ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

নাসরুল্লাহ হত্যায় বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:০৮, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

বৈরুতে ইসরাইলি বিমান হামলায় লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ায় সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ব নেতারা।

প্যারিস থেকে এএফপি জানায়, ইরান-সমর্থিত এই সংগঠনের প্রধানের হত্যা মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তীব্র করেছে।

ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ ইসরাইলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে নসরাল্লাহর মৃত্যু ‘তাদের ধ্বংস ডেকে আনবে’,। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি দেশে পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করেছেন।

বাইডেন বলেছিলেন যে নাসরুল্লাহর মৃত্যু ছিল ‘হাজার হাজার আমেরিকান, ইসরাইলি ও লেবাননের বেসামরিক নাগরিকসহ তার বহু শিকারের জন্য ‘ন্যায়বিচারের একটি পদক্ষেপ’।

ওয়াশিংটন ‘ইরান সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য ইসরাইলের অধিকারকে সমর্থন করে এবং বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, এই অঞ্চলে বাহিনীর প্রতিরক্ষা দৃষ্টিভঙ্গি' 'আরো উন্নত করা হবে'।

ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেছেন যে নসরাল্লাহ 'একজন সন্ত্রাসী যার হাতে আমেরিকান রক্ত লেগেছে' এবং তিনি 'ইরান ও ইরান সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যেমন হিজবুল্লাহ, হামাস ও হুথিদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য ইসরাইলের অধিকারকে সর্বদা সমর্থন করবেন।'

প্রতিনিধি পরিষদের নেতৃস্থানীয় রিপাবলিকানরাও 'গ্রহের সবচেয়ে নৃশংস সন্ত্রাসীদের একজন' দ্বারা 'রক্তপাত, নিপীড়ন ও সন্ত্রাসের রাজত্বের' অবসানকে স্বাগত জানিয়েছেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, 'আমরা ইসরাইলের সর্বশেষ রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই' এবং লেবাননে 'অবিলম্বে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করার' আহ্বান জানিয়েছি।

মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে যোগ করেছে যে এই হত্যাকাণ্ডের ফলে এই অঞ্চলে যে 'দুঃখজনক' পরিণতি হতে পারে তার জন্য ইসরাইল 'সম্পূর্ণ দায় বহন করবে'।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক এআরডি টেলিভিশনকে বলেছেন যে এই হত্যাকাণ্ড 'সমগ্র লেবাননের জন্য অস্থিতিশীলতার হুমকি', যা 'ইসরাইলের নিরাপত্তার স্বার্থে কোনোভাবেই নয়'।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নাসরুল্লাহকে 'একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতা হিসাবে বর্ণনা করেছেন যেটি নিরপরাধ বেসামরিকদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে, যা সমগ্র অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক দুর্ভোগের কারণ'।

তবে তিনি সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আরো কিছু করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, 'আমরা এই সংকটময় সময়ে শান্ত ও সংযমের আহ্বান জানাই।'

ব্রিটেন পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, তিনি লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, 'আমরা রক্তপাতের অবসান ঘটাতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছি। লেবানন ও ইসরাইলি জনগণের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় কূটনৈতিক সমাধান।'

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-নোয়েল ব্যারোট ইসরাইলকে 'অবিলম্বে লেবাননে তাদের হামলা বন্ধ করার' দাবি জানিয়ে বলেছেন, তার দেশে যে কোনো স্থল অভিযানের বিরোধিতা করছে।
ফ্রান্সও 'অন্যান্য কুশিলব, বিশেষ করে হিজবুল্লাহ ও  ইরানকে, অতিরিক্ত অস্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।'

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, 'গত ২৪ ঘণ্টায় বৈরুতে নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাওয়া ঘটনা নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন'।

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস, যার নজিরবিহীন ৭ অক্টোবর ইসরাইল আক্রমণ গাজায় বিধ্বংসী যুদ্ধের সূত্রপাত করেছিল যা হিজবুল্লাহসহ ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে আকৃষ্ট করেছে। তারা নাসরুল্লাহর হত্যাকে "একটি কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী কাজ" বলে অভিহিত করেছে৷

হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, "আমরা এই বর্বর ইহুদিবাদী আগ্রাসন এবং আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানাই।"

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস লেবাননের কাছে নাসরুল্লাহ এবং বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর জন্য তার "গভীর সমবেদনা" জ্ঞাপন করেছেন, যারা "নিষ্ঠুর ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে পড়েছিল', তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনি বিদ্রোহীরা, যারা হামাসের সাথে সংহতি জানিয়ে লোহিত সাগরে জাহাজে গুলি চালাচ্ছে, তারা এক বিবৃতিতে বলেছে যে নাসরুল্লাহর হত্যা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'ত্যাগের শিখা, উৎসাহের উত্তাপ, সংকল্পের শক্তি" বাড়িয়ে তুলবে, তাদের নেতা নসরাল্লাহর মৃত্যুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে "বৃথা হবে না"।

তুরস্ক প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান নাসরুল্লাহকে সরাসরি উল্লেখ না করেই লেবানন একটি ‘গণহত্যা’র শিকার হচ্ছে বলে এক্স-এ বলেছেন।

কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডিয়াজ-ক্যানেল এক্স-এর একটি পোস্টে এই হত্যাকাণ্ডকে 'কাপুরুষোচিত টার্গেট হত্যা' বলে অভিহিত করেছেন যা 'আঞ্চলিক ও বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে, যার জন্য ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার সম্পূর্ণ দায় বহন করে।'

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই এক্স-এ এই হত্যাকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট করা তার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ডেভিড এপস্টেইনের একটি বার্তা পুনরায় পোস্ট করেছেন। এতে বলা হয়, ‘ইসরাইল সমসাময়িক সর্বশ্রেষ্ঠ খুনিদের একজনকে নির্মূল করেছে। কাপুরুষোচিত হামলার জন্য অন্যদের মধ্যে সেও দায়ী,’ এতে আরো বলা হয়, ‘আজ পৃথিবী একটু স্বাধীন’।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ জাতিসংঘে বলেছেন, ‘এই উত্তেজনা পুরো অঞ্চলের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে’। ‘আমরা এই অঞ্চলে একটি সত্যিকারের যুদ্ধ এড়াতে সকল পক্ষকে প্রজ্ঞা ও সংযম দেখানোর আহ্বান জানাই।’

ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো নাসরুল্লাহ ও লেবাননের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা এটাকে ন্যায্যতা দিতে চায়, কিন্তু তাকে হত্যা করার জন্য, তারা বিল্ডিং, হাউজিং এস্টেটে হামলা করেছে এবং শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। এর জন্য একটি শব্দ আছে: অপরাধ।’

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি