প্রশাসনবিহীন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা শঙ্কায় ইবি শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত : ১৫:১৮, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে দেশের বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো স্থবিরতা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এখনও অবিভাবক শূন্য। প্রশাসনবিহীন এমন অবস্থায় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে।
জানা যায়, গত ৮ আগষ্ট ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান। ১৭ আগষ্ট প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরবর্তীতে ছয়টি হলের প্রভোস্টও পদত্যাগ করেন।
প্রভোস্ট পদত্যাগ করায় তাদের দায়িত্ব পালন করছেন স্ব স্ব হলের হাউজ টিউটরগণ। তবে সকল সময়ে হাউজ টিউটরদের পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। এতে ভোগান্তিতে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে প্রক্টরের পদত্যাগে প্রক্টরিয়াল বডির কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে ও মেয়েদের হলগুলোর সামনেও অনেক রাত পর্যন্ত বহিরাগতদের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়।
শেখ হাসিনা হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রায় দুই মাস হলো প্রভোস্ট ছাড়াই হল চলছে। হলের অনেক কাজও প্রভোস্টের জন্য আটকে রয়েছে। তবে নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করলে আমাদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। রাতে কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দায়ভার নেওয়ার মতোও কেউ নেই এখন।
আরও জানান, একজন আনসার আমাদের নিরাপত্তার জন্য আছে, তারপরও একটা ভয় থেকেই যায়। একটি ছাত্রী হলে অবশ্যই প্রভোস্ট থাকা গুরুত্বপূর্ণ৷ যতো দ্রুত সম্ভব প্রভোস্ট নিয়োগের দাবি আমাদের সবার।
বঙ্গবন্ধু হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাম্পাসে ভিসি না থাকায় আমারা চরম নিরাপত্তা সংকটে ভুগছি। ক্যাম্পাসের কোথাও কোন নিরাপত্তার ব্যারিকেড নাই। প্রক্টর না থাকায় অভিযোগ করার মতোও কোন জায়গা না। এতো দিন হয়ে গেলো ভিসি নিয়োগ হলোনা। আমরা চাই অনতিবিম্বে ভিসি নিয়োগ করা হোক। ক্যাম্পাসের সার্বিক বিষয়ে অস্থিরতা দূর হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, আমি প্রশাসনিক এবং আর্থিক দায়িত্ব পেলেও সবদিকেই খেয়াল রাখার চেষ্টা করছি। সকলকেই এই ক্রান্তিকালীন সময় মোকাবিলায় সহযোগী, সহমর্মি হয়ে কাজ করতে হবে তবেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বড় কোনো ক্রাইসিসের সম্মুখীন হবেনা।
তিনি বলেন, হলগুলোতে বর্তমানে প্রভোস্টের অনুপস্থিতিতে প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করছেন হাউজ টিউটরগণ। নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হলের গেটে সার্বক্ষনিক আনসার মোতায়নের পাশাপাশি হাউজ টিউটরদের বলা হয়েছে যেন তারা শিক্ষার্থীদের কাছে যায়, তাদের সাথে কথা বলে, তাদের সুবিধা-অসুবিধা জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
উল্লেখ্য, প্রশাসনিক এবং একাডেমিক কাজে গতি ফেরাতে গত কয়েকদিন যাবত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। যেখানে নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।
এএইচ
আরও পড়ুন