ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বল প্রয়োগের তথ্য জাতিসংঘের
প্রকাশিত : ১২:০১, ১৭ আগস্ট ২০২৪

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী 'অপ্রয়োজনীয়' ও ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বল প্রয়োগ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) জেনেভা থেকে প্রকাশিত জাতিসংঘের 'বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা বিষয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণ' শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত ৩২ শিশুসহ ৬ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন। সংস্থাটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল প্রয়োগের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ।
একইসঙ্গে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যথেচ্ছা গ্রেপ্তার, গুম, নির্যাতন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দেয়ার গুরুতর অভিযোগও রয়েছে।
মধ্য জুন থেকে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কোটা সংস্কার আন্দোলন কিভাবে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দমন-পীড়নে আরও ভয়াবহ রূপ নেয়, ছড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী, বিপুল হতাহত এবং সরকার পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। তার ধারবাহিক চিত্রই স্পষ্ট হয়ে ওঠে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে।
জেনেভা থেকে প্রকাশিত ১০ পাতার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিরস্ত্র শিক্ষার্থী আবু সাইদের মৃত্যুর পর দেশব্যাপী ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন। আর তা দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে- এমন প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ।
সাধারণ লাঠিশোঠা নিয়ে আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীদের ওপর নিরাপত্তাবাহিনী নির্বিচারে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এমনকি মারণাস্ত্রও ব্যবহার করে- ভিডিও ফুটেজে এমন তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে জাতিসংঘ।
বিক্ষোভ দমনে পুলিশের সঙ্গে র্যাব, বিজিবি ও সরকার দলীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেয় বলে উল্লেখ করা হয়।
বলা হয়, ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৪শ’ ও ৫ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত মারা গেছে আরও আড়াইশ’ মানুষ। নিহতদের মধ্যে বিক্ষোভকারী, পথচারী, শিশু, সাংবাদিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছে।
জাতিসংঘ আরও জানায়, ওই সময়ে শেখ হাসিনা সরকারকে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল মোতায়েনের প্রস্তাব দিলেও তা প্রত্যাখান করা হয়।
প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু সুপারিশও দিয়েছে জাতিসংঘ। গণমাধ্যম ও আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতিসংঘ।
এ ঘটনায় আরও স্বাধীন তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছে স্বাধীন তদন্ত দল।
এএইচ
আরও পড়ুন