ঢাকা, শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪

বিশ্বকাপে রাশিয়ান যুবতীদের শয্যাসঙ্গী হতে আর বাঁধা নেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৪, ১৮ জুন ২০১৮

বিশ্বকাপের খেলা চলছে। সেখানে খেলা দেখার জন্য পুরো বিশ্ব থেকে অসংখ্যা মানুষ ভিড় করছে রাশিয়ায়। এমন একটি মুহুর্তে পর্যটকদের জন্য সেক্স নিষিদ্ধ থাকবে এমনটা যেন এ যুগে বেসুরো মনে হতে পারে। তাও আবার রাশিয়ার মতো একটি পশ্চিমা দেশে! বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্বকাপ শুরুর আগে রাশিয়ার যুবতী, নারীদেরকে বিদেশী পর্যটকদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন না করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাশিয়ান রাজনীতিক, পার্লামেন্টর পরিবার, নারী ও শিশু বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান তামারা প্লেটনিওভা। কিন্তু বিষয়টি ভাল মনে হয় নি পুতিনের কাছে। তিনি তামারার ওই নির্দেশ বা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বলেছেন, বিদেশী পর্যটকরা এসেছেন রাশিয়ায় বিশ্বকাপ উপভোগ করতে।  

তাদের সঙ্গে রাশিয়ান নারী বা যুবতীদের সেক্স নিষিদ্ধ থাকতে পারে না। ফলে তামারা যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন তা আর হালে পানি পাচ্ছে না। তিনি রাশিয়ান নারীদের সতর্ক করে বলেছিলেন, তারা যেন বিদেশী পর্যটকদের শয্যাসঙ্গী না হন। এতে দেশে সিঙ্গেল মায়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। যে সন্তান জন্ম নেবে তার পিতৃপরিচয় নিয়ে সঙ্কট দেখা দেবে। এ ছাড়া এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তো রয়েছেই। আরও বলেছিলেন, অর্থের লোভে পড়ে বা প্রেমে পড়ে যেভাবেই হোক রাশিয়ান নারীদের এমন অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্কে জড়ানোর কোনো শুভ অর্থ হতে পারে না। কিন্তু শেষ অবধি তার এ আহ্বান যেন প্রেসিডেন্ট পুতিনের কানের কাছেও পৌঁছাতে পারে নি। প্লেবয় হিসেবে পরিচিতি পাওয়া রাশিয়ান এই প্রেসিডেন্ট তাই এগিয়ে এলেন।

তিনি তামারা প্লেটনিওভা’র দেয়া নিষেধাজ্ঞা ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলেন। বললেন, রাশিয়ান নারীদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া যাবে না। তারা তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পারেন। পুতিনের মুখপাত্র, সাবেক প্রেসিডেন্ট দমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, সব দেশই একে অন্যকে বর্ণবাদী, সমকামী হিসেবে আখ্যায়িত করে। এ নিয়ে বিশ্বকাপে নাক গলানোর কিছু নেই। রাশিয়ার নারীরা যা ভাল মনে করেন তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে তাই করতে পারেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মতে, ১৯৮০ সালে মস্কোতে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন গেমস বা অলিম্পিক গেমস নিয়ে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তামারা। ওই গেমস চলার সময় রাশিয়ান মেয়েদের সঙ্গে বিদেশী পর্যটকদের সেক্সের সুবাদে জন্ম হয়েছে বিপুল সংখ্যক সন্তানের। এদেরকে ‘চিলড্রেন অব দ্য অলিম্পিকস’ বা অলিম্পিকের সন্তান হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এ নিয়ে যখন তামারাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিশ্বকাপ শুরুর আগে তখন তিনি রাশিয়ান নারীদেরকে সাবধান করেছিলেন। তাদের প্রতি অনুরোধ করেছিলেন, তারা যেন বিদেশী পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন না করেন। ওই প্রশ্নের উত্তরে তামারা বলেছিলেন, অনেক নারী বা যুবতী রাশিয়ায় পুরুষদের শয্যাসঙ্গী হবেন। তার ফলে তারা সন্তানের জন্ম দেবেন। হয়তো তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন অথবা হবেন না। এমন সম্পর্কের ফলে যেসব সন্তানের জন্ম হবে তাদেরকে পরে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হতে হয়, এটা ঘটেছিল সাবেক সোভিয়েত যুগে। তাই তিনি নিজের বিশ্বাস নিয়ে বলেছিলেন, রাশিয়ান সন্তান জন্ম হওয়া উচিত রাশিয়ান পিতামাতার ঔরসে অথবা একই জাতীয়তা পরিচয়ের নারী পুরুষের মধ্যে।

তিনি বলেন, যদি মা-বাবা একই জাতির হন তাহলে পরিস্থিতি যা দাঁড়ায়, তাদের পরিচয় ভিন্ন হলে সেখানে তার চেয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তার ভাষায়, আমাদেরকে আমাদের নিজেদের সন্তান জন্ম দিতে হবে। তামারার এমন সেক্স নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য মিখাই ল দেগতিয়ারিওভের মাথায় আঘাত করেছে। তিনি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস’কে বলেছেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে আমাদের আরো বেশি ভালবাসার কাহিনী আছে। আরো ভিন্ন ভিন্ন দেশের মানুষ এখানে ভালবাসায় মগ্ন হন। অধিক পরিমাণ সন্তানের জন্ম হয়। এটা খুবই ভাল একটি বিষয়।

এসি 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি