ডিএমপির এক উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
প্রকাশিত : ২৩:৫২, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৮:৩৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭
রাজধানীর শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক সাইমুজ্জামানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। বরিশাল থেকে ঢাকায় ভর্তি হতে আসা এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করার অভিযোগ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, অপকর্মে মদদ দিয়ে আসছেন শাহ্আলী থানার ওসি (তদন্ত) মেহেদী হাসান। সহযোগিতায় আছে সাংবাদিক নামধারী স্থানীয় কিছু সোর্স।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী মাজার প্রাঙ্গণ। বরিশাল থেকে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে মাজার জিয়ারতে আসেন সান চক্রবর্তী। হঠাতই তাকে ঘিরে ফেলে পুলিশের একটি দল। পকেট থেকে পাওয়া যায় দুই পুরিয়া গাঁজা। হকচকিত সানকে নিয়ে শুরু হয় পুলিশের গাড়িতে ‘মিরপুর ভ্রমণ’। সেসঙ্গে সানের পরিবার পরিজনকে ফোন দিয়ে বিকাশে চাওয়া হয় ২০ হাজার টাকা।
দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য বরিশালে সানের পরিবারকে দেওয়া হয় একটি বিকাশ নম্বর। দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের মিরপুর প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া রকি নামের এক ব্যক্তির মোবাইল নম্বর (০১৬৩৪৩৬২১২) থেকে ফোন দিয়ে ০১৭৩৩৩৩৫৭০৭ নম্বরে বিকাশ করতে বলা হয়। পরবর্তীতে সানের ঢাকা নিবাসী এক আত্মীয় শাহ আলী থানায় গিয়ে নগদ ছয় হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনেন সানকে।
ভুক্তভোগী সান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমি আমার এক সহপাঠীকে নিয়ে মাজার জিয়ারত করতে যাই। হঠাতই কিছু পুলিশ আমাকে ঘিরে ধরে তল্লাশি করতে চায়। আমি তাদেরকে তল্লাশি করতে দিলে আমার পকেটে হাত ঢুকিয়ে গাঁজা বের করে আনে তারা। ওই প্যাকেট আমার না। এরপর তারা আমার কাছে তাতক্ষণিকভাবে এক হাজার টাকা চায়। আমার কাছে টাকা না থাকায় আমার পরিবারের সঙ্গে আমাকে যোগাযোগ করতে বলে। আমি যোগাযোগ করলে তারা একটি নাম্বার দিয়ে সেখানে ২০ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে।”
সানের এ অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে এসআই সাইফুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাইফুজ্জামান এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। এসময় তার সঙ্গে অনেক সিনিয়র সাংবাদিকের সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ উল্লেখ করে এ বলেন, “আমারও অনেক সিনিয়র সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচয় আছে। তারা জানে আমি কেমন। আমি এসব কাজ করি না”।
তাহলে সান’কে কেন থানায় আনা হল আর কেনই বা ছেড়ে দেয়া হল?-এ প্রশ্নের জবাবে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি এসআই সাইফুজ্জামান। রেগে গিয়ে এসআই সাইফুজ্জামান উত্তেজিত স্বরে বলেন, “আপনি আমাকে চেনেন না বলেই এসব বলছেন। কেন আমি কাউকে ধরব আর কেনই বা ছাড়ব তা আপনাকে কেন বলতে যাব? এত কথা আপনি কেন জিজ্ঞেস করবেন?” এ কথা বলেই মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
অভিযোগ উঠেছে অর্থ লেনদেনের পুরো বিষয়টি তদারকি করেন শাহ আলী থানার ওসি(তদন্ত) মেহেদী হাসান। অভিযোগের বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে “সামনে অনেক মানুষ। পরে ফোন দেন” বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি। এরপর কয়েক দফায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি আর ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে ডিএমপি’র মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আহমেদের মুঠোফোনেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
//এসএইচএস//
আরও পড়ুন