ঠাকুরগাঁওয়ে অজ্ঞাত রোগে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু
প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে অজ্ঞাত রোগে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভান্ডারদহ গ্রামে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে আরও পাঁচজন। এমন মৃত্যুতে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছেন, এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এজন্য তারা গ্রামবাসিকে আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
পরিবারে প্রথমে বাবার মৃত্যু, পরে একই দিনে স্ত্রী ও জামাতার মৃত্যু। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হওয়ায় গ্রামের অধিকাংশ লোকজন আতংকিত হয়ে মুখোশ পড়ে বেড়াচ্ছেন । স্থানীয়রা বলছেন, যারা মারা গেছে তারা সবাই অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
প্রথমে শরীর ব্যাথা ও জ্বর। পরে হঠাৎ করেই ওই গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী আবু তাহের মৃত্যুবরণ করেন। আবু তাহের বয়স্ক হওয়ার কারণে বিষয়টি তেমন গুরুত্বের সঙ্গে দেখেনি তার পরিবার। এরপর পাঁচদিন পর আবু তাহেরের জামাতা হাবিবুর রহমান একইভাবে অসুস্থ হন। পরদিন সকালে ৯টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে হাবিবুরের মৃত্যু হলে জামাতার সেই মৃত্যূর সংবাদ শোনার কিছুক্ষণ পর আবু তাহেরের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম মৃত্যু বরণ করেন।
আবার পাঁচদিন পর একই রোগে অসুস্থ হন আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী ও মেহেদী হাসান। তাদের দুজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে সকালে ইউসুফ এবং রাতে সাড়ে ৯টার দিকে মেহেদী মারা যান। তার পরদিন সকালে মৃত্যুবরণ করা ইউসুফের স্ত্রী কোহিনুর বেগম ও তার একমাত্র ছেলে সন্তান আবির অসুস্থ হয়ে পরলে তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া একই গ্রামের সালমাসহ তিনজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
ভাইরাসের আতঙ্কে বাড়ির আশপাশের লোকজন ঘর ছেড়ে দেওয়া শুরু করেছে। জনমনে আতঙ্ক কোন সময় কাকে আক্রমণ করে এই ভাইরাস।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউপি চেয়ারম্যান সমর কুমার চ্যার্টাজী দ্রুততার সঙ্গে অজ্ঞাত রোগের কারণ নির্ণয় করার আবেদন জানিয়েছেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ জুয়েল বলেন, ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম গঠনএবং কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. শাহজাহান নেওয়াজ জানিয়েছেন, মস্তিস্কে প্রদাহ জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঠিক কারণ নিরুপন করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ ও তিন সহকারীসহ ৬ সদস্যের একটি টিম ওই গ্রামে পৌঁছে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে না।
এসএইচ/
আরও পড়ুন