নাটোরে নারী হত্যার দায়ে স্বামী-স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
প্রকাশিত : ১৫:২৫, ২১ নভেম্বর ২০২৩
নাটোরে এক অজ্ঞাত নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে স্বামী-স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১ লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সদর উপজেলার উলুপুর গ্রামের জব্বার হোসেনের ছেলে মোঃ বেলাল হোসেন (৩৭) ও তার স্ত্রী বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলাউদ্দিন প্রামানিকের মেয়ে মোছাঃ জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিন (২৭)। দণ্ডপ্রাপ্ত মোঃ বেলাল হোসেন পলাতক রয়েছেন।
মামলার বাদি নাটোর সদর থানার এসআই নুরুজ্জামানের দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি সকালে নাটোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের জনৈজ নুর মোহম্মদ মুন্সির আম ও কলাবাগানের মধ্যে ৩৫ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক নারীর গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মহিলাদের ব্যবহৃত একটি হাত ব্যাগ উদ্ধার করে।
পরে ওই ব্যাগের মধ্যে থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত মোছাঃ জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিনের পাসপোর্ট সাইজের সাদাকালো একটি ফটো ও টেলিফোন গাইড বই পাওয়া যায়। ওই বইয়ে জোসনা খাতুনের নাম, বাবার নাম ও ঠিকানাসহ তার ভাই খোরশেদ আলমের নাম ও তেবাড়িয়া দাদাপুর রাস্তা লেখা ছিল। এছাড়া বেশ কয়েকজনের ফোন নম্বর লেখা ছিল।
এব্যাপারে নাটোর সদর থানার তৎকালীন এসআই নুরুজ্জামান বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই মামলা দায়ের পর ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া পাসপোর্ট সাইজের সাদাকালে ফটো ও নাম ঠিকানার সুত্র ধরে পুলিশ মোছাঃ জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিনকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে তার স্বামী মোঃ বেলাল হোসেন জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
দীর্ঘ এক যুগ পর সোমবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় জেসমিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে বেলাল হোসেন হাজির ছিলেননা।
আদালতের স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান জানান, অজ্ঞাত নারীকে ধর্ষনের পর হত্যার দায়ে বিজ্ঞ বিচারক মামলার দুই আসামি স্বামী-স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এছাড়া উভয়কেই ১ লাখা টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। জরিমানার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করার আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বেলাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন।
এএইচ
আরও পড়ুন