ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রবৃদ্ধি আনতে দরকার কার্যকর অর্থনৈতিক অঞ্চল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৫৫, ৩০ অক্টোবর ২০১৭

দেশে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো এখনো তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।  জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রতিষ্ঠিত বা প্রতিষ্ঠার অপেক্ষায় থাকা এ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে কার্যকর করা প্রয়োজন। গতকাল ইম্প্যাক্ট বাংলাদেশ ফোরামের প্লেনারি সেশনে বক্তারা এমন মত প্রকাশ করেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও ইউএনডিপি-বাংলাদেশ যৌথভাবে ইম্প্যাক্ট বাংলাদেশ ফোরাম ২০১৭-এর আয়োজন করে। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। ফোরামে ‘বিল্ডিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর গ্রোথ অ্যান্ড এসডিজিস’, ‘কনভেনিং ফর ইম্প্যাক্ট: বিজনেস লিডারশিপ অ্যান্ড এসডিজি পার্টনারশিপস’, ‘ক্যাটালাইজিং ইম্প্যাক্ট: ডাটা অ্যান্ড পলিসিজ’ ও ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি জুট পাল্প অ্যান্ড ইম্প্যাক্ট অন এসডিজিস’ শীর্ষক চারটি পৃথক প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে দেশে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে। তাতে দেশের উৎপাদন বাড়বে এবং প্রবৃদ্ধির গতিও ত্বরান্বিত হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে কার্যকর করা দরকার।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন হচ্ছে। এটি একটি বড় খবর। এগুলো চালু হলে অনেক কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন হবে। কিন্তু সমস্যা হলো, এগুলো তো সঠিকভাবে কাজই করে না। যেমন— কালিয়াকৈরের আইটি পার্কের সব কাজ মোটামুটি শেষ। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে এটি পড়ে রয়েছে। বাকি কাজ শুরু হচ্ছে না। এতকিছু করে ট্যানারি নিয়ে যাওয়া হলো সাভারে। কিন্তু নির্ধারিত সময়েও তার কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। ফলে আরেকটি নদীর দূষণ শুরু হয়ে গেছে।

অন্যান্য সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ইচ্ছামতো বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে, কিন্তু সে অনুযায়ী সেবা নেই। ব্যাংকিং খাত সঠিকভাবে কাজ করছে না। প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। এসব বিষয়ে নজর না রাখলে বিনিয়োগ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি।

প্রথম প্লেনারি সেশন দুটি ভাগে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ভাগে আলোচনা হয় রিজিওনাল কানেক্টিভিটি ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড লজিস্টিক ট্র্যাক। দ্বিতীয় ভাগে আলোচনা হয় ইকোনমিক জোন অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লাস্টার নিয়ে। এ সেশনের সভাপতিত্ব করেন এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ট্রেড অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস) ড. মাশরুর রিয়াজ। প্যানেলিস্ট হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, আবদুল মোনেম গ্রুপের ডিএমডি এএসএম মাইনুদ্দিন মোনেম, ইয়াং কনসালট্যান্টসের সিইও জাকির হোসেন।

মূল প্রবন্ধে ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, দুবাইয়ে মোট শ্রমশক্তির ১৩ শতাংশের কর্মসংস্থান হয়েছে অর্থনৈতিক অঞ্চলে। বাংলাদেশের আটটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ ছিল ২৬০ কোটি ডলার। অন্যদিকে জর্ডানের অর্থনৈতিক অঞ্চল ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ টানতে পেরেছে। চীনের জিডিপিতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের অবদান ১১ শতাংশ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো ৭ দশমিক ৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমএ মান্নান বলেন, বিশ্ববাণিজ্যে আমাদের চলাফেরায় কিছু উন্নত দেশ বাধা তৈরি করছে। এগুলোর কারণে আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না। আমরা জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যেন আমাদের সঙ্গে অবিচার বন্ধে তারা আমাদের পাশে থাকে। তিনি বেসরকারি খাতের প্রশংসা করেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন দেশের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বেসরকারি খাতের অবদানের কারণেই বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে বলে জানান তিনি। স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০তম অর্থনীতির দেশ হতে গেলে শুধু অবকাঠামো খাতেই ৩২ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগে প্রয়োজন।

আরকে /ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি