ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

বাজেটে পুঁজিবাজার বিষয়ে প্রণোদনা থাকবে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৯:২১, ২৫ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ২০:৫১, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

আসন্ন বাজেটে পুঁজিবাজার বিষয়ে কিছু না কিছু প্রণোদনা থাকবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এখন বাজার ভালো হওয়ার কথা। কিন্তু তা না হয়ে খারাপ হচ্ছে। এটি যারা করে তারা বুঝে শুনেই করে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর হব।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে দেশের বিভিন্ন এনজিওর নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিক এবং ইকোনমিকস রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় পুঁজিবাজারকে সিংহ-ছাগলের বাজার বলে মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে পুঁজিবাজারে ৫০ কোটি নয়, যদি পাঁচ লাখ কোটি টাকাও দেয়া হয় তাহলেও শেষ হয়ে যাবে।

মন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকের পর আমি বললাম বর্তমান বাজার যে খারাপ হচ্ছে এর পেছনে কেউ আছে। পরদিন ১০০ পয়েন্ট পড়ে গেল। যদি পুঁজিবাজার খারাপ অবস্থা বলতাম তাহলে কি হতো।

বাজারে দুটি পক্ষ রয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ দুটি পক্ষের মধ্যে এক পক্ষ সিংহ অপরটি ছাগলের বাচ্চা। এ দুটোকে এক করা সম্ভব নয়। হয় পুঁজিবাজার নিজ থেকে ভালো হবে, না হলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া এ বাজার ভালো করা সম্ভব নয় বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

পুঁজিবাজার বুঝিয়ে ঠিক করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা কতজনকে বুঝাবো। দেশব্যাপী বিনিয়োগকারী রয়েছে। পুঁজিবাজারে শত শত কম্পোনেন্ট। এর একটি ঠিক করে ভালো করা সম্ভব নয়। তাই আমাদের সবাইকে বোঝাতে হবে যেন পুঁজিবাজারে না বুঝে কেউ না আসে। পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পুঁজিবাজারের উন্নতি ছাড়া দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অভয় দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজার নিয়ে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। দেশের অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করা হবে। আমরা বারবার এ বাজারকে নিয়ে নাজুক অবস্থায় পড়তে চাই না। মানুষের গালাগালি শুনতে চাই না। এ জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নেব।

এসময় ব্যাংক ঋণে সুদের হার নিয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। সুদের হার কমিয়ে আনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণে সুদের হার বেশি। এত বেশি সুদ দিয়ে কখনোই ব্যবসা করা যাবে না। সুদের ওপর নতুন করে সুদ আরোপ করা হচ্ছে। আগামীতে সুদের হার অনেক কমিয়ে নিয়ে আসা হবে, যেন ঋণখেলাপি না হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা খুব ভালো আছে, এটা বলব না। তবে খুব খারাপও নেই। এ খাতের উন্নয়নে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি হচ্ছে। অনেকেই খেলাপি ঋণের বিপরীতে কোনো উদ্যোগ নিতে পারছে না। মামলা করতে পারছে না। এসব বিষয়ে আসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি উদ্যোগ নেবে।

মন্ত্রী বলেন, আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন। অসততা আমাকে স্পর্শ করেনি, করবেও না। আমি অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। সাধারণ মানুষের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে।’ এসময় দেশের উন্নয়নে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

অর্থ পাচার রোধ করতে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আসবে সেগুলো শতভাগ স্ক্যানিং হয়ে আসবে। আবার যেসব পণ্য রফতানি হবে সেগুলোও শতভাগ স্ক্যানিং করা হবে। তাছাড়া র‌্যান্ডম স্যাম্পলিংয়ের মাধ্যমে পরিদর্শন করার ব্যবস্থা করা হবে।

সভায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরকে//

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি