ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করা কি সম্ভব?  

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০১, ২০ নভেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

আগামী ছয় মাসের জন্য বাংলাদেশে সকল পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ `বিটিআরসি`কে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশের হাইকোর্ট।     

হাইকোর্টের ঐ বিবৃতিতে বিটিআরসি`র কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে কেন ছয় মাসের পর আরো দীর্ঘ সময়ের জন্য পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ রাখা হবে না।

বিটিআরসি`র চেয়ারম্যান জহিরুল হক বিবিসিকে নিশ্চিত করেন যে তারা হাই কোর্টের আদেশ সম্পর্কে অবগত হয়েছেন।

জহিরুল হক বলেন, "আমাদের আইনি বিভাগ এবিষয়ে তৎপর রয়েছে, আদেশটা আমাদের হাতে এসে পৌঁছালেই আমরা এবিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।"

হাইকোর্টের এই নির্দেশনার বাস্তবায়ন কতটা কার্যকরভাবে করা সম্ভব সেই প্রশ্ন করা হলে জহুরুল হক বলেন, "৮০ ভাগ পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করতে পারবো বলে আমাদের প্রত্যাশা রয়েছে।"

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও প্রযুক্তি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক বি.এম. মইনুল হোসেন মনে করেন, ৮০ ভাগ পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব একটি কাজ।

"বিশ্বে হাজার হাজার পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট রয়েছে, সব ওয়েবসাইট বন্ধ করা, এমনকি ৮০ ভাগ বন্ধ করাও টেকনিক্যালি অসম্ভব একটি কাজ", বলেন মইনুল হোসেন।

তবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটের ব্যবহার কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশে জনপ্রিয় সাইট বন্ধ করা
মইনুল হোসেন জানান, সব পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইট বন্ধ করা না গেলেও বাংলাদেশ থেকে যেই সাইটগুলো বেশি ব্রাউজ হয় সেগুলোর তালিকা বের করে সেগুলো বন্ধ করা যেতে পারে।

"বাংলাদেশে কোন পর্ন সাইটগুলো বেশি ব্রাউজ হয়, সেই তালিকা থেকে পাওয়া সাইটগুলো বন্ধ করা যেতে পারে।"

জনপ্রিয় সাইটগুলো বন্ধ করা গেলে মানুষ নিরুৎসাহিত হয়ে পর্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করা কমিয়ে দিতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেন মইনুল হোসেন।

তবে এভাবে পর্ন ব্যবহারের হার এবং ওয়েবসাইটের গতি কমলেও মি. হোসেন নিশ্চিত করেন তালিকার বাইরের অসংখ্য পর্ন ওয়েবসাইট তখনও ব্যবহার করা সম্ভব থাকবে।

ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি

কোনো ওয়েবসাইট বন্ধ করতে হলে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঐ ওয়েবসাইটের ঠিকানা জানিয়ে নির্দেশনা দেয়া হয় যেন সেসব ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়।

মি. মইনুল হোসেন জানান, "ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে নির্দেশনা পাঠানোর ওপর নিয়মিত অনুসন্ধান করা যেতে পারে যে তারা নির্দেশনা সঠিকভাবে মেনে ওয়েবসাইট বন্ধ রেখেছে কি না।"

তবে মি. হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করেন, প্রযুক্তিগত জ্ঞান যাদের রয়েছে, তারা চাইলে যে কোনো নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন।

"সরকার কোনো একটি ওয়েবসাইট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও সাধারণ মানুষ বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে ঐ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছে - এমন ঘটনা দেশে এর আগেও অনেকবার ঘটেছে।"

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
মি. হোসেন বলেন, হাজার হাজার পর্ন ওয়েবসাইটের তালিকা থেকে কয়েকটা ওয়েবসাইট বন্ধ করা কার্যত অসম্ভব।

"তবে বাংলাদেশ থেকে কোন কোন পর্ন ওয়েবসাইট বেশি ব্যবহৃত হয়, সেই তালিকা কিছুদিন পরপর হালনাগাদ করে এবং নতুন করে তৈরি করে নিয়মিতভাবে ওয়েবসাইট ব্লক করা যেতে পারে।"

অর্থাৎ প্রথম দফায় তালিকা তৈরি করে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ওয়েবসাইট বন্ধ করার কিছুদিন পর আবারো তালিকা তৈরি করে সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্ন ওয়েবসাইটের দ্বিতীয় তালিকা তৈরি করা।

এভাবে নিয়মিত বিরতিতে তালিকা তৈরি করে ওয়েবসাইট ব্লক করলে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনেকগুলো ওয়েবসাইট বন্ধ করা সম্ভব হতে পারে বলে মন্তব্য করেন মি. হোসেন।

তবে মি. মইনুল হোসেনের মতে, পর্নোগ্রাফি আসক্তি একটি সামাজিক ব্যাধি। কাজেই প্রযুক্তিগতভাবে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা না করে সামাজিকভাবে এটি মোকাবেলা করা উচিত। সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসি  
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি