ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

অফিসার্স ক্লাব নির্বাচন

প্রচারে সরগরম সচিবালয়

প্রকাশিত : ১৩:১৪, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৪:৫৮, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮

অফিসার্স ক্লাব-ঢাকা’র নির্বাহী কমিটির ২০১৮-২০১৯ মেয়াদের নির্বাচন ১৯ জানুয়ারি। নির্বাচন সামনে রেখে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। প্রচার শুধু অফিসার্স ক্লাবেই সীমাবদ্ধ নয়, সচিবালয়সহ রাজধানীর প্রায় সব সরকারি অফিসগুলো এখন সরগরম এই নির্বাচন নিয়ে।

দুই বছর মেয়াদি ক্লাব পরিচালনা কমিটিতে ঠাঁই পেতে প্রার্থীরা দলবদ্ধভাবে সরকারি বিভিন্ন অফিসে ছুঁটছেন। অনেকেই নিজের দাপ্তরিক কাজ শেষ করে রাতভর চালাচ্ছেন প্রচার। ক্লাব নির্বাহী কমিটির নির্বাচনে সরকারের বেশকিছু সচিবসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারাও অংশ নিচ্ছেন। ভোটাদের কাছে ভোটপ্রার্থনা এখন প্রার্থীদের প্রতিদিনের রুটিন কাজে পরিণত হয়েছে। মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রচার বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভোটারদের কাছে টানতে ক্লাবকে ঢেলে সাজাবার প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন অনেকে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অফিসার্স ক্লাব নির্বাহী কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ রাজেক একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, নির্বাচিত হলে ক্লাবের পরিবেশের উন্নয়ন ও আরও বেশি সুশৃংখল করতে কাজ করব। ক্লাব পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবাদিহি এবং ক্লাবে সামগ্রিক উন্নয়নে সচেষ্ট থাকব।

প্রসঙ্গত, অফিসার্স ক্লাবে সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, যুগ্ম সম্পাদক ও সদস্যসহ ২২ পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৪৫ সরকারি কর্মকর্তা। ক্লাবে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৭৩১ জন। ক্লাবের বর্তমান সদস্য সংখ্যা পাঁচ হাজার তিনশ’।

অফিসার্স ক্লাব সূত্র জানায়, সংবিধান অনুসারে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব হন ক্লাবের সভাপতি। বর্তমানে এ পদে রয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম। এই পদটিতে কখনও নির্বাচন হয় না।

সহ-সভাপতি পদের সংখ্যা মোট তিনটি। তিন পদের বিপরীতে মোট ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব এম এ রাজেক, প্রফেসর ডা. মো মোজাহেরুল হক, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কেএএম মোজাম্মেল হক, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব আনছার আলী খান, আমিনুল ইসলাম, মো. গোলাম মোস্তফা, রওশন আরা জামান, ড. ফোরকান উদ্দীন আহাম্মদ।

সাধারণ সম্পাদকের একটি পদে লড়ছেন তিন প্রার্থী। তারা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইব্রাহীম হোসেন খান এবং অন্য দু’জন হলেন-এম খালিদ মাহমুদ, মোশারফ হোসেন।

কোষাধ্যক্ষের একটি পদে যুগ্ম কর কমিশনার ব্যারিস্টার মোতাসিম বিল্লাহ ফারুকী ও মেজবাহ উদ্দীন।

যুগ্ম সম্পাদকের তিন পদের বিপরীতে লড়ছেন পাঁচজন। তারা হলেন- ঢাকা কলেজের অধ্যাপক ড. ফেরদৌসি খান, মকবুল হোসেন পাইক, খন্দকার মোস্তান হোসেন,  ডা. সৈয়দ ফিরোজ আলমগীর, মো জাহাঙ্গীর আলম।

১৪টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ৩৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন-ডা. মো. এমদাদুল হক, এম এ মজিদ, আবদুল মান্নান, ডা. মনিলাল আইচ লিটু, আশরাফুল সেনা খান রোজি, মীর মনজুরুর রহমান, মনছুরুল আলম, শেখ মো: শরীফ উদ্দীন, ড. মো জাকেরুল আবেদীন (আপেল), স্বপন কুমার রায়, সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ, মুহাম্মদ সাবিক সাদাকাত, একে বোরহানউদ্দীন, শ্যামাপদ, মো. আখতারুজ্জামান, ড. মো. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, আসমা সিদ্দিকা মিলি, মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, আব্দুল মান্নান ইলিয়াস, শাহীন আরা মমতাজ(রেখা), আলমগীর হোসেন, শাহাদৎ হোসাইন, স ম, গোলাম কিবরিয়া, প্রাদ্যুৎ কুমার সাহা, মোতাহার হোসেন, মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ, জেসমিন আক্তার, রথীন্দ্র নাথ দত্ত, মাসুদ করিম, তানিয়া খান, আজহারুল ইসলাম খান, মমিনুল হক (জীবন),মোহাম্মদ শাহজালাল, দৈয়দা সালমা জাফরীন, মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন মৌসুমি।

ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব এম এ কাদের সরকার একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, ক্লাবের বহুতল ভবনের ছাদে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য বহুমুখী অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মাণ কাজ করব। ক্লাবের নির্মায়মান রেস্ট হাউজ সম্পন্নকরণ ও ওয়ানস্টপ মলের ন্যায় শপ চালু করব। বিগত সময়ের সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ন্যায় ভবিষ্যৎ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা করব। ক্লাবকে নান্দনিক ও ব্যবহারোপযোগী রাখার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবো। অফিসার্স ক্লাবের পূর্বাচলে বরাদ্দ করা জমিতে আধুনিক সুবিধা সদৃদ্ধ মাস্টারপ্লান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করব। একইভাবে উত্তরা অফিসার্স ক্লাবের বরাদ্দ করা জমিতে ভবন নির্মাণ করব।

এ বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দুযোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, প্রবীণ সদস্যদের জন্য সামজিক কর্মকাণ্ড গ্রহণ যেমন- চক্ষু ও দন্ত চিকিৎসা ক্যাম্পের ব্যবস্থা করব। ক্লাবের সদস্যদের ছেলে-মেয়েদের শরীরিক ও মানসিক উন্নয়নের বছরে কমপক্ষে ১ বছর বার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আযোজন করব। উত্তরা, গুলশান, ও মিরপুর-এলাকার সদস্যগণের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসা-যাওয়ার জন্য যানবাহন ব্যবস্থা করব।

নির্বাচন নিয়ে সহ-সভাপতি প্রার্থী এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কে এ  এম মোজাম্মেল হক একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, আমি গত মেয়াদেও ভাইস চেয়ারম্যান ছিলাম। এসময়ে ক্লাবের উন্নয়নে কাজ করেছি। ইতোমধ্যে ক্লাবের সদস্যদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি।

নির্বাচন সামনে কিছু প্রতিশ্রুতিও দেন এই প্রার্থী। বলেন, ক্লাবে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হল একটি বড় অডিটোরিয়াম। নির্বাচিত হলে এটা নিয়ে আগে কাজ করবো। আমি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। আমি বিজয়ী হলে ক্লাবের চলমান উন্নয়ন অব্যাহত রাখবো। সর্বোপরি ক্লাবের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং ক্লাবের সদস্য ও তাদের পরিবারের আনন্দ, বিনোদনে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করবো।

যুগ্ম সম্পাদক পদপ্রার্থী প্রফেসর ড. ফেরদৌসী খান একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, ক্লাবের গতিশীল উন্নয়নের ধারাকে যুগোপযোগী, কল্যাণমুখী ও বিশ্বমানে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। অবসারপ্রাপ্ত এবং অপেক্ষাকৃত তরুণ সদস্যদের সস্মানজনক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করবো। ক্লাবের সদস্যদের জন্য ব্লাড ব্যাংক স্থাপন এবং স্বাস্থ্য সেবায় সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করবো। ক্লাবের সদস্যদের শিশু সন্তানের জন্য দিবা যত্মকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করবো।

এ বিষয় পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, আন্ত:ক্যাডার বৈষম্যমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে কাজ করবো। আধুনিক ফিটনেস সেন্টার নির্মাণে ও ক্লাবের ক্যান্টিনের মান উন্নয়নে কাজ করবো।

সদস্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, ক্লাবের সার্বিক উন্নয়নে নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে সম্মিলিতভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চেষ্টা করব।

ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক/যান্ত্রিক স্থাপনের রক্ষাণাবেক্ষণ কাজে ভূমিকা রাখব। ক্লাবের অবকাঠামো নাদন্দিক সুইমিং কমপ্লেক্সটিকে সুষ্ঠভাবে রক্ষণাবেক্ষণসহ এর উন্নতি কল্পে ভূমিকা রাখব।

/ এআর /

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি