ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

দুর্লভ কিছু ছবিতে এক নজরে বাপ্পীদা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:১৪, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

উত্তম কুমারের কোলে বাপ্পী

উত্তম কুমারের কোলে বাপ্পী

বাপ্পী লাহিড়ীর সুর দেওয়া বিখ্যাত গানের সঙ্গে মিল ছিল আন্তর্জাতিক স্তরের হিট হওয়া একটি গানের। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুরকার। ২০০২ সালে মুক্তি পায় আমেরিকার রিদম অ্যান্ড ব্লুজ খ্যাত গায়িকা ট্রুথ হার্টসের অ্যালবাম ‘ট্রুথফুলি স্পিকিং’। সেই অ্যালবামে ‘অ্যাডিকটিভ’ বলে একটি গান ছিল। এদিকে এর আগে বাপ্পী লাহিড়ীর সুরে লতা গেয়েছিলেন জনপ্রিয় হিন্দি গান ‘থোড়া রেশম লাগতা হ্যায়’। সেই গানের সঙ্গে ‘অ্যাডিকটিভ’ গানটির মিল ছিল বলে অভিযোগ করেন বাপ্পী। 

এদিকে প্রায় ৬ লক্ষ কপি সিডি বিক্রি হয়ে গিয়েছিল ওই অ্যালবামের। যদিও আইনী সহায়তা নিয়ে জয়ী হন বাপ্পী। তার অভিযোগের ভিত্তিতে স্থগিতাদেশ বসে অ্যালবামটির বিক্রির উপর। 

বাপ্পী নিজ মুখেই বলেছিলেন, “এলভিস প্রেসলি সোনার চেন পরতেন। আমি সেটা খুবই পছন্দ করতাম। সেই সময় আমি ভাবতাম, যখন প্রতিষ্ঠিত হব তখন আমি নিজের একটা আলাদা ইমেজ তৈরি করব। এরপর যখন আমি সফল হই। সোনা কেনার আর্থিক ক্ষমতা অর্জন করি। তখন আমি একের পর এক গয়না কিনি।“ সোনা নাকি খুবই লাকি এই সঙ্গীত লেজেন্ডের জন্য। এটিও নাকি গয়না পরার আরেকটি কারণ। 

ইনস্টাগ্রামে সবশেষ নিজের একটা সাদা-কালো ছবি দিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন বাপ্পী। সেই পোস্টে সাদাকালো তরুণ বাপ্পীকে দেখে সেই পোস্টে প্রশংসা করেছিলেন তার ভক্তরা। সেই পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, ‘Old is always gold’…

বাপ্পী লাহিড়ী একাধিক শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তবে তিনি অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে মারা গেছেন। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হল ঘুম-সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের একটি ব্যাধি। এই রোগে ঘুমানোর সময় শ্বাস-প্রশ্বাস অনিয়মিত হয়ে যায়। অর্থাৎ শ্বাস কখনও শুরু হয়, কখনও আচমকা বন্ধ হয়ে আসে।

শ্রীদেবীর সঙ্গে বাপ্পী লহিড়ী

‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’তে সুর দিয়েছেন বাপ্পী। ২০২০ সালে তার শেষ গান বাগি- ৩ এর জন্য।
এ ছাড়া বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’সহ একাধিক ছবিতে সুর দিয়েছেন।
বাপ্পী ভারতীয় চলচ্চিত্র জগৎ থেকে ১৯৯০'র দশকে দূরে সরে যান। পরে প্রকাশ মেহরার 'দালাল' ছবিতে স্বল্প সময়ের জন্য ফিরে আসেন।

লতা, বাপ্পী, কিশোর কুমার; প্রয়াত তিনজনেই 

১৯৫৫ সালে মাত্র ৩ বছর বয়সে তবলা বাজানো শুরু করেন বাপ্পী। ১৯৭২ সালে  ১৯ বছর বয়সে দাদু নামক বাংলা চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ করেন। এরপর ১৯৭৩ সালে মুম্বাই চলে যান। মামার মতো বলিউডে কাজ করার ইচ্ছেই ছিল তার। হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম কাজ ‘নানহা শিকারি’। ওই ছবিতে গীতকারের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। তবে ১৯৭৫ সালে তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায় ‘জখমি’ ছবি দিয়ে। এই সিনেমায় গীতকারের পাশাপাশি প্লেব্যাকও করেন তিনি। 

অমিতাভের সঙ্গে বাপ্পী লাহিড়ী

১৯৮০-১৯৯০ সালের মধ্যে মধ্যে মিঠুন চক্রবর্তী এবং বাপ্পী একসাথে বেশ কিছু ভারতীয় চলচ্চিত্রে কাজ করেন। আর এখান থেকেই পেয়ে যান ‘ডিস্কো কিং’এর খেতাব। কিশোর কুমার, আশা ভোঁসলে থেকে ঊষা উত্থুপদের সাথে কাজ করেছেন। ১৯৮৫ সালে জিতে নেন প্রথম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। অমিতাভ বচ্চনের ‘শরাবি’ ছবির জন্য পেয়েছিলেন বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টর অ্যাওয়ার্ড। 

লতার সঙ্গে কিশোর বাপ্পী

২০০০-২০১৯ সালের মধ্যে ‘সি কোম্পানি’, ‘চান্দনি চক টু চায়না’, গুণ্ডে, হিম্মতওয়ালা, বদ্রিনাথ কি দুলহানিয়া, শুভ মঙ্গল জাদা সাবধান এর মতো ছবিতে সুর দিয়েছিলেন ও গান গেয়েছিলেন।

মামা কিশোর কুমারের সঙ্গে বাপ্পী লাহিড়ী

এছাড়া ২০১২ সালে  ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ ছবির বিখ্যাত গান ‘উ লা লা’ এর জন্য পেয়েছিলেন মির্চি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড। আর ২০১৮ সালে জিতে নেন লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফিল্মফেয়ারের তরফে। ২০২০ সালে সবশেষ ‘বাগি ৩’ ছবির ভাঙ্কাস গানে সুর দেন ও গান গান এই কিংবদন্তী।

বরাবরই ফ্যাশন সচেতন ছিলেন বাপ্পী

২০২২, ১৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ১১.৪৫ মিনিটে মুম্বাইয়ের জুহুর এক হাসপাতালে জীবনাবসান হয় বাপ্পী লাহিড়ীর। 


এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি