ফিতরা কিভাবে আদায় করবেন
প্রকাশিত : ১৫:২৯, ১৮ মে ২০২০
প্রতিটি সামর্থবান মানুষের ওপর ফিতরা ওয়াজিব। ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদেকের সময় যে ব্যক্তির নিকট তার ও তার পরিবারের খাদ্য-খোরাক বিদ্যমান রয়েছে এবং সেই সাথে ফিতরা দেয়ার সামর্থ্য আছে তার জন্য আল্লাহ্ তায়ালা ফিতরা ওয়াজিব করেছেন। ফিতরা আদায় করার উত্তম সময় হচ্ছে ঈদের নামাজে বের হওয়ার পূর্বক্ষণে। অর্থাৎ ফিতরা দিয়ে নামাজ পড়তে যাওয়া।
রাসুলুল্লাহ সা. ঈদের নামাজ আদায়ের পূর্বে ফিতরা আদায় করার আদেশ দিতেন। (সহি বুখারি : ১৫০৩)
ইবনে উমর থেকে বর্ণিত, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাতুল ফিতর আদায় করার আদেশ দেন লোকদের নামাযে বের হওয়ার পূর্বে।’ (বুখারী, ১৫০৯ )
কেউ ঈদের এক দুই দিন পূর্বেও তা দিতে পারেন, কারণ সাহাবিদের মধ্যে কেউ কেউ ঈদের এক দুই দিন পূর্বে তা আদায় করতেন। (বুখারী, ১৫১১)
এই ওয়াজিব কিভাবে আদায় করবেন এবং কাদেরকে দেওয়া জায়েজ তা অনেকের জানা নেই। এবার জেনে নিন-
* রোজা না রাখলে বা রাখতে না পারলে তার উপরও ফিতরা দেয়া ওয়াজিব।
* ফিতরা নিজের পক্ষ থেকে এবং পিতা হলে নিজের না-বালেগ সন্তানের পক্ষে থেকে দেয়া ওয়াজিব। বালেগ সন্তান, স্ত্রী, স্বামী, চাকর-চাকরানী, মাতা-পিতা প্রমুখের পক্ষ থেকে দেয়া ওয়াজিব নয়। তবে বালেগ সন্তান পাগল হলে তার পক্ষ থেকে দেয়া পিতার উপর ওয়াজিব।
* একান্নভুক্ত পরিবার হলে বালেগ সন্তান, মাতা, পিতার পক্ষ থেকে এবং স্ত্রীর পক্ষ থেকে ফিতরা দেয়া মোস্তাহাব, ওয়াজিব নয়।
* ফিতরায় ১ সের সাড়ে বার ছটক বা ১ কেজি ৬৬২ গ্রাম গম বা আটা কিংবা তার মূল্য দিতে হবে। পূর্ণ দুই সের বা ১ কেজি ৮৬৬ গ্রাম বা তার মূল্য দেয়া উত্তম।
* ফিতরায় যব দিলে ৩ সের ৯ ছটাক বা ৩ কেজি ৫২৩ গ্রাম দিতে হবে। তবে পূর্ণ ৪ সের বা ৩ কেজি ৭৩২ গ্রাম দেওয়া উত্তম।
* গম, আটা ও যব ব্যতীত অন্যান্য খাদ্যশস্য যেমন: ধান, চাল, বুট, কলাই, মটর ইত্যাদি দ্বারা ফিতরা আদায় করতে চাইলে বাজার দরে উপরোক্ত পরিমাণ গম বা যবের মূল্য যা হয় সেই মূল্যের ধান, চাল ইত্যাদি দিতে হবে।
* ফিতরায় গম, যব ইত্যাদি শস্য দেয়ার চেয়ে তার মূল্য নগদ টাকা-পয়সা দেয়া উত্তম।
* ফিতরা ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজের পূর্বেই দিয়ে দেয়া উত্তম। নামাজের পূর্বে দিতে না পারলে পরে দিলেও চলবে। ঈদের দিনের পূর্বে রমজানের মধ্যে দিয়ে দেয়াও দোরস্ত আছে।
* যাকে যাকাত দেয়া যায় তাকে ফিতরা দেয়াও যায়।
* একজনের ফিতরা একজনকে দেয়া বা একজনের ফিতরা কয়েকজনকে দেয়া যাবে। কয়েকজনের ফিতরাও একজনকে দেয়ার নিয়ম আছে কিন্তু তার দ্বারা যেন সে মালেকে নেছাব না হয়ে যায়। অধিকতর ত্তম হল একজনকে এই পরিমাণ ফিতরা দেয়া, যার দ্বারা সে ছোটখাট প্রয়োজন পূরণ করতে পারে বা পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’তিন বেলা খেতে পারে।
সূত্র: আহকামুন নিসা গ্রন্থ
এএইচ/