ঢাকা, রবিবার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

ঝালকাঠিতে যুবলীগের ২ নেতাকে আটক মহাসড়ক অবরোধ অতঃপর...

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:৩৩, ২৭ আগস্ট ২০১৯

ঝালকাঠিতে যুবলীগের দুই গ্রুপের উত্তেজনায় জাকির ও মিলন নামে দুই যুবলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশ। এতে উত্তেজিত হয়ে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কলেজ মোড় অবরোধ করে জাকির সমর্থকরা। 

মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে দুই ঘণ্টা ধরে সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখে অবরোধকারীরা। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট মোঃ বশির গাজী, সদর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

এদিন সকাল ১১টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত হয়ে সাড়ে বেলা ৩টার দিকে যুবলীগ নেতাদের মুক্ত করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। 

জানা গেছে, সরকারি কলেজ, ফায়ার সার্ভিস মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ও ফেস্টুন ছেড়াকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক কাউন্সিলর রেজাউল করীম জাকির এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলনের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। 

একপর্যায়ে সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে সাগর নামে সৈয়দ মিলনের এক অনুসারীকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। মঙ্গলবার সকালের এ ঘটনার পর ১১টার দিকে যুবলীগ নেতা জাকির জেলা বাস মালিক সমিতিতে গেলে সৈয়দ মিলন ও তার সমর্থকরা তার ওপর হামলা করার প্রস্তুতি নেয়। 
এসময় বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভৈরবপাশা ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে পুলিশকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ কারণে পুলিশ রেজাউল করীম জাকির ও সৈয়দ মিলনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। 

এতে জাকির সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কলেজ মোড়ে ট্রাক ও গাড়ি দাড় করিয়ে অবরোধ করে। টায়ারে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে মিছিল করতে থাকে জাকির সমর্থকরা। অবরোধকারীদের আন্দোলনে ৮টি রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স চলাচলেও বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এমনকি অবরোধ স্থানের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মহাসড়কের দু’পাশে প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। 

এ অবস্থায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মোঃ বশির গাজী, ডিবি পুলিশ পরিদর্শক ইকবাল বাহার খানসহ ডিবি পুলিশের একটি দল, সদর থানা পুলিশের একটি দল এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তরুণ কর্মকার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। 

এদিকে স্থানীয় এমপি আমির হোসেন আমু’র মিমাংসার আশ্বাসে যুবলীগ নেতা জাকির ও সৈয়দ মিলনকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। ছাড়া পেয়ে যুবলীগ নেতা জাকির কলেজ মোড় পৌঁছলে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয় তার অনুসারী ও সমর্থকরা। 

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলনের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

তবে মিলনের অনুসারী ঝালকাঠি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুল ইসলাম অপু জানান, সাগর নামে এক কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মঙ্গলবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে গেলে সেখানে জাকির সমর্থকরা তাকে বেদম মারধর করে। তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। 

তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে জাকির ভাইকে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি আমাদের বাস মালিক সমিতিতে যেতে বলেন। আমরা সেখানে গেলে তিনি সমিতিতে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিয়ে আমাদের কথা শুনেন নি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে দু’জনকেই থানায় নিয়ে যায়। পরে এমপি ও আমাদের অভিভাবক আমির হোসেন আমু’র মিমাংসার কথা বললে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।
 
এদিকে জেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করীম জাকির বলেন, আমি বাস মালিক সমিতিতে গেলে আমাকে ঘেরাও করা হয়। সেখান থেকে আমাকে থানায় নেয়া হয়। আমি জনসাধারণের যে ভালোবাসা পেয়েছি তাতে তাদের কাছে আমি চীর কৃতজ্ঞ। 

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মোঃ বশির গাজী জানান, যুবলীগের দু’গ্রুপের উত্তেজনা বিরাজ করায় মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছিলো। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। 

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি