ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বাংলাদেশিদের বয়কট নয়, নিরাপত্তা দেব: কলকাতার ব্যবসায়ীরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০০, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

বাংলাদেশি পর্যটকদের উদ্দেশ্যে কলকাতা ব্যবসায়ীদের বার্তা ‘আমরা বাংলাদেশিদের বয়কট করব না। তারা যেন নিশ্চিন্তে এখানে আসেন। যতটা পারবো তাদেরকে নিরাপত্তা দেব।’

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার কিছু হোটেল বাংলাদেশি পর্যটকদের বয়কটের ডাক দিয়েছে। কিন্তু সেই পথে হাঁটলো না কলকাতার নিউ মার্কেটের ‘মার্কুইস স্ট্রিট-ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’, ‘নিউ মার্কেট ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘হোটেল অনার্স অ্যাসোসিয়েশন’। 

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে করে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মার্কুইস স্ট্রিট-ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির যুগ্ম সচিব মনতোষ সরকার বলেন, ‘নিউমার্কেট মূলত বাংলাদেশ ভিত্তিক অঞ্চল। বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে এখানকার মানি এক্সচেঞ্জ, হোটেল, পর্যটক ব্যবসা চলছে। তাই তাদের অনুপস্থিতি আমাদের এখানে প্রভাব ফেলছে। যদিও বাংলাদেশকে আমরা বিদেশি পর্যটক হিসেবে দেখি না, তারা আমাদের ঘরের সদস্য। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পর্যটকের সংখ্যা অনেকই কম। তবে আশা করি, আগামী দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য কিছু গুজব ছড়ানো হচ্ছে, কিন্তু সেদিকে কান না দিয়ে বাংলাদেশের পর্যটকদের জানাবো তারা এখানে আসুন। কারণ দুই দেশের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশেই ব্যবসায়ীরা রয়েছেন তাই, আমাদের উভয়পক্ষকেই এই সমস্যার সমাধানের জন্য এগিয়ে আসতে হবে।’

কলকাতার এমআরএল হোটেলের মালিক মনতোষ সরকার জানান, আমার হোটেলের ৮০ শতাংশ পর্যটক বাংলাদেশি, বাকি ২০ শতাংশ ভারতীয় পর্যটক। ডিসেম্বরে বাংলাদেশের পর্যটক আসছেন কিন্তু সেই সংখ্যাটা এবার খুবই কম। আমরা এটুকুই বলতে চাই, বাংলাদেশিরা সকলেই আসবেন, তাদের স্বাগত। তারা সেবা পায় বলেই আমাদের এখানে আসে। আমরাও আমাদের সাধ্য মতো তাদের সেই পরিষেবা দেবো।

এক্সপোর্ট ইমপোর্ট, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়, পরিবহন ব্যবসায়ী মুহাম্মদ আলী হোসেইন শেখ জানান, ‘৫ আগস্টের পর থেকে আমার ব্যবসা ডুবতে বসেছে। আমাদের দেশ ভারত, ওপারে যারা আছে তাদের দেশ বাংলাদেশ।

ভিসা প্রক্রিয়া শিথিল করার দাবি জানিয়ে আলী হোসেন জানান, বর্তমানে যে অবস্থা জারি রয়েছে, তাতে বাংলাদেশের চাহিদা মিটছে না। সেইসাথে মাল্টিপল ভিসা, এমপ্লয়মেন্ট ভিসা চালু করা দরকার। তিন মাসের জন্য এই ভিসা দেওয়া যেতে পারে। যদিও ভিসা বিষয়টি দুই দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে মনে করেন তিনি। 

মার্কুইস স্ট্রিট-ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি মনতোষ সাহা বলেন, বাংলাদেশ থেকে পর্যটকদের যে ঢল ছিল, সেটা এখন নেই। যার কারণে আমরা সবাই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তেমনিভাবে বাংলাদেশিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে সবার আগে আমার দেশ। দুই দেশের সরকারকে নিজেদের মধ্যে বসে সুষ্ঠু সমাধান বের করার জন্য আহ্বান জানান মনতোষ সাহা। 

তিনি জানান, ‘মূলত ডিসেম্বর থেকে সিজন শুরু হয়। প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত হাজার বাংলাদেশি নাগরিক এই কলকাতায় আসেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকদের সংখ্যা ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।’

সংগঠনের সদস্য মোহাম্মদ কামরুদ্দিন মালিক জানান, এখানে ধর্মের কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা সকলেই ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের পর্যটকদের মধ্যে একটা আশঙ্কা আছে যে কলকাতায় গেলে কি হবে? কিন্তু আমি বলব আপনার নিশ্চিন্তে আসুন। ব্যবসা আজকে নেই, কালকে আবার ফিরে আসবে। কিন্তু মানুষের মধ্যে যে বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেলে সেটা ফিরে আসা কঠিন। কারো মনে যেন কোনো আতঙ্ক না থাকে। বাংলাদেশিদের জন্য কলকাতায় হোটেল পাওয়া যাচ্ছে না বলে একটা গুজব রটেছে- এতে কান দেয়া উচিত নয়।

গ্রীন লাইন পরিবহনের মালিক সঞ্জয় মজুমদার বলেন, কলকাতা নিউমার্কেটে প্রচুর হোটেল, দোকান রয়েছে। এর ওপর বহু মানুষের কর্মসংস্থান নির্ভর করে। কিন্তু বাংলাদেশি পর্যটক মহাশয় সেখানে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু লোকের রুটি-রুজি কমে গেছে। এই অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে এখানকার অর্থনীতিতে বড়সড় প্রভাব পড়বে।’

সৌহার্দ্য বাসের মালিক অবনী ঘোষ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়কে দায়ী করে বলেন, কিছু কিছু খবরের কারণে দুই পাড়েই প্রভাব পড়ছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রির আসন্ন বাংলাদেশ সফর নিয়ে আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন এই শহরে দুই দেশের যে জটিলতা সেটা খুলতে পারে। ভিসা প্রক্রিয়াতেও কিছুটা শীতলতা আসতে পারে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি