ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

পুটখালী সীমান্তে গণধর্ষণের ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত : ১৯:০১, ১১ মার্চ ২০১৯

যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে গত শনিবার (৯ মার্চ) দুই তরুণীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিত তরুণী রিয়া খাতুন বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। সোমবার বেনাপোল পোর্ট থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়।

এর আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে পুটখালী সীমান্ত এলাকা থেকে এলাকাবাসী সহযোগিতায় পুলিশ তাদের আটক করেছে।

আটক ধর্ষকরা হলো, বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামের আলমের ছেলে সোহেল (৩০),আজগারের ছেলে আরিফ (২৯), আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল্লা (২৭), মোর্শেদের ছেলে শিমুল (৩৫), আয়ুব বিশ্বাসের ছেলে প্লাবন (২৮), সামছুর কসাইয়ের ছেলে মোরশেদ (৩৫)। রাফিউলকে (৩২) নামে আরও এক ধর্ষক পলাতক থাকায় তার পিতা ছাদেককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শাহীন, রাফিউল ও অপর একজন আসামি পলাতক রয়েছে। এদের থানায় আত্মসমর্পণের জন্য পরিবারকে সময় বেঁধে দিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানায়, ভারতে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ওই দুই তরুণী শনিবার সকালে পুটখালী সীমান্তে দালালদের মাধ্যমে আসে। এরপর তাদের রাতে শাহ-আলম বিশ্বাসের বাড়ি আটকে রেখে গভীর রাতে একটি পুকুরপাড়ে নিয়ে ৭ জন পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ও এলাকাবাসী সারাদিন অভিযান চালিয়ে তাদের মধ্যে ৬ জনকে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে আটক করেছে।  

গত শনিবার (৯ মার্চ) রাতে কুষ্টিয়ার রিয়া ও চাঁদপুরের শাহনাজকে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের এক দূর সম্পর্কের মামা বেনাপোল এনে দালালদের হাতে তুলে দেয়। ঐ মামা বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে চলে যায় তাদের ওপার থেকে রিসিভ করার জন্য। কিন্তু ওই দুই তরুণী লালসার শিকার হয় পুটখালীর কিছু মানুষ নামের নরপশুর। তাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে সারারাত মদ্যপস্তায় পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের এই কাহিনী জানাজানি হয়ে গেলে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে পদক্ষেপ নেওয়ার মাত্র ১৮ ঘন্টার মধ্যে ৬ ধর্ষকদের আটক করতে সক্ষম হয় প্রশাসন।

গ্রামের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেনাপোলের পুটখালী ঘাট দিয়ে যারা মানবপাচার করে তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকে। এ পথে যারা মানব,শিশু,নারী পাচার করে থাকে তাদের সঙ্গে যুক্ত ওই ছয় ধর্ষক। শাহীন নামে যে ধর্ষক পলাতক রয়েছে সে ওই গ্রামের একজন মহিলা ইউপি সদস্যার ছেলে বলে স্থানীয়রা জানান।

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) সৈয়দ আলমগীর হোসেন বলেন, রোববার সন্ধ্যার দিকে তাদের আটক করা হলেও সময় স্বল্পতার কারণে ভিকটিম দুই তরুণী ও আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা সম্ভব হয়নি। সোমবার বেনাপোলের পুটখালী গ্রামে গত শনিবার রাতে গণধর্ষণের শিকার দুই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষার জন্য সোমবার দুপুরে যশোর মেডিকেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। গণধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিত তরুণী রিয়া খাতুন বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেছে বেনাপোল পোর্ট থানায়।

পুলিশ জানায়,অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্য দালালদের মাধ্যমে দুই তরুণী শনিবার সকালে পুটখালী গ্রামে শাহ আলম বিশ্বাসের বাড়িতে আসে। ওই রাতে  গ্রামের ৯ যুবক তাদেরকে ভারতে পাঠানোর নাম করে বাড়ির পাশে আম বাগানে নিয়ে রাতভর পালাক্রমে দুই তরুণীকে গণধর্ষণ করে।

কেআই/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি