ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৩ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বিল দিতে না পারায় শিশুকে আটকিয়ে রেখেছে এ্যাপোলো হাসপাতাল (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৫২, ২ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ২০:১৪, ২ অক্টোবর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতাল চিকিৎসার বিল দিতে না পারায় আটকিয়ে রেখেছেন একটি শিশুকে। শিশুটির মা দিলু আক্তার বলেন, টাকার অভাবে এখন ওষুধ কিনতে পারছি না, এমনকি খাবারও কিনতে পারছি না। আমার স্বামী প্রবাসে কাজ করেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর আমার শিশুকে এই হাসপাতালে ভর্তি করাই। ভর্তি করার পর চিকিৎসার বিল বাবদ ইতোমধ্যে তিন লাখ ২১ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। এখন আমার কাছে কোনো টাকা নেই। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনও চিকিৎসা বাবদ আমার কাছে আরও চার লাখ ৬১ হাজার টাকা দাবি করছেন। এতো টাকা দেওয়ার সামর্থ আমার নেই। তারা আমার সন্তানকে ছাড়ছে না। এখন আমি কি করবো তা ভেবে পাচ্ছি না। তবে, বিল পরিশোধ করতে না পারলেও প্রতিদিন বাড়ছে অতিরিক্ত বিল।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান রিয়াজুল হক বলেন, এতো অল্প সময়ে কীভাবে এতো টাকা বিল হয় তা খতিয়ে দেখা দরকার। অধিকাংশ সময়ে রোগী জানতেই পারে না, সে কোথায় টাকা দিচ্ছে বা কেন টাকা দিচ্ছে। পৃথিবীর অনেক দেশে নাগরিকের চিকিৎসার দায়িত্ব রাষ্ট্র নিয়ে থাকে। সেখানে সব নাগরিকের বীমা করা থাকে। কিন্ত যেহেতু আমাদের দেশে সেসব সুবিধা নেই তাই ওষুধ লেখার আগে বা রোগ সংক্রান্ত পরীক্ষা দেওয়ার আগে ডাক্তারদের উচিৎ রোগীর সঙ্গে আলাপ করা। তিনি আরও বলেন, দিলু আক্তারের (আটক শিশুর মা) সমস্যাটি যত দ্রুত পারে সমাধান করা উচিৎ এ্যাপোলো কর্তৃপক্ষের।

শিশুটির মা দিলু আক্তার আরও বলেন, প্রবাসে স্বামীর হাতেও কোন টাকা নেই। তাই সে কোনো টাকা পাঠাতে পারছে না। আমি এখন কী করব, কোথায় যাব? আমার মেয়েটাকে রিলিজ নিয়ে দেন। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরে যাই।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে আইসিইউতে থাকা শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী বিলের টাকা আগের চাইতেও বেড়েছে। গতকাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল ৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। আজকে সেই বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৬১ হাজার ৪৬২ টাকা! চিকিৎসা বন্ধ থাকার পরও বিল বাড়ছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে হাসপাতালের ফিন্যান্সিয়াল অপারেশন বিভাগের ডিজিএম রাকিবুল আহসান বলেন, আইসিইউ বিভাগে থাকার জন্য চার্জ হিসেবে এই বিল ধরা হয়েছে। অসহায় নারী টাকা দিতে অপারগ- এমন প্রসঙ্গে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। শিশুটি এখন এ্যাপোলো হাসপালের ডাক্তার সরোয়ার জাহান ভূঁইয়ার অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যার ওয়ার্ড নং ২বি, বেড নং ২২০৩পি।

দিলু আক্তারের স্বামী সৌদি আরবে আকামা (কাজের অনুমতিহীনভাবে) ছাড়া রয়েছেন। এই শিশুটি বাড়ি চট্টগ্রামের উত্তর রাঙ্গুনিয়া। শিশুটির মা হাসপাতালের বারান্দায় থাকেন। তিন বেলা খাওয়ার মতোও তার কাছে কোনো টাকা নেই। অন্যরা যা খেতে দেন তাই খেয়ে রয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে রয়েছে ছয় বছরের একটি ছেলেও।

প্রসঙ্গত- গত ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের পরামর্শে শিশুটিকে এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটি মস্তিস্কের জটিল রোগে আক্রান্ত। 

গতকাল (১ অক্টোবর) একুশে টেলিভিশন অনলাইনে " টাকা শোধ করতে না পারায় সন্তান আটকে রেখেছে হাসপাতাল" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নানা দিক থেকে প্রতিবাদ আসতে থাকলেও এখনো সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে এ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 আআ/এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি