ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

জবির হল উদ্ধার নিয়ে ভুয়া তথ্য, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:২২, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দখলকৃত তিব্বত হল উদ্ধার নিয়ে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বকর খানের বিরুদ্ধে। 

অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট ঢাকা জেলা প্রশাসকের এডিসি শিবলি সাদিক ও এডিসি রাজস্ব মেহেরুন্নেছার বরাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে দখলকৃত হল উদ্ধারের বিষয়ে লেখালেখি করেন আবু বকর। 

তিনি লিখেন, আগামী রোবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে অবৈধ ব্যবসায়ীদের মার্কেট খালি করে দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হবে এবং তিব্বত হল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং বরাদ্দের বিষয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বৈঠক করবে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিবলি সাদিক (রাজস্ব)। 

তার এই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। যা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভেতরে উন্মাদনা তৈরি হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই পোস্টের কিছুক্ষণ পরেই শিক্ষার্থীদের মাঝে হল উদ্ধারের বিষয়টি দৃঢ় করার জন্য আরেকটি পোস্ট দেন। সে পোস্টে তিনি লেখেন, তিব্বত হলের নদীর দিকের সিটটি আমার। বুক করলাম কিন্তু। একই দিন আবু বকর খানের বরাত দিয়ে হল খালি করতে ব্যবসায়ীদের তিন দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট দেখা যায়। 

এদিকে হল উদ্ধারের বিষয়ে  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে জেলা প্রশাসকের বৈঠকের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক কেউই অবগত নয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসক থেকে আমরা এ ধরনের কোন নোটিশ পাইনি। এ তথ্য যে বা যারা ছড়িয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত বিভাগ প্রতিনিধিরাও হল উদ্ধার নিয়ে আবু বকরের দেওয়া তথ্য সম্পর্কে অবগত নয়। শিক্ষার্থীদের দাবি, হলের বিষয়ে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অন্যতম কুশিলবও এই আবু বকর। 
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি হল উদ্ধার নিয়ে আবু বকরই বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক পোস্ট দিয়ে থাকেন। তিনি নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। তিনি যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে এভাবে সকলের সাথে প্রতারণা করবেন সেটা আসলেই দুঃখজনক।

এদিকে তিব্বত হলে অবস্থানকারী ব্যবসায়ীদের হল খালি করতে কোন নোটিশ এবং আলটিমেটাম জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে দেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিবলি সাদিক।

তিনি বলেন, না সেখানে আলটিমেটামের কোনো ইস্যু নাই। সেখানে আমাদের এসি ল্যান্ড ম্যাডাম গিয়েছেন, কাগজপত্র দেখতে চেয়েছেন। পরে তারা বলেছিল, আমরা আগামীকাল কাগজপত্র জমা দিয়ে আসবো। পরবর্তীতে তিব্বত হলের যারা দায়িত্ব আছেন তারা গত ৩ সেপ্টেম্বর কাগজপত্র জমা দিয়ে গেছেন।

এ ছাড়া ঢাকা জেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কামরুন্নাহার বলেন, সেদিন কোনো আলটিমেটাম দেওয়া হয়নি। আমি সেখানে গিয়েছি। তাঁদের কাছে যে সকল কাগজপত্র রয়েছে, সবই আমি তিনদিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনের নিকট জমা দিতে বলেছি। তিব্বত হলের মুজিবুর রহমান ও তাঁদের কয়েকজন আইনজীবীরা দুই দিনের মাথায় জমা দিয়ে গেছেন। কাগজপত্রগুলো এখনো দেখার সুযোগ হয়নি। দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ বিষয় তিব্বত হলের একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা এ ধরনের কোন নোটিশ পাইনি। আমাদের এখানে জেলা প্রসাসক থেকে কর্মকর্তারা এসে আমাদের কাছে ডকুমেন্টস চেয়েছেন। আমরা সে ডকুমেন্টস তাদের কাছে ইতোমধ্যে জমা দিয়েছি। দোকান ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু বলেনি। 

ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে অভিযুক্ত আবু বকর খান বলেন, ব্যবসায়ীদের হল খালি করতে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেয়ার বিষয়টি ভুল ছিলো। তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য বলেছিলো জেলা প্রশাসন। আমার কথা একজনের কাছ থেকে একজনের কাছে গেছে, এজন্য হয়তো ভুল একটা তথ্য ছড়িয়েছে। 

‘তিব্বত হলের নদীর দিকের সিটটা আমার’- ফেসবুকে এমন পোস্ট দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আন্দোলন শুরুর দিকে এই পোস্ট দিয়েছিলাম। মূলত, শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে এমন পোস্ট দিয়েছি।’

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি