নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কমনরুম না থাকায় ভোগান্তিতে নারী শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত : ২৩:৩১, ৮ এপ্রিল ২০২৩
প্রতিষ্ঠার পর প্রায় ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো কমনরুম সুবিধা চালু করতে পারেনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদগুলোর কোনোটিই নেই কমনরুম সুবিধার আওতায়। এতে, বাড়ি কিংবা ময়মনসিংহ শহর থেকে এসে ক্লাস করা নারী শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে নানা ধরনের ভোগান্তি। দীর্ঘ ক্লাস বিরতিতে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন না ব্যাক্তিগত সময় কাটানোর সুযোগ।
এছাড়াও নেই নামাজ পড়ার জন্য নির্ধারিত কোনো স্থান বা বেবি ফিডিং কর্ণার। ফলে বিবাহিত শিক্ষার্থীরা তাদের বাচ্চাদের স্তন্যপানে সম্মুখীন হচ্ছেন নানা জটিলতার।
নাম প্রাকাশে অনিচ্ছুক নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘক্ষণ ক্লাস,পরীক্ষা কিংবা বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মকান্ডের জন্য ছেলে শিক্ষার্থীদের মতো মেয়েদেরও অবস্থান করতে হয়। কিন্তু অধিকাংশ ডিপার্টমেন্টগুলোতে মেয়েদের জন্য নেই কোনো ওয়াশরুমের সুব্যবস্থা কিংবা নামাজ আদায়ের জন্য নেই কোনো নামাজকক্ষ। মাসিকের মতো সময়গুলো কিংবা ইমার্জেন্সি কোনো ইস্যুতে হলগুলোতে এই সুবিধাগুলো থাকা সত্ত্বেও ডিপার্টমেন্ট ক্লাস চলাকালীন কিংবা স্বল্প সময়ের ব্রেকের মধ্যে হলে আসা যাওয়া করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
কমনরুম শুধুই নিরবচ্ছিন্ন সময় কাটানোর জায়গা নয় বরং এখানে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশেরও কেন্দ্র।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমি মনে করি কমনরুম হলো শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসহায়ক প্রয়োজনীয় একটি উপকরণের মতো। তবে ক্ষেত্র বিশেষে, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য কমফোর্ট জোনও এটি। কমনরুমে নিয়মিত পত্রিকা সরবরাহ, বুক কর্ণার, খেলাধুলার সরঞ্জামাদি, নামাজের স্থান ও বেবি ফিডিং কর্ণার ইত্যাদি নারী শিক্ষার্থীদের সুস্থ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, নিজেদের জ্ঞানচর্চা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম গতিশীল রাখতেও কমনরুম সুবিধা চালু করা প্রয়োজন।
এবিষয়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ নুসরাত শারমিন তানিয়া বলেন, কমনরুম নিশ্চয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটা শুধুমাত্র শিক্ষার্থী নয় বরং শিক্ষিকাদের জন্যও প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি অনুষদে কমপক্ষে একটি করে কমনরুম সুবিধা দেওয়া উচিত। কেননা, যারা দূর থেকে এসে ক্লাস করেন তাদের বিভিন্ন ব্যাক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যা কমন রুম থাকলে খুব সহজেই মেটানো সম্ভব।
কমনরুম সুবিধা না থাকার কারণ ও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপের ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস শিলা বলেন, আমাদের পুরাতন ভবনগুলোতে কোনো কমনরুমের ডিজাইন নেই। আমরা এই বিষয়ে অবগত আছি। এবং একজন নারী শিক্ষক হিসেবে এটির প্রয়োজনীয়তা আমিও অনুভব করি। আমরা যতদ্রুত সম্ভব এটি নিয়ে কাজ করবো৷ স্যারদের সাথে ইতোমধ্যে আমরা কথা বলেছি। আশা করি খুব দ্রুতই একটি ভালো সিদ্ধান্ত আসবে।
কেআই//
আরও পড়ুন