পহলে বৈশাখের খাবারদাবার
প্রকাশিত : ১৭:২০, ১৩ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ২০:৪০, ১৩ এপ্রিল ২০১৯
পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর ঐতিহ্যবাহী উৎসব গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই দিনে প্রত্যেক বাঙ্গালীর বাড়ীতেই কম বেশি মজাদার এবং রকমারী খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
যেমন:পান্তাভাত, ইলিশ ভাজা ,বিভিন্ন ধরনের ভর্তা, শুঁটকি মাছের রকমারী সব রেসিপি, এছাড়াও মিষ্টি জাতীয় বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন: মিষ্টি দ্ই, পায়েস-ফিরনি ,রকমারী মিষ্টি ইত্যাদি।
আপনার প্রিয় উৎসবটি যেন আপনি ঐতিহ্যবাহী সেই সাথে প্রিয় খাদ্য দিয়েই উপভোগ করতে পারেন সেই সাথে সুস্থ থাকেন এটিই আমাদের প্রত্যাশা।
◾️▪️উৎসবের দিনটি যেন শুরু হয় পছন্দের খাবার দিয়েই শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে খাবারটি যেন ব্যালান্স করে গ্রহণ করা হয় এবং অতিরিক্ত গ্রহণ করা পরিহার করতে করা জরুরি।
বৈশাখের সকালের খাবারটি আমাদের শুরু হয় পান্তা ইলিশ দিয়ে সেই সাথে আলু ভর্তা দিয়ে। কিন্ত ভাত এবং আলু দুটিতেই শর্করার পরিমান অনেক বেশি থাকে সেক্ষেত্রে পরিমিত পান্তা ভাত সাথে আলু ভর্তাকে একটু কম পরিমানে নিয়ে বা এড়িয়ে অন্য সবজির ভর্তা সেই সাথে এক টুকরো ইলিশ মাছ। তবে ইলিশ মাছটি যদি সর্ষে দিয়ে ভাপা ইলিশ বা ইলিশ ঝোল বা হাল্কা স্যালো ফ্রাই বা সবজি দিয়ে ইলিশ রান্না করা হয়।তবে তা হবে স্বাস্থ্যসম্মাত।এর সাথে কিছুটা সালাদ।বৈশাখের সকালে খাদ্য তালিকায় এমন খাবার খাকলে প্রিয় খাবারটিও স্বাদ নেওয়া হবে এবং অতিরিক্ত ক্যালরিও গ্রহণ থেকেও বিরত থাকা যাবে।
◾️▪️সেই দিনটি বেশির ভাগ বাঙ্গালী উপভোগ করার জন্য প্রখর রোদ থাকার পরেও বাহিরে ঘুরতে যান এবং বেলা ১১ থেকে ১২ টার দিকে ক্লান্ত হয়ে পরেন ওই মুহূর্তে জাঙ্ক ফুড বা ডুবো তেলে ভাজা নাস্তা এড়িয়ে এক গ্লাস ডাবের পানি বা লেবুর সরবত বা টকদই এর লাচ্ছি আপনাকে দিতে পারে স্বস্থি সেই সাথে আপনাকে রাখবে এনার্জিটিক।
◾️▪️দুপুরে এইদিনটিতে সাধারনত উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা হয় যেমন: খিচুরী,গরুর মাংস ভুনা,ডুবো তেলে ভাজা মুচমুচে মাছ ভাজা ইত্যাদি। এসব খাবারে ক্যালরি অনেক বেশি থাকে এজন্য কম তেল মসলা ব্যবহার করে এবং কিছুটা বিভিন্ন রং এর সবজি ব্যবহার করে খিচুরী রান্না করা হয় তবে তা হবে স্বাস্হ্যসম্মত এবং অবশ্যই তা পরিমিত পরিমানে খেতে হবে।
গরুর মাংস বা যেকোন মাংস/মাছ যদি টকদই ও বিভিন্ন মসলা দিয়ে ম্যারিনেট করে রান্না করা যায় তবে তেলের ব্যবহার কমে আসে এবং খাবারে নতুনত্ব আনতে মাছ/মাংস স্টীম বা ভাপে দিয়েও রান্না করা যেতে পারে যা খুবই স্বাস্থ্যকর। তখন ২ টুকরো বা ৮০ গ্রাম মাছ/মাংস খাওয়া যাবে। সেই সাথে থাকতে পারে কম তেল মসলা ব্যবহার করে বানানো বিভিন্ন ধরনের ভর্তা এবং খাবারকে হজমে সাহায্য করার জন্য থাকবে সালাদ।
◾️▪️এইদিনটিতে বাড়ীতে থাকে নানা ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার কিন্তু এই খাবার গুলো খেতে হবে একটু ব্যালান্স করে যেমন:মিষ্টি দই বা পায়েস বা ফিরনি এই ধরনের ভারী খাবার গুলো হাফ কাপ খাওয়া যেতে পারে কিন্ত এরপর সন্ধ্যায় যদি ১৫ মিনিট হাঁটা যায় তবে অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন হয়ে যাবে।
◾️▪️সারাদিনে ভারী ও মজাদার খাবারের পর রাতের খাবারটি হবে একদম হাল্কা। দুইটি রুটি অথবা ১ কাপ ভাত ,কিছুটা সবজি এবং ঘুমানোর আগে ১গ্লাস দুধ গ্রহণের মাধ্যমে শেষ করতে পারেন আপনার বিশেষ দিনের খাবার। সেই সাথে সারাদিনে অবশ্যই গ্রহণ করুন ৮-১০ গ্লাস পানি। এতে শরীর ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি পাবে।
খাবার বাদ দিয়ে না বরং খাবারকে সাথে নিয়েই উপভোগ করুন আপনার বৈশাখের দিনটি কিন্তু সেই খাবারটি হবে অবশ্যই পরিমানমত। ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন।
লেখক : পুষ্টিবিদ,
নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হসপাতাল।
টিআর/