তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে সারজিস আলমের যে ম্যাসেজ
প্রকাশিত : ২০:৩২, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বিশেষ করে পঞ্চগড়ের তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে একটি মেসেজ স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, আমাদের নজর ধীরে ধীরে প্রতিটি সিস্টেমের দিকে যাবে। যেখানেই আমরা অন্যায়, সিন্ডিকেট আর চাঁদাবাজি দেখব তা উপড়ে ফেলব।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা কয়েক দিন আগে দেখেছি কোর্টের একটি নিয়োগ পরীক্ষার আগেই অনেকের নাকি টাকা হাসিল হয়ে গেছে। এর প্রেক্ষিতে নিয়োগটি বন্ধ করতে হয়েছে। এত বড় অভ্যুত্থানের পর, এত রক্তের পর যদি টাকা আর সুপারিশের খেলা চলতে থাকে তাহলে দুইটি জিনিস হতে পারে। এক, হয় আমরা এটা হতে দেব না, না হয় এগুলোকে বাধা দেওয়ার জন্য আমরা প্রয়োজনে আরও রক্ত দেব।
সারজিস আলম বলেন, পঞ্চগড়ের সরকারি যে অফিসগুলো রয়েছে, সেখানে যারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদেরকে পঞ্চগড়ের মানুষের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দিই, বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী ১০ টাকা হোক, ১০০ টাকা হোক কিংবা ১০০০ টাকার বিনিময়ে মানুষকে জিম্মি করে। অনেক অফিস তৈরি হয়েছে যেখানে টাকা ছাড়া কেউ কথা বলে না। এ ক্ষেত্রে স্পষ্ট কথা বলি, কোনো যৌক্তিক কাজে যেকোনো অফিসে যাবেন, যদি টাকা ছাড়া কাজ না হয় তাহলে স্পষ্ট অভিযোগ নিয়ে আমাদের কাছে আসবেন। অফিসের ওই লোক এরপর কীভাবে ওই চেয়ারে বসে থাকে তা আমরা দেখব। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে চোর-বাটপাররা ভয়ে চেয়ার ছেড়ে পালিয়ে যাবে, ঠিক যেভাবে তাদের জননী (শেখ হাসিনা) দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ হিসেবে, ব্যক্তি হিসেবে আমাদেরও ভালো হতে হবে। আমরা যদি ২০০, ৫০০, ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে যোগ্য লোককে ভোট না দিয়ে অযোগ্য লোককে দিই তাহলে আগামী ৫ বছর তিনি জুলুম করবেন। আমাদেরকে ব্যক্তিগত জায়গা থেকে ঠিক হতে হবে। আমরা পাঁচ বছরে একবার শুধু সুযোগ পাই ওই ক্ষমতার চেয়ারটাতে কে বসবে সেটা নির্ধারণের জন্য।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ যায়গা হচ্ছে তেঁতুলিয়া। আর গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর হচ্ছে চারদেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা। আমরা যখন খোঁজ নিয়ে দেখি ওই স্থলবন্দরের ইজারা দিয়ে যত কর্মকর্তা-কর্মচারী সেগুলো সব খুলনা বিভাগ থেকে আসা। স্থলবন্দর হওয়ার সময় যত লোকের এখানে কর্মসংস্থান হওয়ার কথা ছিল, সেটা না হয়ে কিছু মানুষ সিন্ডিকেট করে সকল মানুষকে জিম্মি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ যদি থাকি তাহলে স্থলবন্দর বলি, নিয়োগ বাণিজ্য বলি কোনোটাই আমরা হতে দেব না।’
জেলা প্রশাসক সাবেত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক মোকাদ্দেসুর রহমান সান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির ইকবাল হোসাইন, বিএনপি নেত্রী রাজিয়া সুলতানা, ২ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
এমবি
আরও পড়ুন