জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই আসাদের অবস্থান নিয়ে তথ্য দিল রাশিয়া
প্রকাশিত : ২১:৫৫, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

দীর্ঘ ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ক্ষমতা ও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামের (এইচটিএস) চূড়ান্ত হামলার পর দেশ ছাড়েন তিনি। বিদ্রোহী যোদ্ধাদের রাজধানী দামেস্ক দখলের মুখে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দেশ ছাড়েন তিনি।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে একটি ইলিউশিন৭৫ উড়োজাহাজে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। কিন্তু তিনি ঠিক কোথায় গেছেন, তা জানা যায়নি।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রধান জানিয়েছেন, শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টায় (গ্রিনিচ সময় সন্ধ্যা ৭টা) দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আসাদকে বহনকারী একটি বিমান উড্ডয়নের কথা ছিল। তবে ফ্লাইটরাডার২৪ ওয়েবসাইটে তখন কোনো উড্ডয়নের তথ্য পাওয়া যায়নি।
শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে চ্যাম উইংস এয়ারলাইন্সের এয়ারবাস-এ৩২০ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহর উদ্দেশে দামেস্ক ছেড়ে যায়। এটি যথাসময়ে শারজাহতে পৌঁছায়। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন কূটনৈতিক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, আসাদ ওই বিমানে ছিলেন কিনা তা তিনি জানেন না।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দুইজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার দাবি, আসাদ রোববার ভোরে দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে সিরিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে উঠেছিলেন। একই সময়ে একটি কার্গো বিমানও উড্ডয়ন করে।
ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, কার্গো বিমানটি হোমস শহরের উপর দিয়ে উড়ে পূর্ব দিকে যাত্রা শুরু করেছিল এবং এরপর বিমানটির উচ্চতা কমতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পর বিমানটির সিগনাল হারিয়ে যায়। ফ্লাইটরাডার২৪-এর এক্সে (পূর্বে টুইটার) জানানো হয়, বিমানটি পুরনো এবং এর প্রযুক্তিগত ডেটা ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে। বিমানটি এমন একটি অঞ্চলে উড়ছিল যেখানে জিপিএস সংকেত কাজ করছিল না।
তবে ওই অঞ্চলে কোনো বিমান দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবুও আসাদের অবস্থান ও যাত্রা নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তার সর্বশেষ প্রকাশ্য উপস্থিতি ছিল গত রবিবার। ওই সময় তিনি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দামেস্কে বৈঠক করেন।
বাশার আল-আসাদের দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লেও তিনি আসলে কোথায় গেছেন সে তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি করেছে তার মিত্র দেশ রাশিয়া। তবে আসাদ কোথায় আছেন বা তিনি কোন বিমানে যাত্রা করেছেন তা নিশ্চিত নয়।
দেশটি বলছে, সিরিয়াতে এখন আর আসাদ নেই। তিনি সিরিয়া থেকে বের হয়ে গেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। তবে তাদের এই দাবি কতটা সত্য, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। এমনকি বাশার রাশিয়ার দিকে গেছেন কি না, তাও নিশ্চিত করে বলেনি রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কার্যালয় ছেড়েছেন বাশার আল-আসাদ। তিনি সিরিয়াও ছেড়েছেন। দেশ ছাড়ার আগে তিনি ঘোষণা দিয়ে গেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। এ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে তাঁর কথা হয়নি।
এ ছাড়া সিরিয়ায় থাকা রুশ ঘাঁটি নিয়েও মন্তব্য পাওয়া যায় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, এসব ঘাঁটিকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সেনারা বেশ সতর্ক। তবে, ভয়ের কোনো কারণ নেই, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।
বিরোধীদের সঙ্গে মস্কো আলোচনা শুরু করেছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়। সব পক্ষকে শান্ত থাকারও আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
এমবি
আরও পড়ুন