বর্ষায় বাড়ির বিশেষ যত্ন
প্রকাশিত : ০৮:৫৮, ১৩ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ১৮:৫০, ১৪ জুলাই ২০১৭

টানা বর্ষণের পর বাড়িতে একটা স্যাঁতসেঁতে ভাব বিরাজ করে। ঘরের মেঝে আদ্র হয়ে যায়। অনেক সময় মেঝে ঘেমে যায়। পোশাক আশাকে ভিন্ন রকমের একটা গন্ধ চলে আসে। জিনিসপত্র যেন কেমন হয়ে যায়। সবকিছুতে ভেজা ভেজা ভাব থাকে। এজন্য বর্ষাকালে ব্যবহার্য্য জিনিসপত্রের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। আবাসস্থল রাখতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
বর্ষার আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের নানা রকম জিনিসে পরিবর্তন আনতে হয়। এমনকি আসবাবসহ দরজা-জানালার পর্দা, পাপোশও বদলে ফেলুন। মৌসুম উপযোগী পোশাক ব্যবহার করা উচিত।
জানালার পাশে আসবাব নয়
বর্ষায় আপনার বাড়ি রাখুন পরিষ্কার। ঘরের মধ্যে জানালার পাশে কোনো আসবাব থাকলে তা সরিয়ে অন্যদিকে রাখুন, যাতে জানালা দিয়ে পানি এসে আসবাবগুলো ভিজে নষ্ট না হয়।
করিডোরে ফুলের টব নয়
করিডোরে ফুলের টব থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন। না হয় সেটিতে পানি জমে মশার বাসস্থানে পরিণত হবে। মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়া ও ডেঙ্গু হতে পারে।
মেঝেতে পানি ফেলবেন না
ঘরের মেঝেতে পানি পড়লে সহজে শুকায় না। কারণ এ সময় রোদের দেখা মেলে কালেভদ্রে। তাই ঘর নোংরা হয় তাড়াতাড়ি। বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে মেঝের পানি মুছে ফেলতে হবে। এছাড়া ঘর ধোয়ামোছার সঙ্গে সঙ্গে ফেন ছেড়ে দিয়ে শুকিয়ে ফেলতে হবে। না হয় স্যাঁতস্যাঁতে ভাব সহজে দূর হবে না। মেঝেতে কার্পেট ব্যবহার করাই উত্তম। কারণ এ সময় থেমে থেমে অথবা সারাদিন বৃষ্টি হয়। তাই বারবার ঘর মোছার চেয়ে কার্পেটই উপযুক্ত।
স্যাভলন দিয়ে মেঝে পরিস্কার
এ সময় পোকা-মাকড় ও রোগ-জীবাণুর সংখ্যা বেড়ে যায়। তাই রোজ অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল লোশন যেমন-স্যাভলন, হেক্সাসল দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করুন। এতে রোগ-জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আর দুয়েক দিন পরপর পোকা মারার বিষয় বাড়িতে স্প্রে করুণ। তবে এক্ষেত্রে সাবধান যেন শিশুরা বিষ থেকে দূরে থাকে।
রান্নাঘরের বিশেষ যত্ন
বাদল দিনে রান্নাঘর নিয়ে বিশেষ চিন্তায় থাকতে হয় গৃহিনীদের। প্রতিবার রান্নার পর রান্নাঘরের মেঝে পরিস্কার করতে হয়। বাইরে রোদ না থাকলে সহজে শুকায় না। তাই প্রতিবার ধোয়ামোছার পর ফ্যান ছেড়ে রান্নাঘর শুকিয়ে নিন। দিনে অন্তত একবার জীবানুনাশক লোশন ব্যবহার করুন। থালা বাসন ধোয়ার পর টেবিলে ছড়িয়ে রেখে শুকিয়ে ফেলবেন।
দরজার সামনে মোটা ম্যাট্রেস
প্রধান দরজার সামনে অবশ্যই মোটা ধরনের পরিষ্কার পাপোশ রাখুন, যাতে ঘরে ঢোকার সময় পা পরিষ্কার করে নিতে পারেন। সম্ভব হলে প্রতি মাসে পাপোশটি বদলে ফেলুন।
কাপড়ের বিশেষ যত্ন
কাপড়চোপড় কোনো এলোমেলো করে জমিয়ে না রেখে ভালোভাবে পরিষ্কার করে আলমারিতে রাখুন। এতে গন্ধের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কাপড়ও ভালো থাকবে। আলমারিতে বর্ষায় পড়ার উপযোগি কাপড়গুলোকে উপরে রাখুন।
কাপড় পরিস্কার
বেশি কাপড় একসঙ্গে ধুবেন না। কারণ রোদ না থাকারই আশঙ্কা রয়ে যায়। কাপড় ঠিকমত না শুকাতে পারলে উৎকট গন্ধ বের হবে।
ব্যাগের বিশেষ যত্ন
আপনার ব্যবহৃত চামড়ার মানিব্যাগ ব্যাগ পানিতে ভিজে গেলে বাড়িতে এসে অবশ্যই কোনো কিছু দিয়ে মুছে শুকিয়ে নিন। কারণ পানিযুক্ত ভাব থাকলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অফিস ব্যাগটির বিশেষ যন্ত নিন। ব্যাগটি কাপড়ের হলে এতে তাতে পানি লাগলে ফ্যান ছেড়ে কিংবা রোদে দিয়ে ভালোমত শুকিয়ে নিন।
পর্দা-চাদর বদলে ফেলুন
দরজা-জানালার পর্দা ও বিছানার চাদর ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকুন। বর্ষাকালে পাতলা ফেব্রিকের পর্দা ব্যবহার করুন। যাতে পানির ছিটেফোটা লাগলে সহজেই শুকিয়ে যায়। সুতি কাপড়ের বিছানা, চাদর, বালিশের কভার ব্যবহার করুন। যাতে এগুলোর ধোয়ার পর দ্রুত শুকিয়ে যায়।
জুতা
বর্ষায় এমন চটিজোড়া ব্যবহার করুণ যেটি পানি লাগলেও ক্ষতি হবে না। সহজে শুকিয়ে যাবে। চামড়ার জুতো ভিজে গেলে দ্রুত শুকিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করুণ। না হয় সেটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
প্রতিদিন মশারি কিংবা অ্যারোসল ব্যবহার করুন
বর্ষা আসার আগেই মশারি ধুয়ে মুছে পরিস্কার করা উচিত। এসময় মশারি ছাড়া ঘুমানো ঠিক হবে না। সন্ধ্যায় দরজা জানালা বন্ধ করে অ্যারোসল ব্যবহার করুন।
//এআর