চোখ দিয়ে পানি পড়ে, কী করবেন: ডা. শারমিন আহমেদ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৫:৩০, ২৫ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১৩:২২, ২৮ অক্টোবর ২০১৮
ডা. শারমিন আহমেদ
চোখ আমাদের শরীরের সংবেদনশীল একটি অঙ্গ। চোখ দিয়েই আমরা পৃথিবীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করি। তাই চোখের যত্নে কোনো অবহেলা করা যাবে না। চোখে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
চোখের অসুখ নিয়ে বর্তমানে আমাদের কাছে যেসব রোগী আসেন তাদের মধ্যে একটি কমন সমস্যা আমরা লক্ষ্য করছি চোখ দিয়ে পানি পড়া। রোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, সারাক্ষণ চোখের পানি মুছতে হয়। বা চোখের পাতাটা সারাক্ষণ ভেজা থাকছে।
চোখ দিয়ে পানি পড়ার পেছনে দুটো কারণ থাকতে পারে।
এক. চোখে পানি বেশি তৈরী হচ্ছে;
দুই. যে নালী দিয়ে পানি যায় তা বন্ধ হয়ে আছে।
ফলে পানি জমে যাচ্ছে ও চোখের বাইরে পানিটা উপচে পড়ছে।
চোখে বেশি পানি তৈরি হওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো- বর্তমানে বায়ু দূষণের কারণে চোখ উঠাটা বেশী হচ্ছে। সেজন্য চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে।
এছাড়া কর্ণিয়াতে যদি কোন আঘাত পেয়ে থাকে বা অ্যালার্জিজনিত কারণেও পানি পড়তে পারে। চোখের পাপড়ি যদি কোনো কারণে ভেতরে ঢুকে থাকে, পাতার ভেতরে যদি ফোলা কিছু থাকে সেক্ষেত্রেও চোখে পানি পড়তে পারে।
এছাড়া যে নালী দিয়ে পানি চলে যাওয়ার কথা সে নালী যদি কোনো কারণে বন্ধ থাকে তা সরু হয়ে যায় তাহলেও পানি বাইরে বেরিয়ে আসে।
আরো পড়ুন :চোখে ঝাপসা দেখার কারণ ও সমাধান (ভিডিও)
শিশু থেকে শুরু করে বড়দেরও এই সমস্যা হতে পারে। সাধারণত এক থেকে তিন মাস বয়সী বাচ্চাদের বাবা মায়েরা আমাদের কাছে নিয়ে আসেন। বলে চোখের কোণে ময়লা বা পানি জমছে। সেক্ষেত্রে আমরা মায়েদের একটা ম্যাসাজ শিখিয়ে দিই।
ভিডিও দেখুন :
প্রয়োজনে একটা ড্রপ দিই। এদুটো ঠিক মতো করলে চোখ ভাল হয়ে যায়। এরপরও যদি ভালো না হয় তাহলে আঠারো মাস পরে Probing নামক একটা সার্জারি করি।
এই সার্জারীর মাধ্যমে বেশির ভাগ বাচ্চা সুস্থ হয়ে যায়। এরপরও যদি চোখে পানি পড়া সমস্যা থাকে তাহলে তিন-চার বছর বয়সে ডিসিআর নামে একটা অস্ত্রোপচার করি। তখন শিশু পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়।
আর বড়দের ক্ষেত্রে যদি পানি পড়া রোগটা থাকে তাহলে কিছু টেস্ট করি। এসপিটি নামক কিছু টেস্ট আছে। সেটি করা হয়। পানি পড়ার কারণটা জানা হয়। নালীটা বন্ধ আছে কিনা সেটি দেখা হয়। যদি নালী বন্ধ থাকে সেক্ষেত্রে অপারেশনের দিকে যাই।
কিন্তু কেউ কেউ পানি পড়া সমস্যাটাকে অবহেলা করেন। তারা সেটা নিয়ে বসে থাকেন। এমতাবস্থায় বড় ধরনের ইনফেকশন হতে পারে। সেক্ষেত্রে চোখের কোনায় পুঁজ জমে। লাল হয়ে যায়। প্রচুর ব্যথা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন অনেকে। পুঁজটা তখন বের করে দিতে হয়। এক্ষেত্রে দেড় মাস পরে অপারেশনের জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকি।
লেখক: চক্ষু বিশেষজ্ঞ, eye lid, orbit, squint & oculoplastics sergeon. কনসালটেন্ট, বাংলাদেশ আই হসপিটাল এন্ড বাংলাদেশ আই কেয়ার হসপিটাল।
শ্রুতিলিখন: আলী আদনান
অা অা/ এআর