ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সৌরবিদ্যুতের গ্রিড

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৫৯, ৪ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ২১:১৩, ৪ এপ্রিল ২০১৮

স্ট্যানফোর্ড থেকে জার্মানি হয়ে ঢাকায় এসেছেন সেবাস্টিয়ান গ্রো সলশেয়ার নামের একটি স্টার্টআপ শুরু করার জন্য৷ উদ্দেশ্য, প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একক সোলার প্যানেলগুলোকে জুড়ে সৌরবিদ্যুতের গ্রিড সৃষ্টি করা৷

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে রাঙ্গাবালী দ্বীপ। এটি পটুয়াখালীতে অবস্থিত। এখানে বিদ্যুতের তারের চাহিদা খুব বেশি, কেননা সরকারি বিদ্যুৎ এখনও এখানে এসে পৌঁছায়নি৷ অপরদিকে বাজারের বহু স্থানীয় ব্যবসায়ী দোকানের মাথায় সোলার প্যানেল বসিয়েছেন৷ সলশেয়ার কোম্পানি সেই একক প্যানেলগুলোকে জুড়ে গোটা মোল্লার বাজার এলাকার জন্য একটি গ্রিড সৃষ্টি করতে চায়৷

সলশেয়ার-এর হেড অফ অপারেশনস আজিজা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের দেখতে হবে, কোথায় সোলার হোম সিস্টেমগুলির সংখ্যা বেশি৷ শুধু সেখানেই গ্রিড সৃষ্টি করা সম্ভব। প্রযুক্তিগত পরিস্থিতি জানার পরেই আমরা অগ্রণী হতে পারবো।’

একটি স্থানীয় গ্রিড থেকে ব্যাপারীদের অনেক সুবিধা হবে। তারা তাদের সোলার প্যানেলগুলো একসঙ্গে চালু করে বিদ্যুৎ কেনাবেচা করতে পারবেন, প্রতিবেশীর কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারবেন ও সেই বিদ্যুৎ দিয়ে আরও বেশি যন্ত্র চালাতে পারবেন। সলশেয়ার কোম্পানি সেজন্য একটি বিশেষ পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউটর বের করেছে, যা বিদ্যুৎ দেওয়া বা নেওয়ার বিশদ হিসেব রাখতে পারে৷ এই ডিস্ট্রিবিউটরগুলোর নাম রাখা হয়েছে সলবক্স।

জানা গেছে, মোল্লার বাজারের ১৫০ জন ব্যাপারী শিগগিরই একটি গ্রিডে একত্র হবেন। গোটা বাংলাদেশে এ ধরনের গ্রিডের ব্যাপক সুযোগ আছে। কেননা সারা বিশ্বে এদেশেই বেসরকারি মালিকানার একক সোলার প্ল্যান্টের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, সব মিলিয়ে ৪০ লাখের বেশি।

সলবক্স বাংলাদেশেই তৈরি করা হয়। স্টার্টআপটি এখনও মুনাফা করতে পারছে না বটে, কিন্তু তাদের এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক কিংবা জার্মান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড-এর মতো পৃষ্ঠপোষক আছে। সলবক্সের প্রধান এককালে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার ছিলেন৷

সলশেয়ার-এর সিইও সেবাস্টিয়ান গ্রো বলেন, “আমরা চিরকাল এখানে উৎপাদন করিনি। গোড়ায় আমরা স্ট্যানফোর্ড থেকেই আমাদের পণ্যটির বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করেছি। পরে সে কাজে বার্লিনে বাসা গেড়েছি। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। আমরা প্রথম সাফল্য পেয়েছি এখানে উৎপাদন শুরু করার পর। এখানে তৈরি করে তারপর দেখা, পণ্যটা কীভাবে বাস্তবে কাজে লাগানো হচ্ছে– সত্যিই দারুণ৷’

তাঁর কোম্পানির জন্য গ্রো জার্মানি থেকে বাস উঠিয়ে ঢাকায় এসেছেন। এদেশে ব্যবসা করার ধরণ-ধারণ শিখেছেন ও কাজ চালানোর মতো বাংলাও শিখেছেন।

গ্রো-র সমস্যা হল, সরকারি গ্রিডে বিদ্যুৎ দিয়ে কোনও দাম পাওয়া যায় না। আগামী বছরের শেষে নির্বাচন, কাজেই তার আগে এক্ষেত্রে কিছু বদলাবে বলেও মনে হয় না। ওদিকে সরকার আণবিক চুল্লি তৈরির সপক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে সচেষ্ট। অথচ গ্রো দেখছেন, বাংলাদেশে অবিশ্বাস্য রকমের ঘন জনবসতি। আবার দূরত্বগুলোও খুব বেশি নয়। ইলেক্ট্রোমোবিলিটি বা ব্যাটারি-চালিত গাড়ির জন্য এর চাইতে ভালো পরিস্থিতি হতে পারে না।

পরিবহণের ক্ষেত্রে সারা দেশে ইতিমধ্যেই প্রায় আট লাখ ইলেক্ট্রো রিকশা চলেছে, যেগুলো চার্জ করার কাজে সলশেয়ার সংশ্লিষ্ট হতে চায়। সলশেয়ার পরীক্ষা করে দেখছে, স্থানীয় সৌরশক্তির গ্রিড থেকে এই রিকশাগুলির ব্যাটারি রি-চার্জ করা যায় কি-না। গ্রো বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হল, গ্রামগুলোর বিকাশ ঘটবে। বর্তমানে ওরা সৌরশক্তি থেকে পাওয়া বিদ্যুতের আদান প্রদান করছেন। ফলে বিদ্যুতের ব্যবহার আরও কার্যকর হচ্ছে। কিন্তু গ্রামের আমদানি বাড়ানোর জন্য বাইরে থেকে টাকা আসা প্রয়োজন। রিকশা চালকরা যদি ব্যাটারি চার্জ করার জন্য বাইরে থেকে গ্রামে আসেন, তাহলে উন্নয়নের আরও একটা রাস্তা খুলে যাবে।’

সূত্র: ডয়চে ভেলে

একে//টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি