো নামের ১৪৬ বছর সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তিটি মারা যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত ‘বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ’ মনে করা হচ্ছিল বাংলাদেশের আহসান উদ্দিন শাহকে।
মৃত্যুর আগে বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন তিনি। অবশ্য গত তিন বছর ধরে তিনি বসে বসে নামাজ আদায় করেন। ১৮৯২ সালের জানুয়ারি মাসের কোনও একদিন তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে আহসান উদ্দিনের ছোট ছেলে গোলাম মওলা বলেন, আমার বাবা তার দীর্ঘজীবন পরিক্রমায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির আমূল পরিবর্তন যেমন দেখেছেন, তেমনি তিনটি শতক দেখা এই প্রবীণের জীবদ্দশায় ব্রিটিশশাসিত সরকার, পাকিস্তান সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের শাসন দেখে যেতে পারেছেন। এই দীর্ঘজীবনের জন্য তিনি কৃতিত্ব দিয়েছেন নিয়ন্ত্রিত জীবন এবং খাদ্যাভ্যাস। ছোটবেলা থেকেই তিনি নিয়মিত গরুর দুধ পান করতেন। তার প্রিয় খাবার ছিল দুধ কলা ভাত। তিনি নিজেই নিজের খাবার খেতে পারতেন। তিনি গরুর দুধ ছাড়া ভাত খেতে চাইতেন না।
আহসান উদ্দিন শাহ এক স্ত্রী ও ১৪ (সাত ছেলে ও সাত মেয়ে) সন্তানের জনক। মহান মুক্তিযুদ্ধের আগেই ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি ৫ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ মোট ৯ সন্তান জন্ম দেন।
স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত তিনি আরও ২ ছেলে ও আরও ৩ মেয়েসহ মোট ৫ সন্তানের বাবা হন। সব মিলিয়ে ১৯৮৭ সালে তিনি ১৪ সন্তানের জনক হন।
এর আগে গত বছর মে মাসে ইন্দোনেশিয়ায় সোদিমেদজো নামের ১৪৬ বছর সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তিটি মারা গেছেন। ফলে ধারণা করা হচ্ছিল, পাবনার আহসান উদ্দিন শাহ পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ। যদিও এর কোনো রাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই।
মৃত্যুর আগে এক সাক্ষাৎকারে আহসান উদ্দিন শাহের কাছে তার বয়স জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বয়স কত হয়েছে তা বলতে পারব না। তবে পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে যখন হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণ করা হয় তখন আমার বয়স ছিল ১৮ থেকে ২০ বছরেরও কাছাকাছি।
এসি
আরও পড়ুন