ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

পেঁয়াজের অবস্থা কী হতে যাচ্ছে? (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫৫, ২ অক্টোবর ২০১৯

পেঁয়াজের বাজারে সুখবর আসছে। কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। কেজিতে ১০ টাকা কমল সব ধরনের পেঁয়াজ। কয়েকদিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমে ৫০-৬০ টাকা হবে বলে মনে করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।

আজ বুধবার রাজধানীর পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, মজুত থাকা ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা এবং নতুন আমদানি করা পেঁয়াজ ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, রাজধানীর ৩৫টি পয়েন্টে ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকেই পেঁয়াজ না পেয়ে খালি হাতে ফিরেছেন। যারা কিনতে পেরেছেন তারা সন্তুষ্ট।

শিগগিরই পেঁয়াজের বাজার স্থীতিশীল হবে বলে জানিয়েছেন টিসিবি ডিলার সমিতির সভাপতি জুয়েল আহমেদ।

গত সোমবার বিকাল থেকেই পাইকারি ও খুচরা বাজারে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ।

বন্যা-বৃষ্টির কারণে ভারতে বেড়েছে পেঁয়াজের দর। এক পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজ রফতানি না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরই লাফিয়ে বাড়তে থাকে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম।

গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি মোকামে পেঁয়াজের বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ৪২-৪৩ টাকায় কেনা পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে হাতেনাতে প্রমাণও পেয়েছেন তারা। এভাবে অধিক মুনাফায় আর পণ্য বিক্রি করবেন না বলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের কাছে মুচলেকা দিয়েছেন।

ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত সোম ও মঙ্গলবার টানা দু’দিন সতর্ক করা হয়েছে ব্যবসায়ীদের। সিন্ডিকেট করে তারা যে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন, হাতেনাতে এর প্রমাণও পেয়েছি। ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা। কঠোরভাবে এটি মনিটর করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে আসার পর যারা ফের দাম বাড়িয়েছেন, তাদের তথ্যও সংগ্রহ করছেন গোয়েন্দারা। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মূলত ঢাকা, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও কক্সবাজারের ৩৫ ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রণ করছেন পেঁয়াজের বাজার। এসব ব্যবসায়ীর গুদামে রয়েছে আমদানিকৃত বেশিরভাগ পেঁয়াজ। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন মিয়ানমারের ১০-১২ ব্যবসায়ী।

গতকাল মঙ্গলবার টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে ৫৭০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে এমএস ট্রেডিংয়ের মালিক মো. হাসেমের কাছে আছে ১৯৯ দশমিক ৬৮০ টন, নুরুল কায়েস সাদ্দামের কাছে ৯৯ দশমিক ৮০০ টন, জিন্নাহ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক শওকত আলমের কাছে ৫৯ দশমিক ৮৮০ টন, এশিয়া এন্টারপ্রাইজের সাইফুদ্দিনের কাছে ৫৯ দশমিক ৮৮০ টন, মো. নাছিরের কাছে ৩১ দশমিক ৯০ টন, কেএম ট্রেডিংয়ের মালিক মো. আলম বাহাদুরের কাছে ১৯ দশমিক ৬০০ টন, গ্লোবাল লজিস্টিক ইন্টারন্যাশনালের কাছে আছে ৯৯ দশমিক ৮০ টন পেঁয়াজ।

আর গত সোমবার আসা ৫৩৬ টন পেঁয়াজের মধ্যে যদু চন্দ্র দাশের কাছে আছে ১১৮ দশমিক ৫০ টন, শওকত আলমের কাছে সাড়ে ৬৬ টন, আরাফাতের কাছে ৫৫ দশমিক ৩৫ টন, সাইফুদ্দিনের কাছে ৫০ টন, আবু আহমদের কাছে সাড়ে ৪০ টন এবং মহসিনের কাছে সাড়ে ১৭ টন পেঁয়াজ।

গত এক মাসে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আসা তিন হাজার ৫৭৩ টন পেঁয়াজও ঘুরেফিরে এনেছেন এই ১০-১২ ব্যবসায়ী। মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজের এখন ৮০ শতাংশ মজুদ আছে তাদের কাছে।

আমদানিকারকদের সঙ্গে কারসাজি করে খাতুনগঞ্জে যেসব কমিশন এজেন্ট ও আড়তদার পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন বলে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে- মেসার্স হাজি অছিউদ্দিন সওদাগর, মেসার্স আবদুল আউয়াল, মেসার্স শাহজালাল ট্রেডার্স, মেসার্স বাগদাদী করপোরেশন, এসএন ট্রেডার্স ও সোনালি ট্রেডার্স। তাদের কাছে এখন মজুদ আছে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ।

এছাড়া, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তুরস্ক ও মিসর থেকে আসা পেঁয়াজের মজুদ আছে তিন ব্যবসায়ীর কাছে। তাদের মধ্যে ঢাকার হাফেজি করপোরেশনের কাছে ১৩০ টন, জেনি এন্টারপ্রাইজের কাছে ১৫৬ টন ও এনএস ইন্টারন্যাশনালের কাছে আছে ৭৮ টন পেঁয়াজ।

অন্যদিকে, দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের সবচেয়ে বেশি মজুদ আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবনগর এলাকার মেসার্স টাটা ট্রেডার্স, সাতক্ষীরার মেসার্স দীপা এন্টারপ্রাইজ, রিপা ট্রেডার্স ও ঢাকা ট্রেডার্সে। পেঁয়াজ মজুদ রেখে এরা তা বেশি দামে বিক্রি করতে কমিশন এজেন্টদের বাধ্য করছে বলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছেও স্বীকার করেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।

তবে কম দামে কেনা পেঁয়াজ আর বেশি দামে বিক্রি করবেন না বলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে মুচলেকা দিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি