ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৮ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন কাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১৯, ১৭ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ১৭:০৯, ১৭ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ)। এই নতুন সেতুর মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে।

৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যানে নির্মিত ডাবল লেনের এ সেতু দিয়ে মাত্র সাড়ে তিন মিনিটেই যমুনা অতিক্রম করতে পারবে ট্রেন। তবে প্রাথমিকভাবে সিঙ্গেল লেন চালু থাকায় যাত্রীদের পুরো সুবিধা পেতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ডাবল লেনের রেললাইন চালু করা হবে, যা দেশের রেল যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

সেতুর উদ্বোধন ঘিরে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রেলপথ বিভাগ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম।

কর্মসূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটে যমুনা রেল সেতুর পূর্ব প্রান্ত ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে সিরাজগঞ্জ পশ্চিম প্রান্তের সয়দাবাদ রেলস্টেশন পর্যন্ত উদ্বোধনী ট্রেনে অতিথিরা যাত্রা করবেন। ১১টা ৪০ মিনিটে সয়দাবাদ রেল স্টেশনে সংবাদ সম্মেলনের পর দুপুর ১২টায় তারা ইব্রাহিমাবাদে ফিরে আসবেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন জানান, নবনির্মিত সেতুর ফলে ট্রেন পারাপারের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার তানভীরুল ইসলাম বলেন, "সেতুতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে রং করার প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেবে। ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ সেতুটি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে ঢাকার সঙ্গে আরও দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত করবে।"

ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শাহীন মিয়া জানান, সেতু দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। তবে উদ্বোধনের দিন থেকে প্রথম পর্যায়ে ৯০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলবে, ফলে যমুনা পার হতে মাত্র সাড়ে তিন মিনিট সময় লাগবে। এর আগে যমুনা সেতু দিয়ে ট্রেন পারাপারে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগত।

২০১৬ সালে প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯,৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরবর্তীতে সময়সীমা বাড়িয়ে ব্যয় বৃদ্ধি করে ১৬,৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। এর মধ্যে ২৭.৬০% অর্থায়ন দেশীয় এবং ৭২.৪০% অর্থায়ন করেছে জাপানের জাইকা।

১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু চালুর মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন পারাপারের ফলে এই সমস্যার সমাধানে সরকার আলাদা রেলসেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়।

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলসেতু দেশের প্রথম ডাবল ট্র্যাকের ডুয়েলগেজ সেতু।

নতুন সেতু চালুর ফলে দেশের রেল খাতের উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি