ঢাকা উত্তরে আদম তমিজি ও আতিকুলের মনোনয়ন লড়াই
প্রকাশিত : ০০:২০, ৭ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৮:০৬, ১৪ জানুয়ারি ২০১৮
আসন্ন ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনাকল্পনা। নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠেছে পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে শহরের অলিগলি সর্বত্র। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে ছুটছেন জনগণের কাছে। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা মাঠে-ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন বিপুল উদ্দীপনায়।
শনিবার ঢাকা উত্তরের বিশটি এলাকায় আদম তমিজি হকের কর্মী সমর্থকরা গণসংযোগ চালিয়েছেন। এদিকে, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন আগামী ২৬শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি কমিশন বলছে, একই দিনে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন অঞ্চলে যুক্ত হওয়া ৩৬টি নতুন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদেও নির্বাচন হবে।
ক্ষমতাসীল দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন দু`জন। তারা হলেন হক গ্রুপের স্বত্ত্বাধিকারী শিল্পপতি আদম তমিজি হক ও বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম। দু`জন থেকে কেউ একজন মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে দাবি করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের এক নেতা। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছেন এই দুই প্রার্থী। ঢাকা উত্তর সিটির বিভিন্ন জায়গায় হক গ্রুপের স্বত্ত্বাধিকারী আদম তমিজি হক ও বিজিএমইএ- এর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম কে “মেয়র হিসেবে দেখতে চাই” লেখা ব্যানার ফেস্টুন লাগানো হয়েছে।
আদম তমিজি হক ও আতিকুল ইসলাম দুজনেই ইতিমধ্যে দুজনই নগরবাসীকে একটি আধুনিক ঢাকা উপহার দিতে যেসব কাজ করা প্রয়োজন সেভাবে রোডম্যাপ তৈরি করেছেন। যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিয়ে উচ্চতর পড়াশুনা করা আদম তমিজি হক `হক গ্রুপ` এর স্বত্বাধিকারী। সফল ব্যাবসায়ী ও সমাজসেবক হিসেবে রয়েছে তার পরিচ্ছন্ন ইমেজ। ২০১০ সালে হক গ্রুপের দায়িত্ব নেন। গুলশান-বারিধারায় তিনি সমাজসেবা মূলক কাজে যুক্ত হন। নানা ধরণের সমাজ সেবামূলক কাজের কারণে চলে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুডলিস্টে। দলীয় হাইকমান্ড থেকে সিগন্যাল পেয়ে তিনি সিটি মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। সম্প্রতি একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে দেওয়া এক স্বাক্ষাৎকারে রাজধানীকে নতুন করে সাজানোর ব্যাপারে তার ব্যক্তিগত পরিকল্পনা জানিয়েছেন। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে আদম তমিজি হক বলেন, মনোনয়ন পেলেও রাজনীতিতে বা মানুষের সাথে আছি। না পেলেও আছি। আমি আজীবন শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত কর্মী হিসেবে কাজ করব। আদম তমিজি হকের পক্ষে তার প্রধান গণসংযোগ কর্মকর্তা দেবাশিস শিকদার এ প্রতিবেদক কে বলেন, আমরা যেখানেই যাচ্ছি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তরুণ সমাজের কাছে আদম তমিজি হক ভীষণ জনপ্রিয়। সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় মানুষের দোয়া তার সাথে আছে।
আতিকুল ইসলাম ২০১৩-১৪ সেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত পরিষদের ব্যানারে রপ্তানিমুখি তৈর পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠনের (বিজিএমইএ) সভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি ইসলাম গার্মেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। আগামীকাল রবিবার তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতা কর্মী ও ভোটারদের সাথে মত বিনিময় করবেন বলে জানা যায়। গুলশান-বারিধারার মতো অভিজাত এলাকা নিয়ে গঠিত এই সিটিতে ক্লিন ইমেজের এমন দুজন লোকের মধ্যে মেয়র মনোনয়ন দিলে সুফল পাবে বলে ভাবছে আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে রংপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের পর প্রার্থী নির্বাচনে সতর্ক থাকতে চায় আওয়ামী লীগ। জাতীয় নির্বাচনের আগ মুহুর্তে ডিএনসিসি`র মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কোনো ঝুঁকি নিতেও রাজী নয় আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, "প্রার্থী মনোনয়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেত্রী শেখ হাসিনার হাতে। জনসংযোগ ভাল, গ্রহনযোগ্যতা আছে, আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে পারবে এমন লোককেই মনোনয়ন দিবে আওয়ামীলীগ।" তাই আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে আতিকুল ইসলাম ও আদম তমিজি হক দুজনই। তবে শেষ পর্যন্ত কে মনোনয়ন পাচ্ছেন তা জানতে হলে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুদিন।
এএ/টিকে