বি. চৌধুরী-ড. কামালকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে বিএনপি
প্রকাশিত : ১০:৪২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
রাজধানীতে বিএনপির ২৭ সেপ্টেম্বরের সমাবেশে সমমনা দল ও জোটকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভাবছে দলটি। সেই তালিকায় আছেন যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান ও বিকল্প ধারা সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জাসদ (একাংশ) সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে দলের মধ্য সারির ও তরুণ নেতাদের বেশিরভাগই চাচ্ছে না দলীয় কর্মসূচিতে তাঁরা (জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত নেতারা) আসুক।
প্রসঙ্গত, বিএনপি আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। পুলিশের অনুমতি সাপেক্ষে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশ করতে চায় দলটি। বৃহস্পতিবারের সমাবেশে দলীয় ৭ দফা দাবি ও ১২ দফা লক্ষ্য উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার বিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, আ স ম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটও তাঁদের সঙ্গী হয়ে বৃহত্তর মোর্চা গড়তে চাইছে।
তবে এক্ষেত্রে বাধা জামায়াত। বিএনপি জামায়াতের বলয় থেকে বোরোতে পারছে না আর বি. চৌধুরী-ড. কামালরা জামায়াতকে সঙ্গী করতে চাইছে না। এ নিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়া অনেকটাই বাধাগ্রস্ত। সেই সঙ্গে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের নেতাদের আরও কিছু শর্ত আছে যেগুলো নিয়ে বিএনপিতে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। ওই শর্তের মধ্যে রয়েছে-বৃহত্তর জোটের ব্যানারে থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহার নিয়ে কিছু বলা যাবে না। এসব শর্ত নিয়ে বিএনপিতে নানামুখী বিশ্লেষণ চলছে। এমতাবস্থায় বিএনপির স্থায়ী কমিটি চাইছে জাতীয় ঐক্যের নেতাদেরকে সঙ্গে যেকোনো মূল্যে সমঝোতায় যেতে।
বৈঠক সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটিতে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের একটি বক্তব্য নিয়ে সদস্যরা কথা বলেছেন। গতকাল ড. কামাল বিবিসি বাংলায় এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে তাঁর বা তাঁর দলের কোনো আপত্তি নেই।
যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব ‘বৃহত্তর ঐক্যের’ দাবির মধ্যে প্রথমেই আছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেই মূলত এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পথে রয়েছে। ইতিমধ্যে ড. কামালের সমাবেশেও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অংশ নিয়ে বলেছেন, ঐক্য প্রক্রিয়া এক ধাপ এগিয়েছে।
বিবিসিকে ড. কামালের দেওয়া এমন বক্তব্য নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে এ নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার এই নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন বিএনপির নেতারা। ড. কামাল তাঁদের বলেছেন, বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কথাটি যেভাবে তিনি বলেছিলেন, সেভাবে আসেনি। এই বক্তব্যের আগেও কিছু কথা ছিল। সেগুলো আসেনি। ফলে এটি খণ্ডিত বক্তব্য।
দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
/ এআর /
আরও পড়ুন