বয়সটা ছিল প্রেমে পড়ার!
প্রকাশিত : ২২:৫৩, ৮ ডিসেম্বর ২০২০
মুক্তিযুদ্ধকালীন লেখক ও তার বন্ধু বাবলী
শামীম আজাদ বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ কবি ও সাহিত্যিক। তিনি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের লন্ডন শাখার চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উপন্যাস, কবিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর তার ৩৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন ধারা নিয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ দেশ বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিচিত্র পুরষ্কার ছাড়াও তিনি আরও অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
বয়সটা ছিল যুদ্ধে যাবার। বয়সটা ছিল প্রেমে পড়ার। কিন্তু আমাদের দু’বন্ধুর কেউই মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারিনি বিধায় যুদ্ধের পুরো ন’টা মাস যে যেখানে ছিলাম সেখান থেকেই নিরন্তর গেরিলাযোদ্ধা ভাই-বন্ধুদের সহযোগী ছিলাম। তাদের গোলা-বারুদ লুকিয়ে রেখেছি, অপারেশনের ফাঁকে গভীর রাতে এলে খেতে দিয়েছি, ওপার বাংলা থেকে আসা জেরক্স করা গোপন ইশতেহার বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাস্তায় ও অবরুদ্ধ রেডিও ষ্টেশনে বিলি করেছি, ওদের সংবাদ পৌঁছে দিয়েছি এবং সুফিয়া খালার (কবি সুফিয়া কামালের) নির্দেশে চলেছি।
মুক্তিযোদ্ধা বন্ধুদের এ্যাকশনের সাহায্যের জন্য অবরুদ্ধ ও ভয়াবহ রেডিও ভবনে অনুষ্ঠান করার নাম করে ঘৃণ্য পাকিস্তানী কলাবরেটরদের নাম ঠিকানা ও কাগজপত্র হ্যান্ডব্যাগে ভরে বেরিয়ে এসেছি। সে ছিল একাত্তরের রণাঙ্গণে যোগ না দিতে পারার বিকল্প প্রজেক্ট।
বাংলাদেশের অবরুদ্ধ সময়ে যাদের সঙ্গে গোপন সংযোগ ছিল তাদের কাছ থেকে ও স্বাধীন বাংলা বেতারের অনুষ্ঠান শুনে শুনে আমাদের দু’জনেরই ভীষণভাবে গেরিলা যোদ্ধা দেখার আগ্রহ বাড়তে থাকে। বাংলা মায়ের সেইসব না দেখা বীরদের প্রতি অপার শ্রদ্ধার সঙ্গে কোথাও যেন ভালবাসার নেকটারও জমা হতে থাকে।
কিন্তু ভ্রমরার দেখা পাওয়া যে অসম্ভব। ওদের ছবি তোলার কথা না, পরিচিতি দেবার কথা না। তাহলে কিন্তু সেই সূত্রে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তার বাড়ি গিয়ে মা-বাবাকে হত্যা করবে, বোনের উপর করবে যৌন নির্যাতন, পুরো গ্রাম পুড়িয়ে দেবে। কিন্তু আরাধনা বলে কথা! দৈবাৎ গোপনে হাতে এসে গেল একটি বিদেশী পত্রিকায় এক রণাঙ্গণের মুক্তিযোদ্ধার ছবি। এক কলামের, ছোট্ট একটা নিউজ। উপরে লেখা বাংলাদেশী ফ্রিডম ফাইটার।
সম্ভবত সেটা ছিল ইংল্যান্ডের গার্ডিয়ান বা টাইমসের চিরকুট। আমি বাথরুমে লুকিয়ে ভাঁজকরা কাগজটা খুলে দেখি, মারে মা! কি সুন্দর! কি সুপুরুষ! লম্বা পেশিবহুল দেহ, ঘাড় অবধি ঝাঁকড়া চুল ও মুখভরা দাড়ি। জীর্ণ জিন্স ও টি-শার্ট পরা, হাতে এসএলআর এবং ক্রিসক্রস করে বুকে ঝুলছে গুলির মালা। আমিতো প্রায় ফিট।
আমাদের বাসায় তখন ফোন ছিল না। দৌড়ে-মৌড়ে পাশের রীনাপা’দের ফ্ল্যাটে গিয়ে বাবলীকে ফোন করি। নানান সংকেতে বুঝাই কি দেখেছি। তখন টেলিফোন ট্যাপ হতো। মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা, গেরিলা, মুজিবুর রহমান এসব শব্দ উচ্চারণ করা যেত না।
আমরা ততদিনে বুলবুল (আব্দুর রহিম বুলবুল), জন, বাবু (আহসান নেওয়াজ), মনি দাদা (মনিরুল হক) ও নাসিম (নাসিম সিদ্দিকি)কে দেখেছি। ওরা তো সব গেরিলা আর ভাই-বেরাদর ও বন্ধু। কিন্তু এ যে আমাদের স্বপ্নের নায়ক! মারে মা, কি সুন্দর দেখতে!
ন’মাস যুদ্ধের এক পর্যায়ে আমি আর বাবলী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। দু’জনেই ভেবেছিলাম মুক্তিযুদ্ধ থামবে বহু বছর পর। ততদিনে মেয়েরা পাক আর্মিদের দ্বারা আরও অত্যাচারিত হবে, প্রতি পরিবার কাউকে না কাউকে হারাবে, কোনও রাস্তা ঘাট আস্ত থাকবে না, বাড়ি থাকবে না, সব লুট হয়ে যাবে- এমন কি আমাদের কি হবে তাও জানি না।
সুতরাং তরুণ বয়সের চিন্তায় আমরা দু’জন নিজেদের যা আছে তার উইল করে যার যার বাসার দেয়ালচিত্রের ফ্রেমের নিচে আঠা দিয়ে রাখলাম। সে চলে গেল কুমিল্লা। সেখান থেকেই ওর ফুপাতো বোন আমেনা বেগম বকুল আগরতলা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিলো।
এদিকে ঢাকায়, আমার বড় বোন, বুজান মহসীন হলের পেছনে এলিফেন্ট রোডের বাড়ি থেকে ২৫ মার্চের প্রচণ্ড গোলাগুলি থেকে বেঁচে দু’টো যমজ শিশু নিয়ে হেঁটে ২৬ মার্চ আমাদের সোবহানবাগের ফ্ল্যাটে এসে উঠেছে। তার স্বামী প্রবাসে। এর মধ্যে নিরাপদ আস্তানা পাবার আগে আমাদের বাসায় খন্ডকালীন থেকে গেছেন খালামনি ও যশোরে বাড়ি লুটপাটের পর বড় মামার পরিবারও।
শফিক মামা আমার মা’র কাজিন। তিনি অনূর্ধ্ব ন’য়ের পাঁচ সন্তান ও মামীসহ ঢাকা ছেড়ে পালাতে গিয়ে অর্ধেক পথ থেকে ফিরে এসে তার বড় দু’মেয়েকে আল্লাহ সাক্ষী করে আম্মার হাতে সঁপে দিয়ে গেছেন। কিন্তু এখানেই শেষ না, আরও সঁপাসঁপির গল্প আছে।
নভেম্বরে যখন আমাদের সবারই জীবিত থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে এসেছে এবং বার বার আকাশ থেকে অনবরত গোলা বর্ষিত হচ্ছে। সাইরেন বাজলেই কুটিমুটি স্বপ্না ও রত্না নিজেরাই দৌড়ে প্যাসেজে গিয়ে দাঁড়ায়। মুশকিল হলো বুজানের একরকম দেখতে যমজ দু’টো। তখন বুজান ঘটা করে কেঁদেকুটে আল্লাহ সাক্ষী রেখে সাব্বিরকে আমার হাতে সঁপে দিয়ে বলেছিল, তুই যেদিকে পালাবি ওকে নিয়ে পালাস। তুই বাঁচলে আমার বাচ্চাটাও বাঁচবে রে শামীম। আর আমি শাকিলকে নিয়ে বেঁচে থাকলে আল্লাহ আমাদের মিলাবে। কি যে অবস্থা তার এবং আমার!
কিন্তু সেই ভয়াবহ সময়ও শেষ হলো। বিজয় ঘরে এলো। বাবলী ও আমি এবং আমাদের মতো অনেক তরুণ-তরুণীই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজগুলোর থেকে দলে দলে তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে, ঢাকায় এখানে সেখানে নানান স্বেচ্ছাসেবায় যুক্ত হয়েছি। মন খারাপ। কতজন ফেরেনি। বার বার মনে পড়ছে আমাদের বাংলা বিভাগের সতীর্থ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল শাহরিয়ার ও নজরুল ইসলাম এর কথা।
নজরুলের ছিল কোঁকড়া চুল ও টানা কাজল দেয়া তীক্ষ্ম চোখ আর উচ্চ কণ্ঠ। আর শাহরিয়ার ছিল ভীষণ নরম স্বভাবের, শ্যামলা রঙ আর ডাগর ডাগর চোখ। মনে পড়ছে, আমাদের প্রিয় শিক্ষকদের কথা। রাজাকাররা হত্যা করেছে তাদের। শহীদ মিনার গোলার আঘাতে চূর্ণ, জগন্নাথ হলের দেয়ালে দেয়ালে তখনো শহীদের রক্তচিহ্ন শুকিয়ে কালো হয়ে আছে, রমনার কালীমন্দির লুণ্ঠিত।
তবু এরই মাঝে আমরা স্বপ্ন দেখি নতুন এক অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তোলার। বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তিনি দিক নির্দেশনা দেবেন। আমাদের ভাঙা ব্রীজগুলো নিজেরাই গড়ে তুলবো। একটি একটি করে এয়ারপোর্টের রানওয়ের ওপরে ছড়ানো সব ইটের টুকরো তুলে দিয়ে বিদেশী প্লেন নামার ব্যবস্থা করবো। দরকার হলে ঘাস খেয়ে বাঁচবো।
বাবলী খুব ভোরে স্নান সেরে নীল ঢাকাই শাড়ি পরে উর্দু রোড থেকে রিক্সা করে রোকেয়া হলের সামনে আসত। আর আমিও আরেক টাঙাইলে গা জড়িয়ে সোবহানবাগ থেকে। তারপর একটি রিক্সা ছেড়ে অন্যটিতে উঠেই খলখলিয়ে উঠতাম। রিক্সার পেছনে ফুল ছড়ানোর মতো চুল ছড়িয়ে গান ধরতাম ‘আমার সোনার বাংলা’। আর্ট কলেজের সামনে যেতে না যেতেই আমাদের গানে গলা মেলাতেন রিক্সাচালক।
আমরা প্রথমে যেতাম হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল। যুদ্ধের কারণে রোগী ও হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু অভাব পড়েছে ডাক্তার ও নার্সের। সব ঢাকা ছেড়ে পালানো বা যুদ্ধে যুক্ত মানুষরা এখনও ফিরে আসেনি। আর তখনি আসে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধা দেখার এক অদ্ভুত সুযোগ।
আমরা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা নার্সিং করে চলে যাই শাহবাগের সামনে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে। সেখানে যুদ্ধ শেষে এসে হাল ধরেছেন কামাল লোহানী। আমরা দু’ই অস্থির তরুণী সেখানে গিয়ে ফুটফরমাশ থেকে শুরু করে, চা খাই, স্ক্রিপ্ট লিখি, কোরাসের শিল্পী শর্ট পড়লে গান গাই, এমনকি তরুণদের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করি। দেশ গড়তে হবে না!
রেডিওর কাজ না হয় জানি, আগেও করেছি, কিন্তু নার্সিং? আমাদের ছোট্ট একটা ইন্ডাকশন দিলেন সাদা শাড়ির উপর বেল্ট বাঁধা মোটাসোটা গম্ভীর গলাধারী এক মেট্রন। এই যে মেয়েরা, এত ছটফট করবেনা তো। তোমরা শুধু ওয়ার্ডের রোগীদের কফ-থুতুর পট ও ডাস্টবিন পরিষ্কার করবে, আর বিছানা বানাবে। কেবিনের দিকে যাবে না।
ওতেই আমাদের ছটফটানি আরও বেড়ে গেল। তক্কে তক্কে থাকি কেবিনগুলোয় কি হচ্ছে! একদিনেই জেনে গেলাম, সেখানে যুদ্ধাহত গেরিলা ও মুক্তিযোদ্ধাদের রাখা হচ্ছে। তক্কে তক্কে থেকে এবং একদিন সত্যি এসে পড়ি কাছাকাছি এক কেবিনে। এদিক ওদিক তাকিয়ে পায়ের পাতায় ভর করে ফিসফিসিয়ে দরজায় পা দিয়েছি কি দেইনি, অমনি ভেতর থেকে কড়া গলায় এক হুংকার, হু’জ দ্যাট?
