ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

জেনেভার ভাঙা চেয়ারের নেপথ্যে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৭:০৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে একটি হচ্ছে জাতিসংঘ অফিস চত্বর। জাতিসংঘ অফিসের গেটের সামনে টানানো আছে এক বিশাল ভাঙা চেয়ার। এর তিন পা আছে কিন্তু আর এক পা দোমড়ানো-মোচড়ানো মাঝখান থেকে ভাঙা। জাতিসংঘ অফিসের গেটে এমন একটি ভাঙা চেয়ার থাকার কারণ তো অবশ্যই রয়েছে।

ভুমি মাইন ও গুচ্ছ বোমার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক প্রতীক স্বরূপ এই ভাঙ্গা চেয়ার। চেয়ারের নিচে ভূমিতে খোদাই করে লেখা আছে সশস্ত্র সহিংসতার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। এই ভাঙা চেয়ার হচ্ছে ভঙ্কুরতা ও সামর্থ্য, অনিশ্চয়তা ও স্থিতিশীলতা, নিষ্ঠুরতা ও মর্যাদার প্রতীক।

২১ শতকের সবচেয়ে শিল্প প্রতিকী হিসেবে খ্যাত কাঠের তৈরী এই স্মারক ভাস্কর্যটি তৈরী করেছেন সুইস শিল্পী ডেনিয়েল বারসেট ও মিস্ত্রি লুইস। এই ভাস্কর্যটি তৈরি করতে সাড়ে পাঁচ টন কাঠ লেগেছে। এর উচ্চতা ১২ মিটার।

ভাঙা চেয়ারটি জাতিসংঘে আসা নানা রাজনৈতিক ব্যক্তি ও অন্যদের স্মরণ করিয়ে দেয় এই প্রতিবাদের কথা। এর বার্তা হচ্ছে- ভূমি মাইন ও গুচ্ছ বোমার শিকার বেসামরিক লোকদের স্মরণ করা, ভূমি মাইন নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে নিজ নিজ সরকারকে চাপ দেওয়া। এটি মূলত: জাতিসংঘে আসা বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে মনে করিয়ে দিতে চায় যে, ভূমি মাইন ব্যবহার বন্ধ না করলে তারা যে চেয়ারে বসে আছে তার নিচেও একটি ভূমি মাইন থাকতে পারে যা বিস্ফোরণ ঘটে তাদের একটি উড়ে যেতে পারে।

হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল ১৯৯৭ সালের ১৮ আগস্ট জেনেভায় জাতিসংঘের প্রবেশ পথের বিপরীতে ভাঙ্গা চেয়ারের ভাস্কর্যটি স্থাপন করে। উদ্দেশ্য হল ভূমি মাইনে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং ভূমি মাইন বিষয়ে ডিসম্বর ১৯৯৭ সালে স্বক্ষরিতব্য অটোয়া চুক্তিতে অধিক সংখ্যক দেশের সম্মতি লাভ করা। ১৯৯৯ সালের ১ মার্চ-এ ৪০টি দেশের অনুমোদনের মাধ্যমে অটোয়া চুক্তি আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে কার্যকর হয়। পরে বহু দেশ কর্তৃক এই চুক্তি অনুমোদন না করা এবং অধিক জনসমর্থনের জন্য এই স্বাক্ষরটি ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রদর্শন করা হয়। সাময়িকভাবে এটি সরিয়ে ফেলা হলেও ২০০৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তা পুনঃস্থাপন করা হয়।

১৯৯৭ সালে প্রথম জাতিসমূহকে ভূমি মাইন নিষিদ্ধ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা এবং পরে ২০০৭ সালে গুচ্ছ বোমা নিষিদ্ধের লক্ষ্য নিয়ে ভাঙা চেয়ার স্থাপন করা হলেও এটি বর্তমানে ভূমি মাইন ও গুচ্ছ বোমায় বেসামরিক লোকজনের হাত-পা নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিধি এক প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়।

সূত্র: দ্য কালচার ট্রিপ

একে / এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি