ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

জেনে নিন প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নের কিছু টিপস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩০, ২৫ মে ২০১৭ | আপডেট: ১৮:৩০, ২৬ মে ২০১৭

যখন আপনার শিশুর বয়স তিন বছর তখন আপনাকে এক উপায়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়। এ সময় তাদের অপরিপক্কতার কারণে আপনাকে বেশ নেতৃত্বপরায়ণ থাকতে হয়… ‘গরম চুলায় হাত দিও না’ কিংবা ‘ওখানে যেও না’। এ সময়টাতে আপনাকে শিশুদের কথার ফুলঝুরির প্রতিউত্তরে মগ্ন থাকতে হয়। তবে কিশোর বয়সে অন্য অভিপ্রায় সৃষ্টি হয়। এ সময় সন্তানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আপনার মনে হতে পারে আপনি একজন ভিনগ্রহের বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলছেন।

প্রাপ্ত বয়স্ক বা সাবালক সন্তানদের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ নির্ভর করে পারস্পারিক সম্পর্ক এবং যোগাযোগের ধরণের উপর।

যোগাযোগের ক্ষেত্রে আবেগী প্রভাব সম্পর্ক আরো উজ্জ্বল করে। যদি আপনি তাদের অবস্থানকে বেশি বেশি মূল্যায়ন করেন এবং মাঝে মাঝে তাদের ব্যাপারে কোনো ধরণের উদ্যোগ না নেন তবে তারা ধরে নেয় আপনি তাদের পাত্তা দিচ্ছেন না। অপরদিকে, যদি আপনি তাদের সব বিষয়ে অতিরিক্ত সম্পৃক্ত হতে চান তবে ধরে নিবেন আপনি একজন উন্মত্ত গাড়িচালক।   

আমরা এমন এক সময়ে বড় হয়েছি যখন আমাদের ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ডাকপিয়নের অপেক্ষায় থাকতে হতো। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সন্তানরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে ফোনে কিংবা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুদে বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে। যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক উজ্জ্বল সম্ভাবনার সৃষ্টি হলেও আপনার শিশুকে সঠিক ‍উপায়ে পরিচালিত করা এবং তার ভারসাম্য রক্ষা করার মাধ্যমে আপনার এবং তার সম্পর্ক আরো সমৃদ্ধ হবে।

এটা অনস্বীকার্য খুদে বার্তা যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অনেক দিক থেকে এটা দ্রুত উত্তর-প্রতিউত্তরের ক্ষেত্রে আশীর্বাদ। অন্যদিকে, এটা গভীরভাবে সম্পর্ক স্থাপনের সক্ষমতাকে কমিয়ে দিচ্ছে। তাই সাবালক সন্তানের অভিভাবক হিসেবে খুদে বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে সতর্ক হোন।  

বিশেষ আবেগীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুদে বার্তায় আপনার অনুভূতি পুরোপুরি প্রকাশ করা সম্ভব হয় না এমনকি অন্যদের অনুভূতিও পড়তে পারেন না। যদিও খুদে বার্তা ভাসা ভাসা তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যম। তাই গভীর আবেগীয় অনুভূতি প্রকাশ কিংবা আলোচনার ক্ষেত্রে এটাকে এড়িয়ে চলুন।

বর্তমানে ফোনে কথা বলাও এক ধরণের ফ্যাশন। অনেকে আবার ফোনকলের জবাব না দিয়ে বরং খুদে বার্তার অপেক্ষায় থাকেন। এছাড়া আপনার ভয়েস মেইলও অনেক সময় প্রত্যাখাত হলে তা আপনার জন্য বিষাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যখন এমন হবে তখন আপনাকে ধরে নিতে হবে আপনার সন্তান হয়ত আপনার সঙ্গে দুষ্টামি করছে, কিছু সময় পর ঠিকই আপনাকে প্রতিউত্তর করবে অথবা আপনার সন্তান অনেক বিপদে আছে।

মায়েরা সাধারণত এ সময়টাতে পরিস্থিতি বুঝে দুটো বিষয়ে অনুমান করেন। এর একটা হচ্ছে তার সন্তান এমনিতেই ঢিলে স্বভাবের, অন্যটা হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে তার সন্তানের অস্বাভাবিক আচরণ।

ফেসবুক এখন একটা মিশ্র আর্শীবাদ। এটা অভিভাবকরা পছন্দ করেন কারণ এতে তারা সন্তানের জীবনের একটা অংশ দেখতে পান।

সাবালক সন্তানরা তাদের আবেগ অনুভূতি কিংবা চিন্তা প্রকাশের জন্য একটু আলাদা থাকতে চান। এ সময়টাতে সন্তানদের কাজে হস্তক্ষেপ না করে তাদের মূল্যায়ন করতে হবে।  

আপনার সাবালক সন্তান এখন ভাবতে পারে আপনি কখন কখন তার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। যখন তারা আর আপনার ছাদের নীচে থাকছে না তখন তারা তখন ঠিকই হিসেব করে কখন আপনি তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। যখন তারা বাড়িতে আসবে তখন আপনি তাদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন এবং এবং একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করুন।

মনে রাখবেন এসময় তারা তাদের জীবন গড়ছেন যেভাবে আপনি তাদের গড়ে তুলেছেন। তাই এ সময় তারা কেমন আছে সেটা জানার জন্য খুদে বার্তায় যোগাযোগ রাখুন। কিন্তু এ সময় খুব বেশি চাহিদা কিংবা অভাববোধ প্রকাশ করবেন না। যখন আপনি কথা বলবেন তখন মনে রাখতে হবে আপনি তিন বছরের সন্তানের সঙ্গে কথা বলছে না। তাকে প্রাপ্তবয়স্ক ভেবে তার সঙ্গে কথা চালিয়ে যান।

সাবালক সন্তানদের ক্ষেত্রে অনেক সময় অনেক বিষয়ে কিছু বলার থাকে না। এর মধ্যে রয়েছে তাদের বিবাহ, সম্পর্ক, কীভাবে তারা তাদের সন্তানদের বড় করছে। কারণ, তাদের নিজস্ব পছন্দ রয়েছে। বরং এ সময় আপনি অকস্মাৎ আনন্দের উপলক্ষ হতে পারেন, তাদের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ চালিয়ে যেতে পারেন।

যদি তারা কোনো সম্পর্কের ব্যাপারে কথা বলতে চায় তবে তাদের অনুভূতির কথা জানতে চান এবং এ বিষয়ে ভাবুন। কারণ, তারা আপনাকে বিষয়টা শোনাতে চায়। আপনার ইতিবাচক অবস্থান তাদের এ বিষয়ে কথা বলতে আরো আগ্রহী করে তুলবে।  

কখনোই তিরষ্কার করবেন না। আপনার সন্তানের পছন্দ ও অবস্থানের ব্যাপারে আপনার ইতিবাচক অনুভূতি থাকা জরুরি।

বরং আপনি যদি আপনার সন্তানকে ভালো বন্ধু হিসেবে কল্পনা করতে পারেন তবে তাই উত্তম। যেমন ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না তুমি ওই বোকা মেয়ে/ছেলেটার সঙ্গে আড্ডা দিয়েছ?’ যখন আপনি সন্তানের প্রতি আন্তরিক থাকবেন তখন এ ধরনের কথাই আসবে আপনার কাছ থেকে।

আধূনিক জীবন যাত্রা অনেক কঠিন। তাই, কোথায় থামতে হবে সেটা জানার পাশাপাশি এমনভাবে কথা বলা উচিত যেটা উভয়ের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক আরো গভীরতর করবে।

 সূত্র : সিনোজডটকম।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি