বাংলাদেশের হতাশা, চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া
প্রকাশিত : ১৮:০২, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২১:০৯, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
চার উইকেট হাতে রেখে ২৫৩ রানে আগের দিন শেষ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে ছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের শেষটা আশানুরূপ না হওয়ায় চালকের আসনে বসেছে অষ্ট্রেলিয়া। মঙ্গলবার চার উইকেটে বাংলাদেশ মাত্র ৫২ রান যোগ করতে সক্ষম হয়। পরে নির্ধারিত সময়ে ব্যাট করতে নেমে দিনশেষে অষ্ট্রেলিয়া মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে করে ২২৫ রান।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর নাথান লিওনের বলের সামনে একের পর এক খাবি খায় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তখনও আশার কথা ছিল এটাও বুঝি ঢাকার মতো উইকেট। কিন্তু দ্বিতীয় দিন লাঞ্চের আগে টাইগারদের অলআউট হয়ে যাওয়ায় সব ধারণা বদলে যায়। ব্যাট করতে নেমে মুহূর্তেই নায়ক বনে যান স্টিভেন স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নার। হাফ সেঞ্চুরি করে স্মিথ বিদায় নিলেও তার দেখানো পথটাকে বেশ আপনই করে নিয়েছেন চার নম্বরে নামা পিটার হ্যান্ডসকম্ব। ডেভিড ওয়ার্নার তো আছেনই। দ্বিতীয় দিন শেষে তাই বলতেই হচ্ছে চট্টগ্রাম টেস্টে এখন চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া। যদিও বাংলাদেশের চেয়ে এখনও ৮০ রান পিছিয়ে তারা তবুও, বলা যায় ম্যাচে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই। ওয়ার্নার এবং হ্যান্ডসকম্ব পুরোপুরি সেট হয়ে গেছেন উইকেটে। তারা দু’জন রয়েছেন যথাক্রমে ৮৮ এবং ৬৯ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৬৪ ওভারে ২২৫/২ (রেনশ ৪, ওয়ার্নার ৮৮*, স্মিথ ৫৮, হ্যান্ডসকম ৬৯*; মিরাজ ০/৫৩, মুস্তাফিজ ১/৪৫, সাকিব ০/৫২, তাইজুল ১/৫০, নাসির ০/৪, মুমিনুল ০/৬, সাব্বির ০/৯)
প্রথম টেস্টে জ্বলে উঠতে পারেননি কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। তবে চট্টগ্রামে বোলিংয়ে এসে কিছুটা বদলে গেলেন। তার বলে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মুশফিককে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ওপেনার ম্যাট রেনশ। তিনি বিদায় নেন ৪ রানে। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ওই একটিই সাফল্য ছিল টাইগারদের। বিরতির পর শুরুর ধাক্কা সামাল দেন স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। দুজনে মিলে গড়েছেন ৯৩ রানের জুটি। চিন্তায় ফেলে দেওয়া এই জুটি ভেঙ্গেছেন তাইজুল। ২৯তম ওভারের প্রথম বলে কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু তিনি এনে দিয়েছেন স্মিথকে বোল্ড করে। ৯৪ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক, যেখানে ছিল ৮টি চার। তবে এরপর ওয়ার্নার ও হ্যান্ডসকম্বের ১২৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটির কারণে টাইগারদের দ্বিতীয় দিন শেষ হয়েছে হতাশায়।
এর আগে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে নাসির হোসেন ও মুশফিক এগিয়ে নিচ্ছিলেন বাংলাদেশের ইনিংস। অথচ নাথান দিনের ওভার শুরু করতে আসার পরই বাধে বিপত্তি। এক কথায় দুর্ভাগ্যই বলতে হবে মুশফিকের। পা বাড়িয়েছিলেন খেলতে। কিন্তু স্পিন করতে থাকা বল ব্যাটের কোনায় লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। মুশফিক বিদায় নেন ৬৮ রানে। ১৬৬ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার।
এরপর নাসির মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে লেজের দিকে গড়ছিলেন জুটি। সঙ্গে পুঁজিটাকেও ৩০০ রানের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছিলেন। এর আগে দলীয় ২৯৩ রানে নাসিরকে ম্যাথু ওয়েডের তালুবন্দী করান অ্যাস্টন অ্যাগার। নাসির ৯৭ বলে ৪৫ করে ফেরেন। ৫ রানের জন্য মিস করলেন ফিফটি। যেখানে ছিল ৫টি চার। দীর্ঘদিন পর টেস্ট দলে ফিরলেও থিতু হতে পারলেন না বেশিক্ষণ। এরপর আবারও উইকেটের পতন। রানের প্রান্ত বদল করতে গেলে ডেভিড ওয়ার্নার আগেই স্টাম্প ভেঙে দেন। ১১ রানে বিদায় নেন মিরাজ। এরপর ছয় মেরে স্কোর ৩০০ ছাড়া করেন তাইজুল। কিন্তু তাইজুলকে এরপরেই স্লিপে তালুবন্দী করান নাথান লিওন। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ৩০৫ রানে।
নাথান লিওন একাই ৯৪ রানে নিয়েছেন ৭ উইকেট। দুটি নেন অ্যাস্টন অ্যাগার।
ডব্লিউএন