ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রবাসী আয় কমেছে উন্নত দেশ থেকেও

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০৯, ১০ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ২১:৪৮, ১০ আগস্ট ২০১৭

মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বৈধ পথে প্রবাসী আয় কমেছে। জ্বালানি তেলের অব্যাহত দরপতন এবং টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বেশি হওয়ার কারণে গত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছে।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিক (এপ্রিল-জুন) নিয়ে এমন মতামত তুলে ধরেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। দেশের অর্থনীতি নিয়ে এমসিসিআইয়ের এই পর্যালোচনা বুধবার প্রকাশ করা হয়। প্রতি তিন মাস পর পর এ ধরনের পর্যালোচনা প্রকাশ করে এমসিসিআই।

পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, আলোচ্য প্রান্তিকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা মোটামুটি ইতিবাচক ছিল। পুরো অর্থবছরে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও অর্থনীতির সম্ভাবনায় যথেষ্ট নয়। দুর্বল অবকাঠামো, বিনিয়োগে আস্থার পরিবেশের ঘাটতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যার কারণে উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে এসব সমস্যা দূর করতে হবে।

এমসিসিআই এর মতে, আলোচ্য সময়ে মূল্যস্ফীতি একটু বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে ছিল। পাশাপাশি বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বেড়েছে এবং তা একটি স্বস্তিকর অবস্থানে আছে। তবে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (আকু) আমদানি বাবদ দায় পরিশোধের কারণে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কিছুটা কমবে।

প্রবাসী আয়ের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, আনুষ্ঠানিক বিনিময় হারের তুলনায় খোলাবাজারে টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্য বেশি। এ কারণে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানো নিরুৎসাহিত হচ্ছে। গত অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় প্রবাসী আয় আসা কমেছে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

প্রবাসী আয় বাড়াতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া উদ্যোগগুলো উল্লেখ করে বলা হয়, নানা উদ্যোগের পরও শেষ দিকে এসে কিছুটা বাড়লেও প্রবাসী আয় সন্তোষজনক নয়। নানা অনিশ্চয়তার কারণে এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসা কমেছে ৩০ শতাংশ। একই সময়ে বৈধ পথে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ যুক্তরাজ্য থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ, মালয়েশিয়া থেকে সাড়ে ১৭ শতাংশ এবং সিঙ্গাপুর থেকে সাড়ে ২২ শতাংশ কমেছে। বৈধ পথে অর্থ পাঠালে তার বিনিময় মূল্য কম হওয়ায় অনানুষ্ঠানিক বা হুন্ডির মাধ্যমে এসব দেশ থেকে বেশি অর্থ এসেছে।

শিল্প ও উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার বিষয়ে এমসিসিআই বলেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) শিল্পঋণ বিতরণের পরিমাণ আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। তবে একই সময়ে বিতরণ করা ঋণ ফেরত আনায় ৬ দশমিক ৩ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

সংগঠনটির মতে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট নয়। গত অর্থবছরে রপ্তানির কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। কিন্তু রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ডলার, যা লক্ষ্য থেকে প্রায় ৬ শতাংশ কম। মূল রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক ছিল না। ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৫ হাজার কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য অর্জনে ১২ শতাংশ হারে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে।

প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ক্ষেত্রে এমসিসিআই’র মত, গত অর্থবছরে এফডিআইয়ের পরিমাণ আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়ে ১৬২ কোটি ডলার হয়েছে। তবে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এফডিআইয়ের এই প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট নয়।

হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার কারণে গত অর্থবছরে বিদেশি ঋণ-সহায়তা তুলনামূলকভাবে কম ছিল বলে মনে করে এমসিসিআই। এছাড়া শেষ হওয়া অর্থবছরে কৃষি, আবাসন, নির্মাণসহ বিভিন্ন সেবা খাতের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করা হয়েছে পর্যালোচনায়।

আর/ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি