ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

নতুন বছরে অর্থনৈতিক স্বস্তিতে দেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০২, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮

অর্থনৈতিক স্বস্তি নিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন একটি বছর, ২০১৯ সাল। বছরের শুরুতে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বেশির ভাগ সূচক স্থিতিশীল। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের নাগালের মধ্যে। রপ্তানি আয়ে সুবাতাস বইছে। মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপির প্রবৃদ্ধি আশা জাগানিয়া। নির্বাচনের বছর হলেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হার আগের বছরের তুলনায় উন্নতির দিকে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ ছাড়ের হারও বেশ ভালো।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, চাল, ডাল, আটা, পেঁয়াজ, চিনি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতির দিকে। সে ধারা অব্যাহত আছে এখনো। নভেম্বরে দেশের মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। ওই মাসে দেশে গড় মূল্যস্ফীতির হার কমে ৫.৩৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আগের মাস অক্টোবরে এই হার ছিল ৫.৪০ শতাংশ।

দেশের রপ্তানিকারকরা বলছেন, বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতির দেশ চীনে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। পণ্য উৎপাদনে কম খরচের কারণে বাংলাদেশের ওপর বিদেশি ক্রেতারা আস্থা রাখছে। এ ছাড়া গত এক বছর রাজনীতির মাঠও ছিল স্থিতিশীল। পোশাক খাতেও কর্মপরিবেশ উন্নতি হয়েছে। এসব কারণে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ভালো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন মনে করেন, এ বছর পুরোটা সময় দেশের রাজনীতি স্থিতিশীলতা ছিল। কোনো অস্থিরতা ছিল না। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যও স্বাভাবিক রয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ তথ্য বলছে, উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থ ছাড়েও সুবাতাস বইছে। অর্থ ছাড়ের হার বাড়তির দিকে। নির্বাচনের বছর সাধারণত উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থ ছাড়ে কিছুটা মন্থর গতি দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর এর ব্যতিক্রম। অর্থবছরের পাঁচ মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে নভেম্বর এই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ছাড় হয়েছে ১৮৬ কোটি ডলার। আগের বছর একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছিল ১৭১ কোটি ডলার। সে হিসেবে ১৫ কোটি ডলার বেশি পাওয়া গেছে। প্রতিশ্রুত টাকা পাওয়ায় সরকারের এডিপি বাস্তবায়নেও গতি বেড়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সবশেষ তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ৩৬ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ। টাকার অঙ্কে আগের বছরের তুলনায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বেশি খরচ হয়েছে। গত বছর পাঁচ মাসে এডিপিতে ব্যয় হয়েছিল ৩২ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনের বছর হলেও সারা দেশে কোনো আন্দোলন সংগ্রাম ছিল না। এই কারণে মাঠপর্যায়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দুজনেই বলেছেন, নির্বাচনের বছর রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল থাকায় এ বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি অর্জিত হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে ৮.২৫ শতাংশ অর্জিত হবে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর ৪৬ দিন করে হরতাল হয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনী বছরগুলোতে হরতাল হয়েছে বেশি। নির্বাচনের বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধিও কমে। কিন্তু এ বছর এর ব্যতিক্রম।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি