শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদীর গতিশীল নেতৃত্ব
বাংলাদেশ ও ভারতকে পৌঁছাবে পররাষ্ট্রিক সুগভীরে
প্রকাশিত : ২২:৫১, ৫ অক্টোবর ২০২৩
বাংলাদেশ ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক হবে শক্তিশালী ও নৈকট্যপূর্ণ। বাণিজ্য কিংবা সীমান্ত সবখানে বিরাজ করবে শান্তি। এমন দাবি করে দুদেশের মধ্যে ভিসামু্ক্ত যাতায়াত চান পররাষ্ট্র মন্ত্রী। সিলেটে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী ১১তম বাংলাদেশ ভারত ফ্রেন্ডশিপ সংলাপে দুদেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিবৃন্দ এসব বলেন। প্রথম দিন বৃহস্পতিবার গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্টে বিকেল ৪ টায় শুরু হয় উদ্ভোধনী পর্ব। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে উদ্ভোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরী এমপি। বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ের বড় একটি প্রতিনিধি দল এ সংলাপে অংশ নিচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গতিশীল নেতৃত্বের কারনে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন অনেক গভীরে। ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায়। এ সম্পর্ক দিনে দিনে আরো সুসংহত হচ্ছে। স্পীকার বলেন নেভারহুড ডিপ্লোমেসির বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি ঘটছে। ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্কও এর বাইরে নয়। ইতিমধ্যে দু দেশের সম্পর্কে অভূতপূর্ণ উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে স্পীকার বলেন- নিজেদের কল্যাণে দুদেশকে একযোগে কাজ করতে হবে। গঙ্গা চুক্তি সম্পন্ন হলেও তিস্তা এখনো ঝুলে রয়েছে-সেটিও বাস্তবায়নে দুদেশ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দুদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষে-মানুষে সম্পর্ক বাড়ানোও জরুরী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সংসদীয় কুটনীতি জনপ্রিয় হচ্ছে উল্লেখ করে স্পীকার বলেন, ভারত-বাংলাদেশের পার্লামেন্টকেও এভাবেই কাজ করতে হবে। কারণ দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে দুদেশের সংসদের মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানোর দরকার। এছাড়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারী সংসদ সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন, বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং নেভারহুড মডেলের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ-ভারত এখন সম্পর্কের স্বর্ণালী সময় অতিক্রম করছে। দু দেশের মধ্যে এই সংলাপ সম্পর্ক বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। আমরা সবসময় মনে করি ভারত বাংলাদেশের বিশ্বস্থ বন্ধু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায় দাবী করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, এ ধরনের সংলাপ থেকে আমরা প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারবো।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন- তলে তলে কিছু হয়ে থাকলে আমি জানিনা। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি একথা বলেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি ভিসানীতি নিয়ে বলেছেন, কোথায় স্যাংশন, কোথায় ভিসানীতি? তলে তলে আপস হয়ে গেছে। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিস্তার পানি বন্টনের বিষয়ে নীতিগতভাবে বাংলাদেশ ও ভারত এক বলেও জানান। কোনো একটা কারণে এটি আটকে আছে, সময়ের সাথে ঠিক হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন- আগামীতে ভারতের সাথে ভিসামুক্ত সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মুনতাসির মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ভারতের সাবেক মন্ত্রী শ্রী এম জে আকবর, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার মি. প্রণয় ভার্মা ও ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য স্বপন দাশ গুপ্ত। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের সংসদ সদস্যবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ উচ্চ পর্যায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক সুদূঢ় করতে এবং উভয় দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ব্যবসা উন্নয়নের স্বার্থে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই সংলাপ শুরু হয়েছে। সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে ৬ জন মন্ত্রী, ২০ জন সংসদ সদস্যসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নিয়েছেন। সংলাপ উপলক্ষে ভারত থেকে ১৪০ জনের প্রতিনিধি দল সিলেট সংলাপে অংশ নেন। এ এস এম সামছুল আরেফিন যিনি এ অনুষ্ঠানের আয়োজকদের প্রধান ও
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিস। তাঁর অভিমত, ১১ তম এ আনুষ্ঠানিকতা দুদেশের সম্পর্ক অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। আমাদের আশা, নির্বাচনের আগে ভিন্ন এক ভারতকে আবিষ্কার করবে বাংলাদেশ।
//আরবি
আরও পড়ুন