তাপস পালকে মেরে ফেলা হয়েছে : নন্দিনী
প্রকাশিত : ১১:৩৫, ৬ মার্চ ২০২০
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ের বান্দ্রার এক হাসপাতালে মারা গেছেন অভিনেতা ও ভারতের প্রাক্তন সাংসদ তাপস পাল। মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। এবার স্বামীর মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তাপসের স্ত্রী নন্দিনী পাল।
তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি ন্যায়বিচার চান।
নন্দিনী ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকে বলেন, ‘আমার স্বামীকে ওই হাসপাতাল মেরে ফেলেছে। আমি এর ন্যায়বিচার চাইতে মুম্বইয়ে এসেছি।’
তার দাবি, গত ১ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ তাপসকে তিনি বান্দ্রার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাপসের অসুস্থতার সম্পর্কে বলতে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তা শুনতে রাজি হননি। উল্টে বলেন, রোগীর ‘পাস্ট হিস্ট্রি’ শুনতে তিনি উৎসাহী নন। অসুস্থ তাপস পালকে দেখে ওই চিকিৎসক নন্দিনীকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কেন তাকে হাসপাতালে এনেছেন?’ এমনকি ৫০ হাজার টাকা জমা না করলে তাপসের চিকিৎসা শুরু করা হবে না বলেও হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়। কিন্তু মাঝরাতে নন্দিনীর কাছে অত টাকা না থাকায় মেয়ের বাড়িওয়ালার সাহায্যে টাকার বন্দোবস্ত করে তাপসকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়।
নন্দিনীর দাবি, ৭ ফেব্রুয়ারি তাপস পালের ভেন্টিলেশন খুলে দেওয়া হয়। তাপস তখন একেবারেই সুস্থ ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দিকে তাকিয়ে ও হাসল। বলল, বাপরে তুমি যা করলে! আমি বলেছিলাম, তুমি একদম ঠিক আছো।’
এর পর থেকেই সমস্যা শুরু হয় বলে অভিযোগ নন্দিনীর। তিনি জানান, ঠিকমতো খেতে দেওয়া হত না তাপস পালকে। নার্সরা ক্যাফেটেরিয়া থেকে খাবার এনে খাওয়াতে বলত। এ নিয়ে তার মেয়ের সঙ্গে এক দিন নার্সদের ঝামেলাও হয়।
তার আরও দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ফের অসুস্থ হয়ে যান তাপস পাল। এরপর ডায়ালিসিস শুরু হয়।
অভিনেতার স্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ দেখি তাপসকে এক দিন বেঁধে রেখেছে। কেন জানতে চাওয়ায় তারা বলেন, এখন শিফ্টিং চলছে। তাকে কারও নজরে রাখা সম্ভব নয়।’
নন্দিনী আরও অভিযোগ করেছেন, তাপস পালের প্রস্রাব স্বাভাবিক হওয়া সত্ত্বেও তাকে ক্যাথিটার পরিয়ে রাখা হয়।
এই পরিস্থিতিতেই তারা ঠিক করেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি তাপসকে নিয়ে কলকাতায় ফিরবেন। কিন্তু সে দিন রাতেই সব ওলটপালট হয়ে যায়। ওই দিন হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় তাপস পালের হিমোগ্লোবিন কমে ৩.৫ হয়ে গিয়েছে। অথচ ওই দিন সকালেই নন্দিনী দেখেছেন তাপসের হিমোগ্লোবিন ৯। আশ্চর্য রকম ভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রক্ত না দিয়ে অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এর পর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। পর পর। তখনও সিনিয়র কোনও ডাক্তার নেই। এক জন ট্রেনি আর অন্য এক ডাক্তার।
পুরো ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছেন নন্দিনী।
সূত্র : আনন্দবাজার
এসএ/