বাংলাদেশের বেসরকারি খাতকে সাহায্য করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশিত : ২২:০৪, ১ নভেম্বর ২০২০ | আপডেট: ২৩:১৯, ১ নভেম্বর ২০২০
তৈরি পোশাক খাতের (আরএমজি) উপর নির্ভরতা কমাতে রপ্তানি খাতে বৈচিত্র আনতে বাংলাদেশের বেসরকারী খাতে সহায়তা করতে আগ্রহী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ইউএসএইড-এর ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বনি গ্লিক বলেন, আমরা বাংলাদেশকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি, কিভাবে বাংলাদেশ ডিজিটাল অর্থনীতিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তার বেসরকারি খাতকে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে নিতে পারে। রপ্তানি বৈচিত্রের অভাব বাংলাদেশের অন্যতম চ্যালেঞ্জ কারণ গত কয়েক দশকে দেশটির রপ্তানি মূলত শ্রমনির্ভর আরএমজি খাতে মনোনিবেশ করেছে।
২৮ ও ২৯ অক্টোবর ভিয়েতনামের হ্যানয়ে দুই দিনব্যাপী ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরাম (আইপিবিএফ) শেষ হওয়ার পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইকোনমিক গ্রোথ, এনার্জি এবং এনভায়রনমেন্ট কিথ ক্রাচের সঙ্গে এক টেলিফোন ব্রিফিংয়ে গ্লিক এই মন্তব্য করেন।
আইপিবিএফ চলাকালে ইউএসএআইডি বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং ভিয়েতনামে কোভিডের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাপ্লাই চেইনের কর্মী বিশেষত মহিলাদের সহায়তা করতে মার্কিন খুচরা, পোশাক এবং পাদুকা সংস্থাগুলো এবং শিল্প সমিতিগুলোর একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে।
গ্লিক বলেন, আমরা যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি তা আগামী বছরে একসঙ্গে কাজ করার একটি অভিপ্রায় প্রতিষ্ঠা করেছে যা প্রধানত: এই চারটি দেশের কোম্পানির সরবরাহ চেইনের নারী শ্রমিকদের কষ্ট দূর করতে সাহায্য করবে। তিনি আরও বলেন, এই সমঝোতা স্মারক, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে আরো স্থিতিশীল খাত এবং কর্মী বৃদ্ধিতে সহায়তা করা, কারখানার শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণ বৃদ্ধি এবং নারী শ্রমিকদের আরও ভালোভাবে ক্ষমতায়ন।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক জ্বালানি বাজারে এগিয়ে নিতে ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের নতুন কার্যক্রম ঘোষণা করেছে ইউএসএইড।
কিথ ক্রাচ ট্রাম্প প্রশাসনের ‘ক্লিন নেটওয়ার্ক প্রোগ্রাম’ তুলে ধরেন যা কতৃত্ববাদী বিদ্বেষপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে মুক্ত বিশ্বের কাছে তথ্য গোপনীয়তা, নিরাপত্তা, মানবাধিকার এবং নীতিগত সহযোগিতার দীর্ঘমেয়াদী হুমকি তুলে ধরেছে। তিনি বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) তথ্য গোপনীয়তা, নিরাপত্তা, মানবাধিকার এবং বিশস্ত সহযোগিতার দীর্ঘমেয়াদী হুমকি মোকাবেলার জন্য ক্লিন নেটওয়ার্ক একটি ব্যাপক পদ্ধতি।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, ভারত এবং কোরিয়ার শীর্ষ টেলিকম কোম্পানি ক্লিন নেটওয়ার্কের সদস্য হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভয় দেখানো ও প্রতিশোধ নেওয়ার সিসিপি’র হুমকির কৌশলগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ঐক্য ও সংহতির জন্য সংখ্যা ও শক্তি সরবরাহ করার কারণে নেটওয়ার্কটি দ্রুত সাফল্য অর্জন করেছে।
গ্লিক বলেন, আজকের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জের বাজার ভিত্তিক এবং এন্টারপ্রাইজ চালিত সমাধান অনুসরণ করতে আমরা বেসরকারী খাতের সঙ্গে কাজ করাকে অগ্রাধিকার প্রদান করি… কারণ বেসরকারী উদ্যোগ এবং মুক্ত বাজার দেশগুলোর স্বনির্ভরতা এবং সমৃদ্ধি অর্জনে সাহায্য করার জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার প্রদান করে।
তিনজন মার্কিন মন্ত্রী- পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইকেল পম্পেও, বাণিজ্য মন্ত্রী উইলবার রস এবং জ্বালানী মন্ত্রী ড্যান ব্রুইলেট এই ফোরামে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারসহ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৫ জন মার্কিন দূত ও এই ফোরামে যোগ দেন।
কোভিড-১৯ মহামারী থেকে শুরু করে জ্বালানী ও অবকাঠামো, ডিজিটাল অর্থনীতি, বাজার সংযোগ, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, যুক্তরাষ্ট্র-ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারিত্ব এবং বাণিজ্যিক সুযোগ এবং নারী অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। জানা যায়, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে প্রথম ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্য ফোরামের (আইপিবিএফ) পর থেকে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সক্রিয় ১২ হাজার মার্কিন কোম্পানিকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ।- বাসস
এসি
আরও পড়ুন