বিনিয়োগ বাড়াতে আর্থিক খাতে সংস্কারের পরামর্শ
প্রকাশিত : ১৫:৩২, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮
প্রবৃদ্ধি অর্জনে সঠিক পরিকল্পনা ও নীতির সংস্কার আনার পরামর্শ দিয়েছেন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা। বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের সিনিয়র ইকোনমিস্ট ড. এম মাসরুর রিয়াজ এবং মেট্টোপলিটান চেম্বারের সভাপতি নিহাদ কবির।
ড. মোহাম্মদ তারেক বলেন, অর্থনীতির একজন ছাত্র হিসেবে আমি বলতে পারি, অর্থনৈতিক সার্বিক উন্নয়নে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ জরুরি। আর এই বিনিয়োগ বাড়াতে হলে ব্যক্তিগত উদ্যোগ, মানবিক উন্নয়ন এবং সামাজিক উন্নয়ন জরুরি।
তিনি বলেন, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস জরুরি। এর মানে হলো এক ছাতা থেকে উদ্যোগের সব সেবা দিতে হবে। আমাদের বিভিন্ন সংস্থা ওয়ান স্টপ সার্ভিসের কথা বলছে। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এগুলো সমন্বয়ের কথা বলছে। কিন্তু কার্যকর সমন্বয় নেই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বাস্তবতার আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তার মতে, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ছাড়া উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসবে না। আর সিদ্ধান্ত নেয়ার এখনই সঠিক সময়।
সাবেক এ সচিব বলেন, আমরা সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) কথা বলছি। কিন্তু এফডিআই বাড়াতে হলেও আগে বেসরকারিখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। না হলে বিদেশিরা আসবে না।
নিহাদ কবির বলেন, বিভিন্ন সংস্থা থেকে তথ্য আসছে বিনিয়োগ বাড়ছে। আসলে বাস্তবতা কী? বাংলায় একটি কথা আছে কাজির গরু খাতায় আছে, গোয়ালে নেই। তার মতে, ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কথা বলা হলেও মাত্র চার থেকে পাঁচটিতে কাজ শুরু হয়েছে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়লে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর বিনিয়োগের জন্য সবার আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যকর সংস্কার করতে হবে। বিশেষ করে এফডিআই বাড়াতে হলে ফরেন এক্সচেঞ্জ গাইড লাইনসহ বিভিন্ন নীতির পরিবর্তন করতে হবে। বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করে প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়াতে হবে।
শহিদুল হক বলেন, আমরা পরিবর্তনশীল বিশ্বে বাস করছি। এক্ষেত্রে বাস্তবতা হলো, বিভিন্ন প্রযুক্তি এবং ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন বিনিয়োগে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৈদেশিক নীতি চারটি। এগুলো হলো, বাস্তববাদিতা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা, মানবিকতা এবং উৎপাদনশীলতা। তার মতে, বিনিয়োগ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও সুশাসন জরুরি। এফডিআই ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দুই দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার এফডিআই এসেছে।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার অব্যাহত রয়েছে।
ড. ফজলে কবির বলেন, এফডিআই বাড়ছে। তবে এক্ষেত্রে নতুন বিনিয়োগ কম। আগের বিনিয়োগকারীরাই পুনঃবিনিয়োগ করছে। তার মতে, বিনিয়োগের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত কর্মসংস্থান বাড়ানো, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি এবং রফতানি বাড়ানো । আর বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়তে হলে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
এসএইচ/
আরও পড়ুন