পোষ্য কোটা ইস্যুতে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত : ১৯:২১, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
পোষ্য কোটা বাতিলের ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা৷
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান নেন। এ ঘটনায় পরে পর দুপুর পৌনে ২টার শিক্ষার্থীরা বটতলা থেকে একটি মিছিল বের করে বিভিন্ন হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের অনশনের মুখে পোষ্যকোটা সংস্কারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে কর্মবিরতি ঘোষণা করে মিছিল নিয়ে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আসেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসময় সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হয়।
এ ঘটনায় পরে পর দুপুর পৌনে ২টার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে বিভিন্ন হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসে।
এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরোধ করে রাখেন।
বিক্ষোভে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে, ‘দাবি মোদের একটাই পোষ্য কোটার বাতিল চাই’, ‘হলে হলে খবর দে পোষ্য কোটার কবর দে’, ‘সংস্কার না বাতিল, বাতিল বাতিল’, ‘শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
এর আগে, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২ টায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সংস্কারের আশ্বাস দিলে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বিকালে উপাচার্য রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার ও প্রক্টরসহ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে এলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের উপর্যুপরি স্লোগানে উপাচার্য কোন কথা বলতে পারেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চারটি দাবি উত্থাপন করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- পৌষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে, আজকে যারা কর্মচারীদের আন্দোলন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে বিরূপ আচরণ ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার সাথে জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে চাকরিচ্যুত করতে হবে, পাশাপাশি পরবর্তীতে কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী যদি ক্যাম্পাস অচল করার ঘোষণা দেয় তাদেরকেও চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে হবে।
যদি দাবি না মানা হয় পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেয় শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, পোষ্য কোটার জন্য আগের সব সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্মকর্তা–কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বাবুল বলেন, পোষ্য কোটা একটি প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা। বাংলাদেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই এই সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। যতদিন পর্যন্ত পূর্বের সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।’
বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবন ছেড়ে চলে গেলেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান করছেন। সমস্যার সমাধানে শিক্ষার্থীদের কাছে ৪ ঘন্টা সময় চেয়েছেন।
এএইচ
আরও পড়ুন