জুয়া আর মদ খাওয়া পিওর এন্টারটেইনমেন্ট: তসলিমা
প্রকাশিত : ১০:৫৩, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলছে ক্যাসিনো অভিযান। এসব অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা, স্বর্ণালংকার, মদ আর অবৈধ অস্ত্র। গ্রেফতার করা হয়েছে অনেককে। সরকার দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও অনেকেই এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। তাদেরকেও ধরা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন দেশের আপামর জনসাধারণ। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে নেতিবাচক অবস্থানে ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে তসলিমা লেখেন, ‘বাংলাদেশে জুয়ো নিষিদ্ধ নাকি? শুনলাম লুকিয়ে লুকিয়ে নাকি ক্যাসিনো ব্যবসা চলছিল আর এখন জেলে ভরা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের? জুয়ো অনেকেই ভালোবাসেন, খেলবেন। আজকাল তো ক্যাসিনোগুলোয় সব মেশিনই বসানো।
কপাল ভালো হলে লটারি জিতবে, কপাল ভালো হলে স্লট মেশিন থেকে ঝমঝম করে পয়সা বেরোবে। চাতুরি টাতুরির দিন চলে গেছে। সবই কম্পিউটারাইজড। মদ অনেকেই ভালোবাসেন, খাবেন। অন্যের অসুবিধে না করে, অবশ্যই। মদ খেয়ে গাড়ি না চালালেই, বউ না পেটালেই, ভায়োলেন্স না করলেই হলো। মদ জুয়ো নিষিদ্ধ করার কী দরকার?’
তসলিমা আরও লেখেন, ‘কিছু মানুষ যদি খেলে এবং খেয়ে আনন্দ পায়, তাদের আনন্দে বাধা দেওয়ার কারণ কী? ব্যবসা ঠিকই চলছে, তবে আড়ালে। আড়ালে চলার চেয়ে প্রকাশ্যে চলা ঢের ভালো। যে দেশের শহরে বন্দরে বৈধ গণিকালয়, যে দেশে মেয়েদের যৌনদাসী হিসেবে প্রকাশ্যেই কেনাবেচা করা হয়, সে দেশে জুয়ো লুকিয়ে খেলতে হয়, মদ লুকিয়ে পান করতে হয়। যেন জুয়ো বা মদ্যপান যৌনদাসত্বের চেয়ে খারাপ কিছু!
ধর্ম যত বাড়ে, পাল্লা দিয়ে ভণ্ডামো বাড়ে। পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ হোক, মানুষের দারিদ্রের সুযোগে মানুষের ওপর যৌন নির্যাতন ছাড়া এ কিছু নয়। কারও ক্ষতি না করে জুয়ো খেলা আর মদ খাওয়া পিওর এন্টারটেইনমেন্ট- এসব থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াই ভালো।’
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।