প্রবাস থেকে স্বামী হত্যার পরিকল্পনা, গ্রেফতার ৪
প্রকাশিত : ২০:২২, ২৮ জুলাই ২০১৯ | আপডেট: ২০:২৬, ২৮ জুলাই ২০১৯
রাজশাহীতে প্রবাসী এক নারী তার স্বামীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কাঞ্চন শিকদার (২২) নামের ওই যুবককে বাগেরহাট থেকে রাজশাহীতে নিয়ে গলাকেটে হত্যার চেষ্টার চেষ্টা করা হয়। হত্যার পর গলাকাটা গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। মূল পরিকল্পনাকারি প্রবাসী ওই নারী বলে গ্রেফতারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে।
রোববার দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো.শহীদুল্লাহ।গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট থানার গোড়ফা গ্রামের রবিউল শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৪),নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার হাসেম আলীর ছেলে সজীব (১৯),নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার আলীগঞ্জ গ্রামের পারভেজ ওরফে মোশারফের ছেলে কাউসার(২০)ও পটুয়াখালি জেলার গলাচিপা থানার নলুয়াবাগি গ্রামের মজিব মৃধার ছেলে মিরাজ হোসেন (১৯)। এদের মধ্যে রাসেল শেখ নিজেকে কাঞ্চনের প্রবাসী স্ত্রী তানিয়ার প্রেমিক বলে দাবি করেছেন।
কাঞ্চন শিকদারের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট থানার গোড়ফা গ্রামে। তিনি জালাল শিকদারের ছেলে। তার প্রবাসী স্ত্রীর বাবার বাড়িও একই গ্রামে।
পুলিশ সুপার মো.শহীদুল্লাহ বলেন, শনিবার রাত ১০ থেকে ১২টার মধ্যে পৃথক স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।তাদের কাছ থেকে একটি ছুরি ও চেতনানাশক পাউডার উদ্ধার করা হয়।এছাড়াও প্রবাসে বসে ওই নারী যে তার স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার বেশ কিছু আলমতও পাওয়া গেছে গ্রেফতার রাসেলের মোবাইল ও ম্যাসেঞ্জারে।
পুলিশ সুপার বলেন, দুইদিন আগে পাসপোর্ট করে দেওয়ার কথা বলে কাঞ্চনকে রাজশাহীতে আসা হয়। তারা শিরোইল এলাকায় সিটি আবাসিক হোটেলে উঠে।পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাঞ্চনকে মারার জন্য তারা শনিবার রাত ১০টার দিকে চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছি স্টেশনের একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে তারা কাঞ্চনকে অজ্ঞান করার চেষ্টা করলে সে চিৎকার দেয়।এসময় স্থানীয় লোকজন গিয়ে মিরাজ ও কাউসারকে ধরে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী রাসেল ও তার সহযোগি সজীবকে গ্রেফতার করতে অভিযানে নামে পুলিশ।রাত ১২টার দিকে রাজশাহী রেলস্টেশন এলাকা থেকে রাসেল ও সজীবকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার বলেন, কাঞ্চনকে হত্যা করে গলাকাটা গুজব বলে চালিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। পাসপোর্ট করানোর কথা বলে তানিয়া তার স্বামীকে রাসেলের সঙ্গে রাজশাহী পাঠায়।তবে এ হত্যা চেষ্টার সাথে জড়িতদের কোনো টাকা-পয়সা লেনদেন হয়নি। শুধুমাত্র বন্ধুত্বের সম্পর্কের জেরে খরচ বাবদ মাত্র ২০ হাজার টাকা নিয়ে তারা এ হত্যাকান্ডের মিশনে এসেছিল।
মো.শহিদুল্লাহ বলেন, সাত বছর আগে কাঞ্চনের সঙ্গে বিয়ে হয় তানিয়ার।সে বর্তমানে সৌদি আরবে বিউটি পার্লারে কাজ করে।দেড় বছর পরে তার দেশে আশার কথা রয়েছে।তবে দেড় বছর আগে তানিয়ার সৌদি আরব যাওয়ার কাগজপত্র ঠিকঠাক করে দেওয়ার সহযোগিতা করে রাসেল শেখ।সে সময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।দেশে ফেরার আগেই পথ পরিস্কার করতে রাসেল ও তানিয়া কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
কেআই/
আরও পড়ুন