নারী থেকে পুরুষ, আবারও নারী হতে চান তিনি!
প্রকাশিত : ১৬:৫৪, ২৯ জানুয়ারি ২০২২
বাজার থেকে চকলেট কিনে আনলেন, কিন্তু পছন্দ হল না। তাই আবারও বদলে আনলেন। কিন্তু এবার মনে হলো আগেরটাই ভালো ছিলো। ঠিক এমনই এক সমস্যায় পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ২৬ বছর বয়সি ‘ইশা ইসমাইল’ নামের এক রূপান্তরকামী। নিজের শরীরকে বারবার বদলাতে চাইছেন তিনি। কিন্তু রূপান্তরের কামনা মিটেও যেন মিটছে না তার।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান রাজ্যের ডেট্রয়েটের বাসিন্দা ইশা ইসমাইল জন্মেছিলেন নারী হিসেবেই। যদিও পরে নিজের শরীর এবং নারীত্বকে তিনি অপছন্দ করতে শুরু করেন। নিজেকে রূপান্তরকামী বলে ঘোষণা করেন ১৯ বছর বয়সেই। তখন থেকেই শুরু হয় তার পুরুষ হওয়ার প্রক্রিয়া।
প্রথমেই অস্ত্রোপচার করে নিজের শরীর থেকে স্তনদু’টি বাদ দেন ইশা। তিনি জানান, নিজেকে এক জন সম্পূর্ণ পুরুষ হিসেবে দেখতে তিনি এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে এ ব্যাপারে একটুও দেরি করতে চাননি। পাশাপাশি, হহরমোনের চিকিৎসাও শুরু করেন। পুরুষদেহে যে হরমোনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি, সেই টেস্টোস্টেরন হরমোন নিয়মিত ভাবে নিতে শুরু করেন তিনি।
১১ মাসের মধ্যেই তার শরীরে পুরুষ হওয়ার লক্ষণ প্রকট হতে শুরু করে। ইশা জানিয়েছেন, তার শারীরিক পরিবর্তনের এই মুহূর্তগুলি তখন তিলে তিলে উপভোগ করেছিলেন তিনি। প্রতি মুহূর্তের রেকর্ডও রেখেছেন ছবিতে, ভিডিওতে।
টানা ছয় বছর হরমোন চিকিৎসার পর পুরদস্তুর পুরুষ হয়ে ওঠেন তিনি। নিজের ছবি দিয়ে ইশা লিখেছেন, জন্মগত পুরুষের সঙ্গে আমার তফাৎ করা যেত না তখন। সঅথচ এই ইশাই ২০১৫ সালের আগে তার বয়সি আর পাঁচটি মেয়ের মতোই মেকআপ প্রেমী, সাজগোজ প্রেমী তরুণী ছিলেন। এমনকি এক জন প্রেমিকও ছিল তার।
পুরনো জীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে ইশা লিখেছিলেন, ‘‘ছোটবেলায় আমার একটু ছেলে ছেলে ভাব থাকলেও পরের দিকে আমি কিন্তু এক জন সাধারণ তরুণীই ছিলাম।’’
পুরুষ হয়েও সুখী হতে পারছিলেন না ইশা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার আচমকাই মনে হয়, তিনি পুরুষ জীবন আর চান না। এই না চাওয়া এতটাই তীব্র হতে শুরু করে যে, তা থেকে জন্ম নেয় হতাশা।
এই হতাশাবোধ থেকেই আবারও শরীর বদলানোর সিদ্ধান্ত। টেস্টোস্টেরন হরমোন নেওয়া বন্ধ করে দেন ইশা। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন আবার ফিরবেন পুরনো শরীরে। জন্মসূত্রে পাওয়া নারীদেহই প্রয়োজন তার।
আপাতত সেই প্রক্রিয়াই শুরু করেছেন ইশা। ছয় বছর ধরে পুরুষ হয়ে এ বার আবার নারীত্বে ফিরছেন তিনি। হরমোনের চিকিৎসা বন্ধ করার কয়েক মাসের মধ্যেই নারীত্ব অনুভবও করছেন বলে জানিয়েছেন এই রূপান্তরকামী।
এখন ইশা চান, তার মতো যারা নিজেদের পরিচয় নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত, তাদের তিনি সাহায্য করবেন। দিশা দেখাবেন ঠিক পথটি চিনে নিতে। তবে একজন দ্বিধাগ্রস্ত রূপান্তরকামী হিসেবে ইশার পরামর্শ সত্যিই তারা নেবেন কি না বা নিলেও ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে কীনা সেটাই প্রশ্ন!
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
এমএম/এসবি