ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩২, ১২ নভেম্বর ২০২৩ | আপডেট: ০৮:৪৭, ১২ নভেম্বর ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন ভঙ্গের ম্যাচ জিতে ২০২৫ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। লিগ পর্বে নিজেদের নবম ও শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড ৯৩ রানে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। এ ম্যাচ হেরে যাওয়া এবং রান রেটের সমীকরণ মেলাতে না পারায় সেমিতে উঠতে পারেনি বাবর আজমের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান।

এই জয়ে ৯ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তমস্থানে আছে ইংলিশরা। এতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত হলো ইংল্যান্ডের। বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ আটের মধ্যেই থাকলেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ পাবে দলগুলো। এখন পর্যন্ত সাতটি দল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করেছে। 

তবে ৯ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশের ভাগ্য এখনও ঝুলে আছে। আজ ভারতের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডস কোন পয়েন্ট না পেলে অষ্টম ও শেষ দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার টিকিট পাবে বাংলাদেশ। ৮ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট আছে ডাচদের।

তিন ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৩৭ রান করে ইংল্যান্ড। বেন স্টোকস ৮৪, জো রুট ৬০ ও জনি বেয়ারস্টো ৫৯ রান করেন। জবাবে ৩৯ বল বাকী থাকতে ২৪৪ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চমস্থানে থেকে এবারের বিশ্বকাপ শেষ করলো বাবর-রিজওয়ানরা।  

কোলকাতায় টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে ইংল্যান্ড। দলকে ৮১ বলে ৮২ রানের জুটি এনে দেন ইংলিশ দুই ওপেনার ডেভিড মালান ও বেয়ারস্টো। জুটিতে ৩১ রান অবদান রেখে মালান ফিরলেও ওয়ানডেতে ১৭তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন বেয়ারস্টো। হাফ-সেঞ্চুরির পর ৫৯ রানে আউট হন ৬১ বল খেলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কা হাকানো বেয়ারস্টো।

দলীয় ১০৮ রানে বেয়ারস্টো ফেরার পর পাকিস্তানের বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন রুট ও স্টোকস। তৃতীয় উইকেটে ১৩১ বলে ১৩২ রানের জুটিতে দলের বড় স্কোরের ভিত গড়েন তারা। জুটিতে রুট ৩৯তম ও স্টোকস ২৪তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পক্ষে ৫০এর বেশি রানের ইনিংসে গ্রাহাম গুচের রেকর্ডে ভাগ বসালেন রুট। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৯ বার ৫০এর বেশি রানের ইনিংস এখন গুচ ও রুটের। 

৪১তম ওভারে দলীয় ২৪০ রানে স্টোকসকে থামিয়ে পাকিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৬ বলে ৮৪ রান করেন আগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা স্টোকস।  

স্টোকসের পর রুটকেও শিকার করেন আফ্রিদি। ৪টি চারে ৭২ বলে ৬০ রান করেন রুট। এই ইনিংস খেলার পথে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ১হাজার রান পূর্ণ করেছেন তিনি।

২৫৭ রানের মধ্যে স্টোকস-রুটকে ফিরিয়ে রানের লাগাম টেনে ধরার পথ দেখান আফ্রিদি। তারপরও অধিনায়ক জশ বাটলার-হ্যারি ব্রুক ও ডেভিড উইলির ছোট-ছোট ঝড়ো ইনিংসের উপর ভর করে সাড়ে ৩শর কাছাকাছি পৌঁছে যায় ইংল্যান্ডের রান। বাটলার ১৮ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রান করেন। ১৭ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩০ রান করেন ব্রুক। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় মাত্র ৫ বলে ১৫ রান করেন উইলি। শেষ পর্যন্ত  ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৩৭ রানের বড় সংগ্রহ পায় ইংলিশরা।

বিশ্বকাপে পাকিস্তনের বিপক্ষে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান ইংলিশদের। কোলকাতার এই ভেন্যুতে কোন দলের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান।

পাকিস্তানের হারিস রউফ ৬৪ রানে ৩টি, মোহাম্মদ ওয়াসিম ও আফ্রিদি ২টি করে উইকেট নেন। এই ইনিংসের মাধ্যমে পাকিস্তনের হয়ে বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ দ্বিতীয় উইকেট শিকারীর তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে থাকা ওয়াসিম আকরামের (১৮ উইকেট) রেকর্ড স্পর্শ করেন আফ্রিদি। এবারের আসরে বল হাতে এ ম্যাচ পর্যন্ত ৫৩৩ রান দিয়েছেন রউফ। বিশ্বকাপের এক আসরে কোন বোলারের সবচেয়ে বেশি রান দেয়ার রেকর্ড এটি।

৩৩৮ রানের বড় টার্গেটে খেলতে নামা পাকিস্তানের দুই ওপেনার ফখর জামান ও আব্দুল্লাহ শফিককে দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান ইংল্যান্ডের পেসার উইলি। রানের খাতাই খুলতে পারেনি শফিক। ১ রান করে আউট হন  আগের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অনবদ্য ১২৬ রান করা ফখর।

১০ রানে ২ উইকেট পতনে তৃতীয় ওভারেই চাপে পড়ে পাকিস্তান। দলকে লড়াইয়ে ফেরাতে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। হাফ-সেঞ্চুরির জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হন তারা। পেসার গাস অ্যাটকিনসনের শিকার হন ৩৮ রান করা বাবর।

চতুর্থ উইকেটে সৌদ শাকিলকে নিয়ে দলের রান ১শতে পৌঁছে দিয়ে থামেন রিজওয়ান। ৩৬ রান করে মঈনের বলে বোল্ড হন রিজওয়ান। শাকিলকে ২৯ রানে থামিয়ে পাকিস্তানকে লড়াই থেকে ছিটকে দেন স্পিনার আদিল রশিদ।

এরপর ইফতিখার আহমেদ ৩ ও শাদাব খান ৪ রানে ফিরলে ১৫০ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু সেটি হতে দেননি সালমান ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটররা।

সালমান ৫১ ও আফ্রিদি ২৫ রানে আউট হলে দলীয় ১৯১ রানে ৯ উইকেট হারায় পাকিস্তান। শেষ উইকেটে ৩৫ বলে ৫৩ রান তুলে দলের রান ২শ’ পার করেন ওয়াসিম ও রউফ। ৩৯ বল বাকী থাকতে ২৪৪ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। শেষ ব্যাটার রউফ ৩৫ ও ওয়াসিম অপরাজিত ১৬ রান করেন। 

ইংল্যান্ডের উইলি ৩টি, রশিদ-অ্যাটকিনসন ও মঈন ২টি করে উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা ডেভিড উইলি (ইংল্যান্ড)।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি