ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা, কীভাবে বুঝবেন ?
প্রকাশিত : ১৬:৪৯, ৭ জানুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১৮:৪২, ৭ জানুয়ারি ২০১৯
গর্ভাবস্থা একেবারেই স্বাভাবিক একটি বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই একজন নারী গর্ভধারণ করে থাকেন। তবে এর মধ্যে আমরা না চাইলেও কিছু কিছু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা রয়ে যায়। কোনো জটিল অবস্থা যদি গর্ভাবস্থায় থাকে, সে অবস্থার জন্য যে শিশুটি আসবে তার উপর যদি কোনো খারাপ প্রভাব পড়ে (যেমন—বাচ্চাটা মারা যেতে পারে অথবা মৃত বাচ্চা জন্ম দিতে পারে অথবা যে শিশুটি আসবে, তার যে কোনো ধরনের অসুবিধা হতে পারে) সেটিই হলো ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা।
গর্ভাবস্থার সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অবস্ এন্ড গাইনী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. নুসরাত আফরীন নীলা। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান।
একুশে টিভি অনলাইন: ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী কাদের বলা হয় ?
ডা. নুসরাত আফরীন নীলা: কোন গর্ভবতী মহিলার গর্ভধারণ করার পূর্বে কোন ধরনের মেডিকেল ডিসঅর্ডার যদি থাকে বা গর্ভধারণ করার পরে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে কোন গর্ভপাত হয় বা গর্ভের সন্তান মৃত্যু বরণ করলে বা ২৮ সপ্তাহের পরে গর্ভের সন্তান মৃত্যুবরণ করে বা জন্মগত ক্রটিসহ কোন সন্তান প্রসবের করণে বা গর্ভধারণ অবস্থায় কোন মেডিকেল ডিসঅর্ডার নির্ণয় হলে তাকে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী বলে।
একুশে টিভি অনলাইন: মেডিকেল ডিসঅর্ডার কি?
ডা. নুসরাত আফরীন নীলা: কোন মায়ের যদি গর্ভবতী হওয়ার পূবেই প্রেগনেন্সি উচ্চ রক্তচাপ,থাইরয়েড ডিসঅর্ডার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া, ইত্যাদি এই ধরনের অসুস্থতা থেকে থাকে বা গর্ভধারনের ২৮ সপ্তাহের মধ্যে কোন সন্তান যদি গর্ভে থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে অথবা গর্ভপাত হয়। বা গর্ভধারনের ২৮ সপ্তাহের পরে যদি গর্ভে থাকা অবস্থায় মারা যায় বা জন্মগত ক্রটি নিয়ে কোন সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে। অথবা পূর্ববর্তী গর্ভবতী থাকা অবস্থায় গর্ভবর্তী সহায়ক অসুস্থতা হয়েছিলো কিনা যেমন প্রেগনেন্সি ডায়াবেটিস ম্যালাইটাস প্লাসেন্টা প্রিভিয়া ইত্যাদি হয়ে থাকলে এমন অবস্থাকে মেডিকেল ডিসঅর্ডার বলে।
একুশে টিভি অনলাইন: ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী বলছেন যাকে, আপনাদের ভাষায় High-Risk Pregnancy দুরীকরণে আপনার পরামর্শ কি ?
ডা. নুসরাত আফরীন নীলা: সাধারণত সর্বনিম্ন antenatal নয় মাসে ৪ বার চেকআপ করলেও হয়। কিন্তু High-Risk Pregnancy তে antenatal চেকআপ মাসে একাধিকবারও হতে পারে।
একুশে টিভি অনলাইন: জন্মগত ক্রটি বা Congenital anomalies কখন নির্ণয় করা য়ায়?
ডা. নুসরাত আফরীন নীলা: ১১-১৪ সপ্তাহের মধ্যে শিশুর জন্মগত কোনো ক্রটি (যেমন ডাউন সিন্ড্রোম ইত্যাদি) থাকলে তা genetic Ultrasonogram এর মাধ্যমে ধরা পড়ে।
একুশে টিভি অনলাইন: এধরনের রোগীরা কখন ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন?
ডা.নুসরাত আফরীন নীলা: সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করলে অন্তত ৩ মাস আগে যোগাযোগ করতে হবে।
একুশে টিভি অনলাইন: আমরা জানি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিটো-ম্যাটারনাল উইং আছে। এমন নাম করণের কারণ কী? আর এটি কী ধরণের সেবা দিয়ে থাকে?
ডা.নুসরাত আফরীন নীলা: অসংক্রামক ব্যাধিসহ জটিল রোগে আক্রান্ত ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী নারীদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ফিটো-ম্যাটারনাল মেডিসিন উইং চালু করা হয়েছে। আমরা প্রথমে Screening করে রোগীর মেডিকেল ডিসঅর্ডার আছে কি না খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। তারপর রোগ অনুযায়ী নির্দিষ্ট রোগের বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে তাদের মতামত নিতে বলি এবং রোগীকে Folic acid খাওয়াতে শুরু করি।
একুশে টিভি অনলাইন: Folic acid খাওয়ালে কি হয়?
ডা. নুসরাত আফরীন নীলা: জন্মগত ক্রটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করার হার অনেকাংশে কমে যায়।
একুশে টিভি অনলাইন: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ডা. নুসরাত আফরীন নীলা: একুশে টিভি পরিবারকেও ধন্যবাদ।
টিআর/