‘পেঁপে পাতার রস খেলে প্লেটিলেট বাড়ে না’ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:১৪, ৩ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৫৬, ৩ আগস্ট ২০১৯
পেঁপে পাতার রস খেলে প্লেটিলেট বাড়ে এমনটি ঠিক নয়, এটা ভ্রান্ত ধারণা বলে জানিয়েছেন পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক এবং জাতীয় গাইড লাইন ডেঙ্গু চিকিৎসা প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম।
শনিবার সকালে একুশে টেলিভিশনের স্বাস্থ্য বিষয়ক সরাসরি সম্প্রচারকৃত অনুষ্ঠান ‘ডি ডক্টরস’এ তিনি এ কথা জানান। ‘ডেঙ্গু জ্বর ও আমাদের করনীয়’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. ইকবাল হাসান মাহমুদ।
ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্লেটিলেট নিয়ে আতঙ্ক ছিল ২০০০ সালে। কারণ তখন ডেঙ্গু নিয়ে আমরা কম জানতাম। পরে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ডেঙ্গু নিয়ে তাদের এবং আমাদের গবেষণা নিয়ে এতটুকু বলতে পারি প্লাটিলেট নিয়ে মাতামাতি করার কিছু নেই। পাঁচ হাজার প্লেটলেট কাউন্টের রোগীকে আমি কোন রকম প্লেটিলেট না দিয়ে সুস্থ করে বাড়িতে পাঠিয়েছি। এর অর্থ এই নয় যে, প্লেটিলেট প্রয়োজন নেই। একটা সময় প্লেটিলেটের দরকার হয় তবে তা চিকিৎসক দেখবেন।’
রোগীর ঘনিষ্ঠজনরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানেন যে প্লেটিলেট কমে গেলে বুঝি রোগীর অবস্থা খারপ হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। রোগীর স্বজনরা চিকিৎসককে চাপ দেন প্লেটিলেট বাড়ানোর জন্য। প্লেটিলেট কাউন্ট হলে প্লেটিলেট দেওয়ার বিষয়টি চিকিৎসকের ওপরই ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক।
তিনি বলেন, ‘প্লেটিলেট নেওয়ার ক্ষেত্রে আমার চার/পাঁচ জনের কাছ থেকে প্লেটিলেট নেওয়ার চেয়ে একজনের কাছ থেকে প্লেটিলেট নেওয়া বেশ ভালো মনে করি। এতে ব্যায় একটু বেশি হলেও ভালো।’
ডা. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘পেঁপে পাতার রস খেলে নাকি প্লেটিলেট বাড়ে। এটা ঠিক নয়। আর প্লেটিলেট ডেঙ্গুর মুল বিষয় নয়। এ প্লেটিলেটের আয়ু এক থেকে দুই দিন। আপনি যদি আজ সকালে প্লেটিলেট দেন তা আগামীকাল বিকাল বেলায় দেখা যাবে ঐ দেওয়া প্লেটিলেটটা আপনা আপনি ধ্বংস হয়ে যাবে।’
তিনি জানান, এ সিজনে যদি প্রথম দিনেই জ্বর ১ শত ২, ৩, ৪ হয়ে যায় যাকে এবং এটা ডেঙ্গুর জন্য খুবই বড় একটা উপসর্গ। এর সাথে গায়ে ব্যাথা থাকলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তবে এ বছর ডেঙ্গুর উপসর্গ এবং চিকিৎসকের কাছে রোগীর উপস্থাপন একদমই আলাদা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি জানান, ডেঙ্গু নিয়ে যে সব রোগী আসতে পারেন তারা তিন ধরনের।
প্রথমত, যাদের শুধু মাত্র জ্বর এবং সামান্য ব্যাথা। যাদের প্লেটিলেট ভালো আছে। ব্লাড প্রেসার ভালো, খাবারে রুচি আছে এবং খেতে পারেন। তারা চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যেতে পারেন।
দ্বিতীয়ত, যাদের বমি হয়, পেট ব্যাথা হয়। প্রেসার কমে যায়। খাবারে রুচি নাই তাদের বাড়িতে রাখা যাবে না। তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।
তৃতীয়ত, আর যারা গ্রুপ সি’তে আছেন তারা ডেঙ্গুর শকে চলে যান। যাদের ব্লাড প্রেসার নেই, প্লেটিলেট খুবই কমে গেছে, পালস নেই। এসব রোগী দেরীতে হাসপাতালে আসলে বিপত্তি ঘটে। এতে চিকিৎসেরও হিমশিম খেতে হয়।
ডেঙ্গুর জন্য সহায়ক হলো থেমেথেমে বৃষ্টি। এক নাগারে বৃষ্টির সুবিধা হচ্ছে এডিসের লাভাগুলো ভেসে চলে যায় বলে মন্তব্য করেন ডা. তারিকুল।
তিনি জানান, ডেঙ্গু এ দক্ষিণ এশিয়াতে শিশুদের রোগ নামে পরিচিত ছিল। আগে বড়দের ক্ষেত্রে এ রোগ দেখা যেত না। কিন্তু এ বছর ডেঙ্গুতে বড়রাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
এমএস/