আমার দুই কম্পমান কিট কিট করে পা ঘষে ভেতরে ঢুকেই দেখি, ওমা এ যে আমাদের স্বপ্নে দেখা, গার্ডিয়ানে দেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের মতনই একজন! কি রূপবান! ঘাড় অবধি চুল, গালে রুদ্রের (রুদ্র মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ) মতো দাড়ি। কি তীক্ষ্ণ চোখের চাওয়া। কিন্তু এ কি অবস্থা তার! ব্যান্ডেজ বাঁধা এক পা ছাদ থেকে কপিকলে লাগানো যন্ত্রে ঝুলছে। এক হাত গলায় বাধা। মাথায় সাদা ব্যান্ডেজ। স্প্লিনটারে ক্ষত-বিক্ষত গালেও গোলাপি টেপ। ঘষঘষা গলার স্বর। কিন্তু এর মধ্যে কঁকিয়ে কঁকিয়ে কিন্তু উচ্চস্বরে অনবরত শাপান্ত করে চলেছেন। কাকে? বাংলাদেশের রাজাকার গুষ্ঠিকে। আমারা না নড়তে না চড়তে পারি, না কিছু বলতে পারি। ইতোমধ্যে বাইরে পদশব্দ শুনে দ্রুত দিই দৌড়।
রেডিওতে গিয়ে সবাইকে গর্ব ভরে বলি এ ঘটনা। রাতে ঘুম আসে না। জানালা দিয়ে অন্ধকারে সোবহানবাগের শিউলি গাছের দিকে তাকিয়ে থাকি। গা শিউরে উঠে সত্যি সত্যি ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধা দেখেছি বলে। পরদিন দু’বন্ধু আবার সুযোগ খুঁজে সাধারণ রোগীদের বিছানা বালিশ পেতে, গল্পগুজব করে, ওদের ব্রেকফার্স্ট এগিয়ে দিয়েই দিলাম কেবিনের দিকে চম্পট।
কি অদম্য আগ্রহ আমাদের! এদিন তিনি অনেক শান্ত। কিন্তু সমান ক্ষুব্ধ। আমরা রেডিওতে ঢুকে স্পাইগিরি করেছি জেনে একটু গালি যুক্ত করে বল্লেন, হোয়ার ইজ দ্যাট নটোরিয়াস রীনা নাসের? আহমেদ কামাল? আমি খালি একবার বেরুলে হয়। ওই রাজাকারদের দেখেই ছাড়বো।
আমাদের হিরো এই তৃতীয় দিন ভাল করে আমাদের দিকে তাকালেন। মিষ্টি হাসলেন। গালে টোল পড়লো। আমার হার্টবিট বেড়ে গেল। কারো চোখে পড়ার আগে দ্রুত বেরিয়ে এলাম। কিন্তু আবারও আমার ঘুম হয় না। কিন্তু সকাল সকাল গিয়েই শুনি মোটা মেট্রন তলব পাঠিয়েছেন। কম্পমান আমরা সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই ওয়ার্নিং দিলেন। আরেকবার কেবিনের দিকে গেলে আমাদেরকে সার্ভিস থেকে উইথড্র করা হবে।
কিন্তু তিনি জানলেন কি করে? ওয়ার্ডে এসে শুনি গতকাল বিকেলে হুইল চেয়ারে এক হাতে স্যালাইন লটকে তিনি ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ডে শামীম আর বাবলীকে খুঁজে বেড়িয়ে সবাইকে তটস্থ ও তোলপাড় করে গেছেন। শুনে আমি আর কিছুই করতে পারি না। কোথাও মন লাগে না। হাসপাতালের বাইরে বাগানের লাল পাতাবাহারের ঝোঁপ গলিয়ে ঐ কেবিনের কোনার দিকে চেয়ে রই।
একদিন, দু’দিন করে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও বুকের শূন্যে পাখির ঝাঁপানো বন্ধ হয় না। বাবলী খুব নাজুক। রোদে হাঁটতে পারে না, পাখির মতো একটু একটু খায়। অল্পেই জ্বর হয়। তাই চতুর্থ দিনে আমি একা গেছি এবং প্রতিজ্ঞা করেছি রূপকুমারকে দেখবই। সেদিন আমি পরেছিলাম চাঁপা রঙের সূতি শাড়ি। হাতে খালামনির দেয়া দু’গাছা চুড়ি। পায়ে রোকেয়া হলের সামনে থেকে কেনা পাঁচ টাকার দু’স্ট্রাইপের বেনীর মতো ফ্ল্যাট চপ্পল। এতে একদম শব্দ হয় না।
বিড়ালীর মতো এগিয়ে যেতে যেতেই তাঁর কেবিনের ভেতর থেকে বেশ ক’টি কণ্ঠ ও আসবাব টানার চাকার শব্দ শুনে দ্রুত প্রবেশ করে দেখি, শূন্য ঘর। তিনি নেই। দু’জন নার্স নতুন রোগীর জন্য বিছানা বানাচ্ছেন। বাথরুমে ক্লিনার জল ছেড়েছে। আমার চোখ ভিজে এলো। হাসপালের কাজ শেষে রিক্সায় শাহবাগের দিকে রওয়ানা হলাম।
রেডিওতে ফিরে, আমি ম্লান মুখে মোজাক্কের ভাইর (মোহাম্মদ মোজাক্কের) কক্ষ থেকে ফোনে বাবলীকে খবরটা জানাই। বুঝি তারও মন খারাপ হয়ে গেল। আজও সে কথা মনে হলে জোরে জোরে বলি, বয়সটা ছিল যুদ্ধে যাবার। বয়সটা ছিল প্রেমে পড়ার।
এনএস/
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।