ঢাকা, সোমবার   ২০ জানুয়ারি ২০২৫

জাবিতে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগ কর্মী আটক

জাবি সংবাদদাতা 

প্রকাশিত : ২২:৫৯, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ১৫ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মীর সহায়তায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অধিকাংশ ছাত্রদল নেতাকর্মীই পদবঞ্চিত ও সদ্য বহিষ্কৃত।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আটক ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম শরীফুল ইসলাম সোহান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ও আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের আবাসিক ছাত্র।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সম্মান শেষ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন শরীফুল ইসলাম সোহান। বেলা সাড়ে ১২টায় হলে প্রবেশ করে পরীক্ষায় বসেন। এসময় খবর পেয়ে শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হন। এসময় তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সোহানকে পরীক্ষায় বসতে দেয়ার প্রতিবাদ জানান এবং তাকে পুলিশে সোপর্দ করে বিচারের দাবি জানান। তবে বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে পরীক্ষা শেষ করার সুযোগ দিতে বলেন। এক পর্যায়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দাবির মুখে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে সোহানকে আটক করে নিয়ে যায়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, বিভাগের শিক্ষকদের ছত্রছায়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা দিয়ে চলে যাচ্ছে। এর আগেও ৪৭ ব্যাচের আরেক ছাত্রলীগ নেতা এভাবে পরীক্ষা দিয়ে চলে গেছে। বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া পরীক্ষায় বসার সুযোগ নেই। প্রায় ছয় মাস পেরুতে চললেও এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার করতে পারেনি প্রশাসন। এসব হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনলে শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

ঘটনাস্থলের উপস্থিত ৪৬ ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ বলেন, আমরা খবর পাই ৪৯ ব্যাচের ছাত্রলীগ কর্মী সোহান ডিপার্টমেন্টের পরীক্ষা দিতে এসেছে। বিভিন্ন হলে তদন্ত কমিটির দেখানো ফুটেজ থেকে ১৫ জুলাই রাতে সে হামলায় অংশগ্রহণ করেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা তার বিভাগে যাই এবং বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারকে জানাই সে প্রত্যক্ষ হামলাকারী, যার ভিডিও ফুটেজ আছে। তার মতো এমন হামলাকারীর জেলে থাকার কথা। সে কিভাবে পরীক্ষা দিতে আসে এটা আমাদের বোধগম্য নয়। আমাদের প্রশ্ন হলো পরীক্ষার দেওয়ার সাথে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কিত। এখানে হলের প্রভোস্ট, বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাক্ষর দেওয়া লাগে। তারা কিভাবে এরকম একজন হামলাকারীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিলো?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেনি যে কে পরীক্ষা দিতে পারবে, কে দিতে পারবেনা। ছাত্রলীগ কর্মীদের জন্যও বলা হয়নি যে কারা পরীক্ষা দিতে পারবেনা। আর আমি ব্যাক্তিগতভাবেও সবাইকে চিনিনা যে কারা কারা হামলার সঙ্গে জড়িত। সব হামলাকারীকে তো আর একসঙ্গে মনে রাখা যায় না।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করবেন।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি