ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

‘পোশাক খাতের শ্রমিকদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৫২, ১ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ২৩:১১, ১ মার্চ ২০১৮

তৈরি পোশাক খাতের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে শ্রমিকদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ’র অ্যাপারেল ক্লাবে পরিবেশ বান্ধব সবুজ ১৩ কারখানাকে (লিড) সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনাইটেড স্টেটস গ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) ও গ্রিন বিজনেজ সাটিংফিকেশন ইনর্পোরেট এর এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোপালা কৃষ্ণনান পাদনামাভন। বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ নাসিরের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন সহসভাপমি এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, মজুরি বাড়ানোর জন্য সরকার মজুরি বোর্ড গঠন করলেও সুশীল সমাজ কিছু লোকজন আর গুটি কয়েক শ্রমিক সংগঠনের নেতারা মজুরি বোর্ডকে বাদ দিয়ে নিজেদের মতো মজুরি বৃদ্ধির দাবি করে আসছেন। আমাদের প্রত্যাশা শ্রমিকদের প্রয়োজন এবং শিল্পের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে নতুন মজুরী কাঠামো নির্ধারিত হবে।

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, দেশের ব্যবসায় সহজীকরণ সূচকে আমারা বিশ্বের অনেক পিছিয়ে থাকলেও তৈরি পোশাক খাত দেশের ৮২ শতাংশ রফতানি আয়ের প্রধান উৎস। এখাতে প্রায় ৪৪ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। তাই মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে কেউ ১৬ হাজার কেউ ১৮ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি তুলছে। এধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্যে না দিয়ে মজুরি বোর্ডকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, এর আগেও ২১৩ শতাংশ মজুরি বাড়ানো হয়েছিল। এবারও মজুরি বৃদ্ধির জন্যে সরকারকে মজুরি বোর্ড গঠন করতে আমরাই সুপারিশ করেছি।

যেসব প্রতিষ্ঠান পরিবেশের সুরক্ষা, মানব স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে নিজস্ব ভবনের নকশা প্রনয়ণ ও নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে এবং একই সাথে উল্লেখিত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের এ উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ইউএসজিবিসি ‘লীড’ সনদ প্রবর্তন করেছে। জিবিসিআই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা বিশ্বব্যাপী ‘লীড’ প্রকল্পগুলোকে যাচাইবাছাই পূর্বক সনদ প্রদানের অধিকার রাখে।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, এক সময় মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শ্রমিক-মালিক বির্তক করত। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। মালিক-শ্রমিক এবং সরকারি উদ্যেগে মজুররি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতায় মজুরি নির্ধারণ হয়। আর এখাতে উদ্যেক্তাদের অনেক ঝুঁকি নিয়ে আজকের এ অবস্থায় পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, এই পোশাক শিল্প আজ জাতীয় অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড। আমার প্রত্যাশা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকার রফতানি আয় করা সম্ভব হবে। তাই এখন সময় হয়েছে এখাতের উদ্যেক্তাদের অবাদনের স্বীকৃতি দেওয়া।

পরিবেষ ও বনমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ বলা হলেও আজ বিশ্বের প্লাটিনাম শ্রেণির ১০ টি পরিবেশ বান্ধব কারখানার মধ্যে ৭টি বাংলাদেশের। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে লিড প্লাটিনাম সার্টিফাইড কারখানা আছে মাত্র ৫টি, এখনও ২০টি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে ১৩টি প্লাটিনাম সার্টিফাইড কারখানা আছে। এ ধরনের ইতিবাচক সংবাদ প্রচার করা হয় না। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের নেতিবাচক ব্রান্ডিং কাটিয়ে উঠতে বিজিএমইএ ও সরকারকে একত্রে প্রচারণা চালাতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন রেমি হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএ’র পরিচালক মিরান আলী, প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক।

১৩ কারখানাকে (লিড) সম্মাননা প্রদান: অনুষ্ঠানে ১৩টি লিড প্লাটিনাম সার্টিফাইড প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এগুলো হচ্ছে রেমি হোল্ডিংস, তারাসিমা অ্যাপারেলস, প্লামি ফ্যাশনস, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও, কলাম্বিয়া ওয়াশিং প্লান্ট, ইকোটেক্স, এসকিউ সেলসিয়াস ইউনিট-২, কানিজ ফ্যাশনস, জেনেসিস ওয়াশিং, জেনেসিস ফ্যাশনস, এসকিউ বিরিকিনা, এসকিউ কোলব্লাংক ও এনভয় টেক্সটাইল।

প্রসঙ্গত: “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের একটি নীরব বিপ্লব ঘটেছে। এখন পর্যন্ত এ শিল্পের ৬৭টি কারখানা ইউএসজিবিসি লিড সনদ লাভ করেছে, এর মধ্যে রয়েছে ১৩টি প্লাটিনাম কারখানা। আরো প্রায় ২৮০টি কারখানা লিড সনদের জন্যে নিবন্ধিত হয়েছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ র‌্যাংকিং প্রাপ্ত লীড প্লাটিনাম ডেনিম কারখানা, নীটওয়্যার কারখানা, ওয়াশিং ও টেক্সটাইল মিল বাংলাদেশে অবস্থিত।

 

আর/টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি